শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

কুষ্টিয়ায় স্বাস্থ্যবিধির কোন বালাই নাই.........!

২৪ ঘন্টায় সর্বোচ্চ নতুন করোনা রোগী শনাক্ত ৯৮জন, মৃত্যু ৩

কুষ্টিয়া থেকে স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৬ জুন, ২০২১, ১১:০৯ এএম

কুষ্টিয়ায় গত ২৪ ঘণ্টায় ২৩৯টি নমুনা পরীক্ষায় ৯৮ জনের করোনা ধরা পড়েছে। এর আগে সোমবার সর্বোচ্চ ৯১ জনের করোনা শনাক্ত হয়। মঙ্গলবার (১৫ জুন) সেই রেকর্ড ভেঙে নতুন রেকর্ড হলো। জেলায় এটিই এখন পর্যন্ত একদিনে সর্বোচ্চ শনাক্ত।

নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ৪২ দশমিক ০৬ শতাংশ। একই সময়ে তিন করোনা রোগীর মৃত্যু হয়েছে। এ পর্যন্ত জেলায় মোট ৫ হাজার ৮৩৪ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। কুষ্টিয়া সিভিল সার্জন অফিস এসব তথ্য নিশ্চিত করেছে।

নতুন ৯৮ জন করোনা আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে কুষ্টিয়া সদর উপজেলার ৬৫ জন, দৌলতপুর উপজেলার ৬ জন, কুমারখালীর ১২ জন, ভেড়ামারার ৬ জন, মিরপুরের ৮ জন ও খোকসা উপজেলার একজন রয়েছেন। আর মৃত তিন জনের দুজন সদর উপজেলার ও একজন কুমারখালী উপজেলার বাসিন্দা।

এদিন জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ নতুন আরও ৭০ জনের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য সংশ্লিষ্ট ল্যাবে পাঠিয়েছে। এ নিয়ে মোট ৫৫ হাজার ১৭৩ জনের নমুনা নেওয়া হয়। পরীক্ষার রিপোর্ট পাওয়া গেছে ৫৪ হাজার ২৯৪ জনের।

বর্তমানে কুষ্টিয়ায় মোট করোনা রোগীর সংখ্যা ৮১৭ জন। তাদের মধ্যে হাসপাতাল আইসোলেশনে চিকিৎসাধীন আছেন ৭০ জন। হোম আইসোলেশনে আছেন ৭৪৭ জন।

এদিকে জেলায় করোনা পরিস্থিতির অবনতি ঘটলেও প্রশাসনের প্রতিরোধ ব্যবস্থা চলছে ঢিমেতালে। গত শুক্রবার মধ্যরাত থেকে কুষ্টিয়া পৌর এলাকায় সাত দিনের জন্য কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করে জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটি। কিন্তু মানুষের চলাচল দেখে তা বোঝার উপায় ছিল না।

করোনার বিস্তার রোধে গত ১১ জুন থেকে ১৮ জুন পর্যন্ত কুষ্টিয়া শহরের পৌর এলাকায় সাত দিনের কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করে গণবিজ্ঞপ্তি জারি করেন কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম।

বিধিনিষেধের গণবিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছিল, কুষ্টিয়া পৌর এলাকায় কাঁচাবাজার বাদে সব ধরনের দোকান বন্ধ থাকবে। শহরে কোনো প্রকার যানবাহন চলাচল করতে পারবে না। কিন্তু বাস্তবে শহরের এনএস রোডের কিছু দোকানপাট বন্ধ ছাড়া আর কোথাও বিধিনিষেধ মানতে দেখা যাচ্ছে না। মানুষ চলাচল করায় যানবাহনের উপস্থিতিও চোখে পড়ছে।

এ বিষয়ে কুষ্টিয়ার সিভিল সার্জন এইচ এম আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, প্রথম ও দ্বিতীয় ঢেউয়ের মধ্যে এটাই সর্বোচ্চ শনাক্ত। সম্প্রতি কুষ্টিয়া পৌরসভায় সবচেয়ে বেশি রোগী শনাক্ত হচ্ছেন। কিন্তু এখানে পাঁচ দিন ধরে কঠোর বিধিনিষেধ চলছে। এরপরও কেন রোগীর সংখ্যা বাড়ছে, তা গবেষণা করা প্রয়োজন। সংক্রমণ ঠেকাতে কঠোর লকডাউনের মতো ব্যবস্থা নেওয়া দরকার। হু হু করে করোনা সংক্রমণ যে হারে বাড়ছে তাতে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া বেশ কঠিন হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডের চিকিৎসকরা জানান, করোনার শুরু থেকেই কুষ্টিয়া জেলায় শনাক্তের সংখ্যা শতকরা ২০ ভাগের ওপরে কখনো অতিক্রম করেনি। কিন্তু এখন আক্রান্তের সংখ্যা ৪০ ভাগের ওপরে উঠে গেছে।

এদিকে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে ভিড় লেগেই আছে। ওয়ার্ডটিতে ৪১টি বেড রয়েছে কিন্তু সেখানে প্রায় দ্বিগুণ রোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন। বেড না থাকায় রোগীদের বারান্দায় রাখা হচ্ছে। রোগীর ভিড় বেড়ে যাওয়ায় ওয়ার্ডের বারান্দা, স্বাস্থ্যকর্মীদের বসার জায়গাটুকুও রোগীর শয্যায় রূপান্তরিত হয়েছে।
কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার তাপস কুমার সরকার বলেন, এ অবস্থায় করোনা রোগীর ভিড় সামাল দিতে অন্যান্য রোগে আক্রান্ত রোগীদের হাসপাতালে ভর্তি করাকে নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় রোগীদের ভিড় সামাল দিতে নতুন একটি করোনা ওয়ার্ড চালুর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন