বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

অভ্যন্তরীণ

এক যুগেও হয়নি সংস্কার ভোগান্তির আরেক নাম আধুনগর হরিণা সড়ক

প্রকাশের সময় : ২২ সেপ্টেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

তাজউদ্দীন, লোহাগাড়া (চট্টগ্রাম) থেকে

চট্টগ্রামের লোহাগাড়ার আধুনগর হরিণা সড়ক দিয়ে চলাচলকারী লক্ষাধিক মানুষের ভোগান্তির নাম আধুনগর হরিণা সড়ক। আড়াই কিলোমিটার দীর্ঘ এই সড়কটি দীর্ঘ ১ যুগ ধরে চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়লেও সংস্কারের নামগন্ধ নেই। চট্টগ্রাম কক্সবাজার মহাসড়ক হতে শুরু হওয়া এই সড়কের প্রবেশমুখেই রয়েছে ৪০ বছর আগে নির্মিত বেইলি ব্রিজ। ব্রিজটির পাটাতন উঠে গেছে সেই ১ যুগ আগে। বেইলি ব্রিজ পার হতে না হতেই প্রায় ১২শ’ গজের মধ্যেই রয়েছে মরাডলুর উপর নির্মিত কালভার্ট। কালভার্টটির গোড়ার মাটি সরে গিয়েছে অনেকখানি। সাতগড়, হরিণা, পুটিবিলা, চুনতি ও আধুনগর, চেদির পুনি, ওঝাপাড়া, মৌলুভীবাজার এলাকার মানুষ এই সড়ক দিয়েই চট্টগ্রাম-কক্সবাজারসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় যাতায়াত করে থাকে। এলাকাবাসী গাছের পাঠাতন দিয়ে কোনোমতে জোড়াতালি দিয়ে মেরামত করে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে বেইলি ব্রিজটি দিয়ে। এছাড়াও মিনিট্রাক, রিকশা, অটোরিকশা, মোটরসাইকেলও চলাচল করে থাকে এই সড়ক দিয়ে। যেকোনো সময় ব্রিজটি ভেঙে গিয়ে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। জীবেনের ঝুঁকি নিয়ে ব্রিজটি কোনোমতে পার হয়েই চলাচলকারীদের পড়তে হয় নরক যন্ত্রণায়। আড়াই কিলোমিটার সড়কটি কোনো যানবাহন নিয়ে যেতে সময় লাগে ১ ঘণ্টার বেশি। ইটের তৈরি এই সড়কের প্রায় পুরোইটাই ইট উঠে গিয়ে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। আর এই গর্তে বৃষ্টির পানি জমে থাকায় চলাচলকারীদের দুর্ভোগ আরো বেড়ে যায়। প্রতিনিয়ত গর্তের উপর পড়ে ছোট ছোট যানবাহন উল্টে গিয়ে যাত্রীরা দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে। এলাকার স্কুল-কলেজের ছাত্রীদের দুর্ভোগের শেষ নেই। সন্তানদের স্কুল- কলেজে পাঠিয়ে অভিভাবকরা থাকেন উদ্ধিগ্ন। এছাড়াও সাতগড় মৌলভীবাজারে রয়েছে হজরত মাওলানা আতাউল্লাহ হোসাইনী (র.)-এর মাজার। এখানে প্রতি শুক্রবার অসংখ্য ধর্মপ্রাণ মুসলমান দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে জুমার নামাজ ও জেয়ারত করতে আসেন। এছাড়াও চেদিরপুনি এলাকায় রয়েছে বৌদ্ধদের তীর্থস্থান। রয়েছে ঐতিহাসিক বৌদ্ধমন্দির। এদিকে চেদিরপুনি গ্রামের উত্তরাংশে স্থাপিত পাকা কালভার্টটিও মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে। তার দুপাশের মাটি সরে গিয়ে পাশের খালে বিলীন হয়ে গেছে। হরিণার শেষপ্রান্তে পাহাড়ি এলাকায় রয়েছে শত শত পানের বরজ ও বিভিন্ন কৃষি খামার। সেখানে উৎপাদিত হয় লক্ষ লক্ষ টাকার সবজি ও ফল ফলাদি। এসব বহন করতে গিয়ে কৃষকদের শস্য উৎপাদন ব্যয় স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক গুণ বেড়ে যায়। সাতগড় এলাকার ডা. মোহাম্মদ লোকমান জানান, সড়কটি এত গুরুত্বপূর্ণ হওয়া সত্ত্বে¡ও সরকারি বা বেসরকারি পর্যায়ে কেউ এটি মেরামতের উদ্যোগ না নেয়ায় এলাকাবাসীর দুর্ভোগ দিন দিন বেড়েই চলছে। বিশেষ করে গর্ভবতী মহিলা ও অসুস্থদের জন্য এই সড়কটি এখন অভিশাপ হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে তিনি জানান। স্থানীয় কৃষক আলী আহমদ জানান, আমাদের চাষ করা সবজি চট্টগ্রাম-কক্সবাজারসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় বিক্রির জন্য নিয়ে যেতে হয়। সড়কটির কারণে এখানে কোনো গাড়ি আসতে চায় না। আসলেও দ্বিগুণ ভাড়া দাবি করে থাকে। তাই উৎপাদন মূল্য অনেক বেড়ে যায়। তিনি সড়কটি মেরামতের জোর দাবি জানান। স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন, এ সড়কটির জন্য বরাদ্দকৃত টাকা সাবেক চেয়ারম্যান-মেম্বাররা লুটপাট করেছে। জানা গেছে, সংসদ সদস্য আবু রেজা নদভী সড়কটি পরিদর্শন করেছিলেন দুই বছর আগে। তখন এলাকাবাসীকে আশ^স্ত করেছিলেন সড়ক ও ব্রিজটি মেরামতের ব্যবস্থা করবেন। লোহাগাড়া উপজেলা প্রকৌশলী অফিস সূত্র জানিয়েছে, সড়ক ও ব্রিজটি মেরামতের জন্য সংশ্লিষ্ট উপর মহলে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন