বরগুনার তালতলীতে ধর্ষণ ও খুনের হুমকিতে এলাকা ছেড়ে পালিয়ে বেড়ানো এক কিশোরীর পরিবার আজ ১৬ জুন সকালে তালতলী প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলন করেন। সংবাদ সম্মেলনের অভিযোগের বিষয়ে ধর্ষণ চেষ্টা মামলার আসামী আবুল হাসানের বক্তব্য নিতে গেলে সাপ্তাহিক বিপ্লবী জনতা পত্রিকার তালতলী প্রতিনিধি সাহিন শাইরাজ নামের এক সাংবাদিকের ওপর হামলা চালিয়েছে সন্ত্রাসীরা। এসময় তাকে পিটিয়ে গুরুতর জখম করা হয়ে।
বুধবার(১৬ জুন)সকাল ১০টার দিকে উপজেলার মুক্তিযোদ্ধা রোডের আবুল জোমাদ্দারের কাপড়ের দোকানের সামনে এ ঘটনা ঘটে। আহত সাংবাদিক তালতলী প্রেসক্লাবের দপ্তর সম্পাদক হিসেবে আছেন। হামলার ঘটনায় তালতলী সাংবাদিক ফোরাম, তালতলী সাংবাদিক ইউনিয়ন, তালতলী রির্পোটার্স ইউনিটিসহ সকল সাংবাদিকরা তীব্র নিন্দা জানান।
সংবাদ সম্মেলনের সূত্রে জানা যায়, উপজেলার পঁচাকোড়ালিয়া ইউনিয়নের মনসাতলী এলাকার হারুন মিয়ার ছেলে কথিত সাংবাদিক আবুল হাসান বিভিন্ন সময় রাসেল মুসুল্লীর কিশোরী কন্যা ও ভাগ্নিকে অশালীন মন্তব্য ও কু প্রস্তাব দিয়ে আসছিল এবং বিভিন্ন সময় টয়লেটে মোবাইল ক্যামেরা লুকিয়ে রাখত। পরবর্তীতে গত ১১ মার্চ আবুল হাসান ও তার দুই সহযোগীসহ রাসেল মুসুল্লীর বাড়িতে গিয়ে তার ভাগ্নিকে জোড়পূর্বক ধর্ষন চেস্টা করে। এ ঘটনায় নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে আদালতে মামলা দায়ের করা হলে তালতলী থানা পুলিশ আবুল হাসানকে গত ৭ এপ্রিল গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করে। কিছুদিন পরে আবুল হাসান জামিনে বের হয়ে ঐ ভাগ্নিকে মামলা উঠিয়ে নিতে বলে, না হলে ধর্ষণের পরে হত্যা করে লাশ গুম করা হবে বলে হুমকি দেয়। এ ঘটনায় ভয়ে ভাগ্নি এলাকা ছাড়ায় তার মামা রাসেল আজ ১৬ জুন সকাল ৯টার দিকে তালতলী প্রেসক্লাবে এসে বিচার চেয়ে একটি সংবাদ সম্মেলন করেন। সংবাদ সম্মেলন শেষে উপজেলার মুক্তিযোদ্ধা রোডের আবুল জোমাদ্দারের কাপড়ের দোকানের সামনে আবুল হাসানের সাথে দেখা হলে ক্ষিপ্ত হয়ে আবুল হাসান ও সাথে থাকা শাহদাত হোসেনসহ ৭-৮জন সন্ত্রাসী বাহিনী প্রেসক্লাব নিয়ে বাজে মন্তব্য করেন এবং সাংবাদিক সাহিন শাইরাজের ওপর হামলা চালায়। এতে তার মাথায় আঘাত ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে গুরুতর জখম হয়। পরে স্থানীরা উদ্ধার করে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে হাসপাতালে পাঠায়।
প্রতক্ষদর্শী কয়েকজনের সাথে কথা বলে জানা যায়, সাংবাদিক সাহিন সাইরাজের সাথে কিছু লোকজনের সাথে কথা কাটাকাটির পর্যায় সাহিন সাইরাজকে বেধরক মারধর করেন।পরে স্থানীয়রা উদ্ধার করে তাকে হাসপাতাল পাঠায়।
এবিষয়ে আহত সাংবাদিক সাহিন সাইরাজ বলেন, আবুল হাসানের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করেন ভুক্তভোগি এক পরিবার। সেই বিষয়ে তার বক্তব্য নিতে গেলে আবুল হাসান ও শাহদাতসহ ৭-৮জন মিলে প্রেসক্লাব নিয়ে বাজে মন্তব্য করেন ও আমাকে মারধর করেন।
প্রেসক্লাবের সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন দপ্তর সম্পাদক শাহিন শাইরাজের ওপর সন্ত্রাসী হামলায় আহত হওয়ার বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক। সুষ্ঠ তদন্ত করে অপরাধীদের আইনের আওতায় এনে বিচারের দাবি জানাচ্ছি প্রশাসনের কাছে।
তালতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. কামরুজ্জামান মিয়া বলেন, বিষয়টি শুনেছি যে আবুল হাসানের সাথে সাহিন সাইরাজের সাথে মারধর হয়েছে। দুইপক্ষই আমতলী হাসপাতালে ভর্তি আছে। তিনি আরও বলেন কোনো পক্ষ থেকেই অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন