বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

এ বছরই আকাশে উড়বে গাড়ি

চাইলে উড়ন্ত ট্যাক্সিও মিলবে

ডানা ইশরাত | প্রকাশের সময় : ১৪ জুন, ২০২১, ১২:০০ এএম

কানাডিয়ান উদ্ভাবক মার্কাস লেংয়ের সংস্থা ‘ওপেনার’ প্রত্যন্ত অঞ্চলে ব্যবহারের জন্য একটি একক যাত্রীবাহী উড়ন্ত গাড়ি তৈরি করেছেন। আর এই গাড়ি রানওয়ে ছাড়াই আকাশে উড়তে এবং অবতরণ করতে সক্ষম। এটির নাম ব্লাকফ্লাই। চলতি বছর থেকেই শুরু হয়ে যেতে পারে এর বিপনন।

লেংয়ের মতো প্রকৌশলী এবং উদ্যোক্তারা এক দশকেরও বেশি সময় উড়ন্ত বৈদ্যুতিক গাড়ি তৈরির পেছনে ব্যয় করেছেন। অন্যান্যরা আরও বড় মাপের যানবাহন তৈরি করছেন। তারা ২০২৪ সালের মধ্যেই আকাশে উবারের মতো উড়ন্ত ট্যাক্সি সেবা চালু করার আশা করছেন।

অনেকে এমন যানবাহন ডিজাইন করছেন যা পাইলট ছাড়াই উড়তে পারে। তারা বিশ্বাস করেন যে, এই যানবাহনগুলো হেলিকপ্টারগুলোর তুলনায় সস্তা এবং নিরাপদ হবে। জনসাধারণকে জনাকীর্ণ রাস্তাগুলোর উপর দিয়ে দ্রুততর সময়ে গন্তব্যে পৌঁছে দেবে। লেং বলেছেন, ‘এটি দেখতে একটি অদ্ভুত জীবের মতো লাগতে পারে। তবে এটি পরিবহন পদ্ধতিকে বদলে দেবে।’

স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার বিজ্ঞানের অধ্যাপক এবং ‘কিটি হক’ এর চিফ এক্সিকিউটিভ এবং গুগলের সেল্ফ-ড্রাইভিং গাড়ি প্রকল্পের প্রতিষ্ঠাতা সেবাস্তিয়ান থ্রুন তার উড়ন্ত গাড়ি ‘হেভিসাইড’ এর প্রোটোটাইপ সম্পর্কে বলেছেন যে, বাহনটি মাটির চেয়ে বাতাসে অনেক বেশি শক্তিশালী হবে এবং এটি আমাদের প্রাত্যহিক জীবনে খুব শিগগিরই প্রবেশ করবে। তিনি বলেন, ‘আমাদের স্বপ্ন বিশ্বকে যানজট থেকে মুক্ত করা।’

ব্ল্যাকফ্লাইকে সরকার কানাডার একটি পরীক্ষামূলক ‘আল্ট্রালাইট’ গাড়ি হিসাবে শ্রেণিবদ্ধ করেছে। সুতরাং এটি বিক্রির আগে নীতিমালা বিষয়ক অনুমোদনের প্রয়োজন হয় না। তবে আপাতত শহর বা অন্যান্য জনবহুল অঞ্চলে একে ওড়ানো যাবে না। ক্রেতারা ভার্চুয়াল রিয়্যালিটি সিমুলেশনগুলোর মাধ্যমে এটি চালানো শিখতে পারবেন এবং বিমানটিতে ‘বাড়ি ফেরা’ বোতামের মতো অটোপাইলট পরিষেবা অন্তর্ভুক্ত থাকবে।

অত্যাধুনিক কোন আকারের এই বাহনটি হেলিকপ্টার এবং বিমানের একিট শঙ্কর। এর শরীর বাঁকানো এবং ২টি ছোট ডানা রয়েছে। এর নাক এবং লেজ জুড়ে ৮টি স্পিনিং রোটর রয়েছে। কম্পিউটার স্ক্রিনের একটি বোতামের স্পর্শে এটি চালু হয়ে যায়। ব্ল্যাকফ্লাইতে ৬ ফুট, ৬ ইঞ্চি ব্যক্তির জন্য পর্যাপ্ত জায়গা রয়েছে এবং রিচার্জ না করে প্রায় ২৫ মাইল পথ উড়ে যেতে পারে।

ওপেনারের কয়েকজন কর্মী এটিকে উড়িয়েছেন। তারা বলেছেন যে, এটি আকাশে টেসলা চালানোর মতো শ^াসরুদ্ধকর অভিজ্ঞতা। লেং বিশ্বাস করেন যে, এই প্রযুক্তির আরও উন্নতি হবে ও এক সময় মূল্য কমে একটি এস.ইউ.ভি.-এর দামের সমান হবে এবং বিশ্ব চূড়ান্তভাবে বৈদ্যুতিক শহুরে ফ্লাইটের ধারণাটি গ্রহণ করবে।

থ্রুন একটি আমেরিকান শহরতলির কথা কল্পনা করেন যেখানে, তার তৈরি বাহনগুলো মানুষকে ঠিক তাদের দরজার সামনে নামিয়ে দেবে। তিনি বলেছেন, সাধারণ অর্থনীতির কারণে কিটি হক কিছু অংশে উবারের মতো একটি পরিবহন পরিষেবা তৈরি করবে। তবে হেভিসাইড ব্ল্যাকফ্লাইয়ের চেয়ে আরও ব্যয়বহুল (সম্ভবত ১৫ লাখ মার্কিন ডলার বা তারও বেশি)। থ্রুন জানান, এটি তৈরিতে প্রায় ৩০ লাখ মার্কিন ডলার ব্যয় হবে। তবে সংস্থাগুলো পরিবহন পরিষেবার চালকদের মাধ্যমে এই ব্যয় উঠিয়ে নিতে পারে।

উড়ন্ত গাড়ি তৈরির অন্যতম প্রতিষ্ঠান ‘উইস্ক অ্যারো’ ভবিষ্যতকে একই দৃষ্টিতে দেখে। তারা ইতোমধ্যে একটি দু’আসন বিশিষ্ট যানবাহন পরীক্ষা করছে এবং একটি বৃহত্তর স্বায়ত্তশাসিত এয়ার ট্যাক্সি তৈরি করছে, যাতে আরও বেশি আসন থাকতে পারে। তবে, তাদের বিমানগুলোর জন্য বিদ্যুতের লাইন ও অবতরণ প্যাডের প্রয়োজন হবে এবং কম উচ্চতায় উড্ডয়নশীল অন্যান্য বিমানের জন্য ঘনবসতিপূর্ণ অঞ্চলে তাদের চলাচলে সমস্যা হতে পারে।

আগামী কয়েক বছরের মধ্যে উড়ন্ত গাড়িগুলো বাজারে পৌঁছে যেতে পারে। এগুলো হেলিকপ্টারের তুলনায় পরিবেশ বান্ধব হবে এবং কম রক্ষণাবেক্ষণের প্রয়োজন হবে। সেগুলো অপেক্ষাকৃত কম শব্দ দূষণ করবে এবং এক সময় সস্তা হয়ে উঠতে পারে। সূত্র : দ্য নিউইয়র্ক টাইমস।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (7)
নূরুজ্জামান নূর ১৪ জুন, ২০২১, ১:৪৩ এএম says : 0
জানজটে মানুষের জীভন অতিষ্ঠ, দ্রুত িএই ধরনের গাড়ি বাজারে আনা হোক।
Total Reply(0)
সোয়েব আহমেদ ১৪ জুন, ২০২১, ১:৪৪ এএম says : 0
আমার সামর্থ ও সুযোগ থাকলে গাড়িটি কিনবো। আমার ইচ্ছে এরকম কিছু একটা বের হোক।
Total Reply(0)
নুর নাহার আক্তার নিহার ১৪ জুন, ২০২১, ১:৪৪ এএম says : 0
অসাধারণ উদ্যোগ। দ্রুত বাজারে আনার ব্যবস্থা করা হোক। আর জানজট ভালো লাগে না।
Total Reply(0)
রুকাইয়া খাতুন ১৪ জুন, ২০২১, ১:৪৪ এএম says : 0
এটা ছাড়া সামনে আর উপায় নেই।
Total Reply(0)
রোদেলা সকাল ১৪ জুন, ২০২১, ১:৪৫ এএম says : 0
অসাধারণ। ‍শুভ কামনা রইলো...
Total Reply(0)
মোহাম্মাদ সাকিব হাসান হাবীব ১৪ জুন, ২০২১, ৩:৩২ পিএম says : 0
একবিংশ শতাব্দীর শুরুতে ব্যক্তিগত ও পারিবারিক ব্যবহারে মিস্টার মার্কাস লেংয়ের ব্লাকফ্লাই গাড়ি একটি অন্যতম সেরা উদ্ভাবনী যা সময় সাশ্রয়ী ও যানজট অতিক্রমী এবং পরিবেশ বান্ধব,ধন্যবাদ সবাইকে। নিজস্ব চিন্তা ও উদ্যোগ (শেয়ার),মোহাম্মাদ সাকিব হাসান হাবীব: খোলা আকাশের বায়ুমণ্ডল ও এর জলীয় বাষ্পের হাইড্রোজেন আয়ন ও নিষ্ক্রিয় গ্যাসসমূহকে সরাসরি বৈদ্যুতিক চার্জ ও তেল এই দুই ক্যাটাগরিতে ইঞ্জিন এর ব্যবহার পৃথিবীকে মুহূর্তেই কমপক্ষে দুইশতবছর এগিয়ে দিবে।
Total Reply(0)
ডা. মিনহাজউদ্দীন সাজিদ ১৫ জুন, ২০২১, ৪:১৩ পিএম says : 0
বাংলাদেশে এই উড়ন্ত গাড়ী কবে নাগাদ আসবে,এবং বাংলাদেশের আকাশে এটা নিয়ে যেখানেসেখানে যাওয়া সম্ভব হবে কিনা সেটা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। কিন্তু বর্তমানে ঢাকা চট্টগ্রামের যানজটে এধরণের যানবাহন খুবই জরুরী।
Total Reply(0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন