করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে যশোরের বেনাপোলসহ গোটা শার্শা উপজেলায় ৭ দিনের জন্য কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে।
গতকাল মঙ্গলবার রাতে এক গণ বিজ্ঞপ্তিতে কঠোর এ বিধিনিষেধ জারি করা হয়। যা আগামী ২১ জুন পর্যন্ত বলবদ থাকবে বলে নিশ্চিত করেছেন নাভারন সার্কেল এএসপি জুয়েল ইমরান ।
তিনি বলেন, সকাল ৯ টা থেকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত সকল ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খোলা থাকবে। তার পর থেকে কোন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খোলা থাকবে না। শুধুমাত্র ওষুধের দোকান ও ভারত ফেরত যাত্রীদের জন্য প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনের জন্য কয়েকটি আবাসিক হোটেল এবং খাবার হোটেল সার্বক্ষণিক খোলা থাকবে।
বেনাপোল বন্দরের উপ-পরিচালক মামুন কবির তরফদার জানান, কঠোর বিধিনিষেধের মধ্যে যেহেতু বন্দরের কার্যক্রম স্বাভাবিক রয়েছে ।সেক্ষেত্রে ভারত থেকে পন্য নিয়ে আসা ড্রাইভার হেলপাররা সব সময় মুখে মাস্ক এবং পিপিই ব্যবহার করবেন। এক জায়গায় বেশি লোক সমাগম হবেনা। আর তারা যাইরে বের হতে না পারে সেজন্য বন্দরের প্রতিটা গেটে একজন আনসার সদস্য ও দুইজন করে সিকিউরিটি গার্ড নিযুক্ত করা আছে। জনসাধারণকে সচেতন করার জন্য সার্বক্ষণিক মাইকিং করা হচ্ছে।
শার্শা উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. ইউসুফ আলি জানান, সীমান্ত জেলা যশোরের কয়েকটি উপজেলায় করোনার প্রকোপ বেড়ে গেছে। করোনা সংক্রমণ রোধে স্বাস্থ্য বিভাগ এবং প্রশাসনের তরফ থেকে গোটা উপজেলা কঠোর-বিধিনিষেধের আওতায় আনা হয়েছে। গত ২৪ ঘন্টায় শার্শা উপজেলায় ৩০টি নমুনার মধ্যে ২২ জনের করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। শনাক্তের শতকরা হার ৪৭ শতাংশের উপরে। এ পর্যন্ত উপজেলায় ৬২১ জন করোনা রোগী পাওয়া গেছে। তাদেরকে হোম কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে।
শার্শা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মীর আলিফ রেজা জানান,করোনা প্রতিরোধ কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক উপজেলায় ৭ দিনের কঠোর-বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে।পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সকলকে বাধ্যতামূলক মাস্ক পরিধান করতে হবে। গণপরিবহন বন্ধ থাকবে। বিকেল পাঁচটার পর সকল ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখতে হবে। মোটরসাইকেলে একজন ও ইজিবাইকে দুই জনের বেশি যাত্রী বহন করা যাবে না। সকল প্রকার গনজমায়েত, সভা সমাবেশ, মিছিল নিষিদ্ধ করা হয়েছে। হোটেল রেস্তোরায় বসে খাওয়া যাবে না এবং চায়ের দোকানে বেঞ্চ, কেরামবোর্ড ও টেলিভিশন রাখা যাবে না। বিনা কারনে সন্ধা ৬টার পরে ঘরের বাইরে আসা যাবে না।
বেনাপোল ইমিগ্রেশনের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি আহসান হাবিব জানান, ভারত ফেরত প্রত্যেক যাত্রীদের কোয়ারেন্টিন বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট যাতে ছড়াতে না পারে সেজন্য সাবধানে তাদের কোয়ারেন্টিন হোটেলে পাঠানো হচ্ছে। গত ২৬ এপ্রিল থেকে ১৫ জুন পর্যন্ত ভারত থেকে ৫ হাজার ২৩৯ জন পাসপোর্টধারি যাত্রী বাংলাদেশে ফিরেছেন। কোভিড পজিটিভ সনদ নিয়ে ভারত থেকে ফিরেছেন ১৩ জন। ফেরত আসা বাংলাদেশিদের মধ্যে ৪৬ জন করোনা আক্রান্ত হয়েছে। ৬ জনের শরীরে মিলেছে ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট। ভারতে কখনো যায়নি যশোরে এমন মানুষের শরীরেও মিলেছে ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন