বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

তৃতীয় বারের মতো বিশ্বসেরা

বাংলাদেশের পুঁজিবাজার

অর্থনৈতিক রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৩ জুন, ২০২১, ১২:০০ এএম

বিশ্বের সব পুঁজিবাজারগুলোকে পেছনে ফেলে গত ছয় মাসের ব্যবধানে ফের সেরা তালিকায় স্থান করে নিয়ে নতুন রেকর্ড গড়লো বাংলাদেশ। চলতি বছরের মে মাসে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) বিশ্বের সেরা পুঁজিবাজারের স্থান দখল করেছে। রিটার্নের দিক দিয়ে এ নিয়ে তৃতীয়বারের মতো বাংলাদেশের পুঁজিবাজার বিশ্বের শীর্ষ তালিকায় উঠে এসেছে। অর্থাৎ বিশে^ সেরার খেতাব অর্জনে হ্যাট্রিক করলো বাংলাদেশের পুঁজিবাজার।

করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের সময় অর্থাৎ গত মে মাসে ডিএসইর বিনিয়োগকারীরা মুনাফা বা রিটার্ন পেয়েছেন নয় দশমিক চার শতাংশ। যে কারণে সেরা পুঁজিবাজারের তালিকায় শীর্ষে উঠে এসেছে ডিএসই। সম্প্রতি ফ্রন্টিয়ার জার্নালে এ তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে। এর আগে গত বছরের সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর মাসে রিটার্নের দিক দিয়ে বিশ্বের সেরা পুঁজিবাজারের তালিকায় উঠে আসে ডিএসইর নাম।

এ প্রসঙ্গে অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম জানান, কোভিড-১৯ মহামারির মধ্যেও বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফেরানোর মাধ্যমে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের ব্রড ইনডেক্স মে মাসে বড় ধরনের উত্থান হয়েছে। ফলে বিশ্ব সেরা পারফর্মেন্স সূচকগুলোতে শীর্ষে অবস্থান করছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশে ব্যাংক সুদের হার কম, রপ্তানি ও রেমিট্যান্সে ইতিবাচক ধারার কারণে রিটার্নের দিক দিয়ে সেরা তালিকায় পৌঁছেছে।

জানা গেছে, করোনা মহামারির সময়ে মে মাসে দেশের পুঁজিবাজার থেকে বিনিয়োগকারীরা নয় দশমিক চার শতাংশ মুনাফা বা রিটার্ন পেয়েছেন। পাকিস্তানের পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারীরা মুনাফা পেয়েছেন আট দশমিক পাঁচ শতাংশ, ভিয়েতনামের বাজার থেকে বিনিয়োগকারীরা সাত দশমিক দুই শতাংশ, চীনের বিনিয়োগকারীরা মুনাফা পেয়েছেন ছয় দশমিক ছয় শতাংশ। এছাড়া ফিলিপিনসের বিনিয়োগকারীরা মুনাফা পেয়েছেন পাঁচ দশমিক তিন শতাংশ, কাজাকস্তানের বিনিয়োগকারীরা চার দশমিক সাত শতাংশ, শ্রীলঙ্কার বিনিয়োগকারীরা দুই দশমিক পাঁচ শতাংশ, থাইল্যান্ডের বিনিয়োগকারীরা শূন্য দশমিক ছয় শতাংশ এবং ইন্দোনেশিয়ার বিনিয়োগকারীরা পেয়েছেন শূন্য দশমিক তিন শতাংশ মুনাফা।

ডিএসই সূত্রে জানা গেছে, মে মাসে মোট ১৯ কার্যদিবস লেনদেন হয়েছে। তাতে ডিএসইর প্রধান সূচক বেড়েছে ৫১১ পয়েন্ট। দৈনিক লেনদেন হাজার কোটি টাকা বেড়ে দুই হাজার কোটি টাকার ঘরে দাঁড়িয়েছে। আর তাতে বিনিয়োগকারীদের রিটার্ন অর্থাৎ বাজার মূলধন বেড়েছে ৩৩ হাজার ১৫৫ কোটি ৯৭ লাখ ৬৯ হাজার টাকা। করোনার এই মাসটিতে ডিএসইর বাজার মূলধন ছিল চার লাখ ৭০ হাজার ৭১২ কোটি ৭৮ লাখ ৯৬ হাজার টাকা। সেখান থেকে এক মাসে ৩৩ হাজার ১৫৫ কোটি ৯৭ লাখ ৬৯ হাজার টাকা বেড়ে পাঁচ লাখ তিন হাজার ৮৬৮ কোটি ৭৬ লাখ ৬৫ হাজার টাকায় দাঁড়িয়েছে। সামনের দিনগুলোতে দেশের পুঁজিবাজার আরো ভালো করবে বলে জানিয়েছেন বাজার সংশ্লিষ্টরা।

পুঁজিবাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলামের নেতৃত্বাধীন নতুন কমিশন দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে বাজার ইতিবাচক ধারায় ফিরেছে। দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীরা বাজারমুখী হচ্ছেন। ফলে বাজারে সূচক ছয় হাজার পয়েন্ট অতিক্রম করে রেকর্ড গড়েছে। এমন বাজার থেকে বিনিয়োগকারীরা ভালো রিটার্ন পেয়েছেন। এছাড়া বর্তমান কমিশন বাজারের উন্নয়নে নানা ধরনের উদ্যোগ হাতে নিয়েছে।

প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) মাধ্যমে বহুজাতিক, সরকারি ও দেশি-বিদেশি ভালো মৌলভিত্তিক কোম্পানি তালিকাভুক্তির চেষ্টা করে যাচ্ছে। একই সঙ্গে বাজারে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে কাজ করছে কমিশন। এসব কাজের মাধ্যমে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারীদের আস্থা ধরে রাখতে পারলে ভবিষ্যতেও সেরা তালিকায় স্থান ধরে রাখতে পারবে বাংলাদেশ। উল্লেখ্য, করোনা মহামারির গত বছর সেপ্টেম্বরে ও অক্টোবরে মাসে বিশ্বের সেরা স্থান দখল করেছিল বাংলাদেশের পুঁজিবাজার।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (6)
মেহেদী হাসান সুমন ১৩ জুন, ২০২১, ১:৩২ এএম says : 0
চীনের বিনিয়োগের পরেই এই সাফল্য
Total Reply(0)
Nakib Khan ১৩ জুন, ২০২১, ১:৩২ এএম says : 0
২০১০ সালের পর গত এক বছর শেয়ারবাজার সব থেকে ভালো সময় পার করেছে। এর অন্যতম একটি কারণ সুদের হার কম থাকা।
Total Reply(0)
Ibn Adam ১৩ জুন, ২০২১, ১:৩৩ এএম says : 0
ব্যাংকে টাকা রাখলে এখন খুব একটা মুনাফা পাওয়া যায় না। বরং শেয়ারবাজারে ভালো মৌলভিত্তি সম্পন্ন কোম্পানিতে বিনিয়োগ করে ব্যাংকের থেকে অনেক বেশি রিটার্ন পাওয়া যায়। আবার ঘরে বসেই মোবাইলে, ই-মেইলে বিনিয়োগকারীরা শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করতে পারেন। এসবের ইতিবাচক প্রভাব শেয়ারবাজারে দেখা যাচ্ছে।
Total Reply(0)
Badal Kumar Das ১৩ জুন, ২০২১, ১:৩৩ এএম says : 0
‘গত বছর প্রথম যখন বাংলাদেশে করোনা শনাক্ত হয়, সবার মধ্যে বড় ধরনের আতংকের সৃষ্টি হয়। সার্বিক অর্থনীতিতে বড় ধরনের নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে, এমন আতংকও ছড়িয়ে পড়ে। যার পরিপ্রেক্ষিতে শেয়ারবাজারে বড় দরপতন হয়। তবে সার্বিকভাবে আমাদের অর্থনীতিতে খুব একটা বড় নেতিবাচক প্রভাব পড়েনি। যে কারণে শেয়ারবাজারও ঘুরে দাঁড়িয়েছে।
Total Reply(0)
নোমান মাহমুদ ১৩ জুন, ২০২১, ১:৩৪ এএম says : 0
বিনিয়োগকারীরা পুজি হারানোর দিক দিয়েও হয়তো বিশ্ব সেরা হবে।
Total Reply(0)
ক্ষণিকের মুসাফির ১৩ জুন, ২০২১, ১:৩৫ এএম says : 0
আবারও যেন বিনিয়োগকারীদের ডেকে এনে ক্ষতিগ্রস্ত না করা হয়।
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন