শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

নোয়াখালী-৫ (কোম্পানীগঞ্জ) আসনে ব্যারিস্টার মওদুদের উত্তরসূরী হতে আগ্রহী তাঁর স্ত্রীসহ ৭জন

আনোয়ারুল হক আনোয়ার | প্রকাশের সময় : ১৬ জুন, ২০২১, ১:১৩ পিএম | আপডেট : ১:২৬ পিএম, ১৬ জুন, ২০২১

নোয়াখালী-৫ নির্বাচনী আসনটি (কোম্পানীগঞ্জ-কবিরহাট) নিয়ে গঠিত। জাতীয় রাজনীতিতে আসনটি ভিআইপি আসন হিসেবেও পরিচিত। জীবদ্দশায় বিএনপির নেতৃত্বে নিজের আসনসহ নোয়াখালীতে প্রভাবশালী ব্যক্তি ছিলেন প্রয়াত ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ।

সাবেক প্রধানমন্ত্রী, উপরাষ্ট্রপতি এবং বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের মৃত্যুর পর আসনটিতে উত্তরাধিকার নিয়ে আলোচনা চলছে। এ আসনে আওয়ামী লীগের বিপক্ষে বিএনপির হয়ে কে নেতৃত্ব দেবে। এমন অবস্থায় ব্যারিষ্টার মওদুদের উত্তরসূরী হিসেবে বিএনপির হাল ধরতে চান তার সহধর্মীনি হাসনা জসীম উদদীন মওদুদসহ ৭জন। নিরবে নেতৃত্ব প্রত্যাশীরা চালাচ্ছে নানামুখী কর্মকান্ড। করোনা সংক্রমণের কারণে স্থানীয় বিএনপির রাজনৈতিক কর্মকান্ড স্তিমিত হয়ে পড়েছে। তবে সীমিত রাজনৈতিক কর্মকান্ডের মধ্যেও স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মীদের মূল আলোচনার বিষয় হচ্ছে মওদুদের স্থলে বিএনপির রাজনৈতিক সাংগঠনিক কার্যক্রমের উত্তরসূরী হচ্ছে কে? কার নেতৃত্বে দীর্ঘদিন ধরে ক্ষমতার বাইরে থাকা বিএনপির নেতাকর্মীরা ঐক্যবদ্ধ থাকবে। নেতৃত্ব প্রত্যাশীদের মধ্যে দলের ত্যাগী-পরিক্ষিত নেতা যেমন আছে, তেমনি আছেন নব্য বিএনপিরাও। এ পরিস্থিতিতে যে কোনো মুহূর্তে আসতে পারে নতুন নেতৃত্বের ঘোষণা। বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতাদের সূত্রে এমন আভাস পাওয়া গেছে।

নেতৃত্ব প্রত্যাশীদের মধ্যে আলোচনায় রয়েছে, প্রয়াত ব্যরিস্টার মওদুদ আহমদের সহধর্মীনি সাবেক সংসদ সদস্য হাসনা জসীম উদদীন মওদুদ। আরও রয়েছে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট জাকির হোসেন, বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও নোয়াখালী জেলা বিএনপির সভাপতি গোলাম হায়দার বিএসসি, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বজলুল করিম চৌধুরী আবেদ, অ্যাডভোকেট পারভীন কাউছার মুন্নি। এছাড়া জামায়াত ঘরানার ব্যবসায়ী ফখরুল ইসলাম নিজেকে বিএনপি বলে পরিচয় দিলেও, তিনি এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে বিএনপিতে যোগ দেননি। তিনিও নেতৃত্ব প্রত্যাশী।

কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা বিএনপিসাধারণ সম্পাদক মাহমুদুর রহমান বলেন, বিএনপির সাংগঠনিক নেতৃত্ব দেয়ার ক্ষেত্রে এখন পর্যন্ত মওদুদ আহমদের সহধর্মীনি হাসনা জসীম উদদীন মওদুদ এগিয়ে রয়েছে। স্থানীয় নেতাকর্মীরা জানায়, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য বজলুল করিম চৌধুরী আবেদ ও মাঠ পর্যায়ের পরিক্ষত নেতাদের আস্থার জায়গায় রয়েছেন। কবিরহাট পৌরসভা বিএনপির সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান মঞ্জু বলেন, মওদুদ আহমদের মত পাহাড়সম যোগ্যতার অধিকারী রাজনীতিবিদের নেতৃত্বে নোয়াখালী-৫ আসন বিএনপি ছিল। আগামী দিনের রাজনীতিতে মরহুম ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের প্রতি ভালোবাসা ও শ্রদ্ধাবোধের উপর নির্ভর করবে দলীয় নেতা-কর্মী ও সাধারণ মানুষের কাছে বিএনপির গ্রহণযোগ্যতা। এইটা ভুলে গেলে চলবে না।

হাসনা জসীম উদদীন মওদুদ বলেন, এটা এখনো অনেক অপরিপক্ক বিষয়। আমি এখনো শোকে আছি। তবে আমাদের পার্টি থেকে যখন যে সিন্ধান্ত আসবে, সে হিসেবে আমি মুভ করব এবং সেটাই পালন করব। তবে এলাকার মানুষ চাইলে আমি বিয়টি প্রাধান্য দেব।
অ্যাডভোকেট জাকির হোসেন বলেন, মওদুদ সাহেব যখন জাতীয় পার্টিতে যায় তখন এখানে বলতে গেলে বিএনপির অস্তিই ছিলনা। তখন সদর-কোম্পানীগঞ্জে বিএনপির সাংগঠনিক অবস্থাটা আমি তৈরী করেছি। আমি বাংলাদেশ ছাত্রদলের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ছিলাম। ১৯৯১ সালে এই আসন থেকে আমি বিএনপির প্রাথী হিসেবে সংসদ নির্বাচন করি। এ হিসেবে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে আমিই প্রাপ্য। জেলা বিএনপির সভাপতি গোলাম হায়দার বিএসসি, এ বিষয় নিয়ে মন্তব্য করতে অনীহা প্রকাশ করেন।
বজলুল করিম চৌধুরী আবেদ বলেন, মওদুদ সাহেবই এলাকার রাজনীতিতে আমাকে উৎসাহিত করেন। আমি চাচ্ছিনা, মওদুদ সাহেবের মৃত্যুর পর-পরই এ বিষয় নিয়ে কথা বলতে বরং আমি চাচ্ছি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এলাকায় খোঁজ খবর নিয়ে ভবিষ্যত রাজনীতির জন্য যাকে যোগ্য মনে করবেন তাকেই এলাকার রাজনীতির সাংগঠনিক কর্মকান্ড দেখ ভালের জন্য দায়িত্ব দিবেন। দলকে ভালোবেসে দলের দায়িত্ব নিতে আমার আগ্রহ থাকাটা স্বাভাবিক। তবে দলের হাই কমান্ড যে সিন্ধান্ত নিবে তা মেনেই আমরা রাজনীতি করব। ফখরুল ইসলাম বলেন, এখন অনেককে নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। দল কাকে দিবে এটা দলের কেন্দ্রীয় সিন্ধান্তের ওপর নির্ভর করছে। অ্যাডভোকেট পারভীন কাউছার মুন্নি বলেন, আমি ছাত্রদলের রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলাম। বিভিন্ন ভাবে দলের জন্য কাজ করে যাচ্ছি। দলের কাছে আমার বক্তব্য তুলে ধরব। দল যে সিন্ধান্ত দিবে আমরা তা মেনে দলের জন্য কাজ করব।

এ বিষয়ে বিএনপির বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুর রহমান শামীম বলেন, যারা তৃণমূলের নেতাকর্মীদের সাথে নিয়ে দলের কাজ করবে তারাই নতুন নেতৃত্বে উঠে আসবেন।

স্থানীয়দের ধারণা, এ আসনটিতে যে প্রার্থী জয় পান, তার দলই সরকার গঠন করে। ১৯৯১ সালের পঞ্চম সংসদ নির্বাচনের সময় থেকেই এ আসনে লড়ে আসছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও মওদুদ আহমদ। যেবার মওদুদ জিতেছেন, সেবার বিএনপি সরকার গঠন করেছে, যেবার ওবায়দুল কাদের জিতেছেন, সেবার আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করেছে।

উল্লেখ্য, সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়। ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ ১৯৪০ সালের ২৪ মে নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার মানিকপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা মাওলানা মমতাজ উদ্দিন আহমেদ এবং মা বেগম আম্বিয়া খাতুন। ছয় ভাই-বোনের মধ্যে মওদুদ আহমেদ চতুর্থ।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (1)
কামরুল ২৩ জুন, ২০২১, ১২:৪৭ পিএম says : 0
তরুদে দেওয়া উচিত
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন