মধ্যপ্রাচ্যের মরু অঞ্চলের জনপ্রিয় ফল রক মেলান চাষ হচ্ছে ফেনী জেলার সীমন্তবর্তী উপজেলা পরশুরামে। পরশুরাম উপজেলার মির্জানগর ইউনিয়নের উত্তর কাউতলী গ্রামের বাসিন্দা প্রবাসী শেখ আহম্মদ এই ফল চাষ করে রীতিমত তাক লাগিয়ে দিয়েছেন।
২০০৭ সালে সউদী আরব থেকে দেশে এসে শুরু করেন কৃষিকাজ। চলতি বছর বাড়ির পাশে দুই বিঘা জমি লিজ নেন। চট্টগ্রামের লালদিঘীর পাড়ের একটি বীজ ভান্ডার দোকান থেকে রক মেলনের বীজ সংগ্রহ করে নিজস্ব প্রযুক্তিতে চাষাবাদ শুরু করেন শেখ আহম্মদ। তিনি জানান, চলতি বছরের মার্চ মাসের শেষের দিকে ২ বিঘা জমিতে তিন জাতের রক মেলনের বীজের চারা রোপণ করেছিলেন। চারা রোপণের ৭০ দিনের মাথায় গাছে ফল আসতে শুরু করে। এ ফলের একটি হচ্ছে হলুদে কালার ও অন্যগুলোর কালার খসখসে সবুজ ও সাদা আকৃতির। এর স্বাদ কিছুটা ভিন্ন হলেও অনেক মিষ্টি। এগুলোর ওজন ২ থেকে ৩ কেজির ওপরে হয়েছে।
তিনি আরো জানান, এ ফল বিক্রি করে তিনি লাভবান হয়েছেন। পাইকারী দরে রক মেলান ফল বিক্রি করেছেন কেজি প্রতি ১৫০ টাকা, বারোমাসি ছোট তরমুজ বিক্রি করেছেন ৫০ থেকে ৬০ টাকা। এ পর্যন্ত তিনি ২ লাখ টাকার রক মেলন ফল ও তরমুজ বিক্রি করেছেন। এ ফল চাষ করতে জমি লিজ নেয়াসহ তার মোট খরচ হয়েছে প্রায় ১ লাখ টাকা।
এছাড়াও তিনি রক মেলন ফলের পাশাপার্শি বারোমাসি ছোট আকারের মিষ্টি তরমুজের চাষ করেন। যা এ অঞ্চলের জন্য এটির প্রথম চাষ। তবে বীজবপনের সঠিক সময়, সার ও কীটনাশক প্রয়োগবিধি কিছুই জানা ছিল না তা। বিধায় ক্ষেতে অনেক টাকার ফল নষ্ট হয়ে গেছে এবার। কিন্তু তিনি এ বিষয়ে কৃষি বিভাগের সহায়তা পেলে আগামীতে আরো জমি লিজ নিয়ে চাষাবাদ করলে এই ফলজাতের বাম্পার ফলন হবে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
এদিকে পরশুরাম বাজারের ফল ব্যবসায়ী মো. মাসুদ বলেন, অচেনা জাতের রক মেলন ফল ক্রেতা সাধারণের কাছে বেশ আকর্ষণীয় হয়ে উঠে। এ ফলের স্বাদ ও ঘ্রাণে চাহিদা অনেক বেড়ে গেছে।
ফল কিনতে আসা মো ইব্রাহিম বলেন, পাকা রক মেলন ফল অত্যন্ত মিষ্টি। এ ফলের ভেতরের রঙ পাকা পেঁপের মতো। অন্যটির রঙ সাদা ও সবুজ আকৃতির। একবার কিনলে বারবার কিনতে মন চাইবে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. কামরুজ্জামান জানান, রক মেলন ফল চাষাবাদ করার জন্য কৃষকদেরকে সহযোগিতা করবে কৃষিবিভাগ। সাধারণ তরমুজের চেয়ে এই ফলের স্বাদ অনেক বেশি। এটি একটি পুষ্টিকর মিষ্টি ফল। কৃষকরা সঠিকভাবে এর চাষাবাদ করতে পারলে অনেক লাভবান হবেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন