শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

হাসপাতালে নেই অক্সিজেন ও আইসিইউ ইউনিট

জয়পুরহাটে করোনার বিপজ্জনক পরিস্থিতি

মো. আবু মুসা, জয়পুরহাট থেকে : | প্রকাশের সময় : ১৩ জুন, ২০২১, ১২:০১ এএম

উত্তরের সীমান্তবর্তী জেলা জয়পুরহাটে করোনা সংক্রমণের হার মারাত্মক আকার ধারণ করছে। জেলা আধুনিক হাসপাতালে নেই সেন্ট্রাল অক্সিজেন ব্যবস্থা ও আইসিইউ ইউনিট। ফলে অনেকে ঢলে পড়ছে মৃত্যুর কোলে। জেলায় করোনা আক্রান্তের হার ৫১ ভাগে দাঁড়িয়েছে। এ পর্যন্ত মারা গেছে ১৪ জন। আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছে দুই হাজারেরও অধিক।

সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউয়ে গত ১০ দিনে জেলায় ৫ জন ডাক্তার, ৯ জন নার্স, ৬ জন হাসপাতাল কর্মচারী, ১২ জন পুলিশ সদস্য, জেলা প্রশাসনের ১ জন ম্যাজিস্ট্রেট, ৬ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং ৫ জন সাংবাদিকসহ জেলায় মোট আক্রান্ত হয়েছে ২২৪০ জন। আক্রান্তের সংখ্যা ৫% থেকে ছাড়িয়ে ৫২%এ দাঁড়িয়েছে। জেলায় ২০ কিলোমিটার সীমান্তে তারকাঁটা দিয়ে ঘেরা থাকলেও অনেকে তা ভেদ করে এপার-ওপার হচ্ছে। ফলে করোনার ভারতীয় ধরণে সংক্রমণ অতি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ছে জয়পুরহাট। প্রথম ঢেউয়ে আক্রান্তের হার কম হলেও দ্বিতীয় ঢেউয়ে আক্রান্তের হার বৃদ্ধি পেলেও সীমান্ত এলাকায় সন্তোষজনক নজরদারি লক্ষ্য করা যায়নি। সীমান্ত সংলগ্ন পাঁচবিবি পৌর এলাকার ও জয়পুরহাট পৌর এলাকায় আংশিক লকডাউন ঘোষণা করা হলেও তা শুধু মাইকে প্রচার প্রচারণায় সীমাবদ্ধ রয়েছে।

করোনা সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউয়েও করোনা রোগীদের জন্য জয়পুরহাট জেলা আধুনিক হাসপাতালে সেন্ট্রাল অক্সিজেন ব্যবস্থা এবং আইসিইউ ইউনিট না থাকায় বেশীরভাগ করোনা আক্রান্ত রোগীদের উন্নত চিকিৎসার জন্য যেতে হচ্ছে জেলার বাইরের বিভিন্ন হাসপাতালে। করোনা শুরু থেকে দেড় বছর পার হতে চললেও স্বাস্থ্য বিভাগ করোনা সংক্রান্ত চিকিৎসা ও টেস্টের সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধি করতে পারেনি।

জেলা সিভিল সার্জন অফিস সূত্রে জানা গেছে, গত এক সপ্তাহে পরীক্ষা বিবেচনায় করোনা সংক্রমণের হার শতকরা ৫২ ভাগ। জয়পুরহাট জেলায় ৫৮০০ টি টিকার এম্পল পাওয়া গেছে। করোনা টিকা নেয়ার জন্য রেজিস্ট্রেশন করেছেন ৩৭ হাজার ৪শ’ ৫৪ জন। এরমধ্যে প্রথম ডোজ টিকা গ্রহণ করেছেন ৩২ হাজার ৪শ’ ৫৫ জন। দ্বিতীয় ডোজ টিকা গ্রহণ করেছেন ২৫ হাজার ৩শ’ ৩২ জন। এখন দ্বিতীয় ডোজ টিকা দেয়ার অপেক্ষায় আছেন ৭ হাজার ১শ’ ২৩ জন। গত ৩ মে থেকে টিকা প্রদান কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। জেলায় করোনায় পিসিআর টেস্ট বগুড়া থেকে করা হচ্ছে। র‌্যাপিড টেস্ট করা হচ্ছে জেলা আধুনিক হাসপাতালে। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে প্রয়োজনীয় স্থান না থাকায় পিসিআর ল্যাব স্থাপনের পরিকল্পনা নেই। তবে র‌্যাপিড টেস্ট চলবে।

জয়পুরহাট জেলা সিভিল সার্জন ডা. মো. ওয়াজেদ আলী জানান, জেলায় করোনা সংক্রমণে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। গত কয়েক দিনে করোনা রোগী শনাক্তের হার বৃদ্ধি পেয়েছে। ২শ’ বেডের হাসপাতালে প্রতিদিন শত শত রোগী ইনডোর ও আউটডোরে চিকিৎসা নিচ্ছে।

ইতোমধ্যে আমরা পৌর এলাকার বিভিন্ন ওয়ার্ডে অ্যান্টিজেন টেস্টের ব্যবস্থা করেছি। সীমান্তবর্তী জেলা হওয়ায় করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। বৈধভাবে দিনাজপুরের হিলি সীমান্ত দিয়ে ভারত থেকে অনেক লোকজন পার হয়ে আসলেও অবৈধভাবে অনেকে সীমান্ত দিয়ে গোপনে জয়পুরহাটে প্রবেশ করতে পারে। অনেকে তাদের জমিতে চাষাবাদের জন্য এপার-ওপার হচ্ছে। এতে বিভিন্ন জনের সংস্পর্শে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ ব্যাপারে প্রশাসনের পক্ষ হতে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেয়া প্রয়োজন।
বিজিবি ১৪ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্ণেল নাদিম সাংবাদিকদের জানান, জয়পুরহাট জেলায় ভারতের সাথে ২০.৬ কিলোমিটার সীমান্ত রয়েছে। সীমান্তে ভারতীয় প্রবেশ ঠেকাতে বিজিবির নজরদারি রয়েছে। অনুপ্রবেশ ঠেকাতে বিজিবি সদস্যরা কাজ করে যাচ্ছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন