লক্ষ্মীপুরের মেঘনা উপকূলীয় রামগতি উপজেলার একটি পৌরসভাসহ পাঁচটি ইউনিয়নের ২ লক্ষ মানুষের নিকট এক আতংকের নাম অস্বাভাবিক জোয়ার।
প্রতিনিয়ত মেঘনানদীর অস্বাভাবিক জোয়ারের পানি প্রবেশ করে প্লাবিত হচ্ছে এসব এলাকায়। এ অস্বাভাবিক জোয়ারে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে মাছের ঘের, ফসলী জমি, রাস্তাঘাট, পুল কালভার্ট, বাড়িঘর, পুকুর এবং গবাদি পশু-পাখি। প্রচন্ড সংকটে পড়ে সুপেয় পানি। জোয়ারের লোনা পানির প্রভাবে হাজার হাজার একর জমির ফসল (রবি শস্য) নষ্ট হয়ে গেছে। লোনা পানির প্রভাবে অনাবাদি থাকছে কৃষি জমি। বসত ঘরে প্রবেশ করছে বিষাক্ত সাপ-বিচ্ছু এবং পোকামাকড়। বৈদ্যুতিক খুঁটিগুলো ভাংগনের শিকার হওয়ায় উপকূলীয় এলাকার বেশ কয়েকটি বসত বাড়িতে বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে বিদ্যুত সংযোগ।অতিরিক্ত জোয়ার ও টানা কয়েকদিনের বর্ষায় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে রামগতি থেকে বিবিরহাট সড়ক। চলাচলের এ প্রধান সড়কটির কোরের বাড়ি সংলগ্ন রাস্তার মোড় নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।এছাড় চররমিজ ইউনিয়নের ছোট বড় বেশ কয়েকটি সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। একাধিক সড়ক ভেঙে যাওয়ায় যান চলাচল বন্ধ রয়েছে।
স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানাগেছে, রামগতি উপজেলার আলেকজান্ডার,চরআলগী, চররমিজ,বড়খেরী, চরগাজী ইউনিয়ন ও রামগতি পৌরসভা মেঘনা উপকূলের নিকটবর্তী হওয়ায় এসব ইউনিয়নের প্রায় দুই লক্ষ মানুষ প্রতিনিয়ত জোয়ারের পানিতে যুদ্ধ করে টিকে আছে।
জোয়ারের তীব্রতায় ভাংগনের পরিমান বৃদ্ধি পাচ্ছে। গত দুই বছরে দক্ষিন চরআলগী, বালুরচরের সবুজ গ্রাম, আসলপাড়া, বড়খেরীর বিস্তীর্ণ এলাকা নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।ঐতিহ্যেবাহী মুন্সিরহাট বাজারটি নদী গর্ভে বিলীন। ভাংগনের মুখে রয়েছে বাংলাবাজার আলিম মাদরাসা, জনতা বাজার, রঘুনাথপুর পল্লী মঙ্গল উচ্চ বিদ্যালয়সহ সরকারি ও বেসরকারি বহু স্থাপনা।
মুন্সিরহাট (জনতাবাজার) এলাকার মো: ইমাম হোসেন জানান, টেকসই এবং স্থায়ী বেড়ীবাঁধ না থাকায় প্রায় জোয়ারে হানা দেয়। লোকালয়ে জোয়ারের পানি প্রবেশ করে নানামুখী দুভোর্গ দেখা দেয়। ভাংগনের তীব্রতা বৃদ্ধি পাওয়ায় গত এক মাসেই মুন্সিরহাট বাজারটি মেঘনা গর্ভে বিলীন হয়েছে।
চররমিজ ইউপি চেয়ারম্যান অধ্যাপক গোলাম ছারওয়ার জানান, প্রতিবারই আমরা ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক গুলোর তালিকা পাঠাই সংশ্লিষ্ট দপ্তরে। ইউনিয়র পরিষদের সংষ্কার বিষয়ক বরাদ্ধের অপ্রতুলতার কথা তুলে ধরে বলেন এ বিশাল ক্ষয়ক্ষতি কাটিয়ে ওঠার মত সামর্থ পরিষদের নেই। ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক গুলোর ব্যাপারে উপজেলা প্রকৌশল বিভাগকে অবহিত করা হয়েছে। ঘুর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে সৃষ্ট জোয়ারে বিবিরহাট বাজারস্থ তাঁর নিজ বাসাতেও পানি উঠেছে বলে জানান তিনি।
রামগতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আব্দুল মোমিন বলেন,রামগতি উপজেলাটি মেঘনানদীর একেবারে নিকটবর্তী হওয়ায় এ উপজেলার জীবনমান নদী ও জোয়ারের পানির সাথে লড়াই করে টিকে আছে। যেই কোন দুর্যোগ মুহুর্তে উপজেলা প্রশাসন প্রতিনিয়ত ছুটে যাচ্ছে বিভিন্ন গ্রামে। প্রশাসন সব সময়ে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষগুলোর পাশে আছে।
উল্লেখ্য যে,চলতি ১জুন একনেকে মেঘনানদীর তীর সংরক্ষণ বাঁধ নির্মাণ প্রকল্পের দ্বিতীয় পর্যায়ের ৩১ কিলোমিটার এলাকার জন্য
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন