বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

ইসলামী জীবন

সালাম ঐক্য সংহতি রক্ষার অন্যতম বাহন

আবদুল কাদির ফারূক | প্রকাশের সময় : ১৮ জুন, ২০২১, ১২:০৮ এএম

সালাম একটি অভিবাদন। সালাম মানে কল্যাণকামীতা চাওয়া। সালাম শান্তির বাহন। শান্তির বাতায়ন। ঐক্য সংহতি রক্ষার অন্যতম বাহন। হিংসা-বিদ্বেষকে দূরভীতকারী। সালাম দম্ভ-অহমিকতাকে করে খুন। সালাম ভালো মানুষের গুণ। ভালোবাসার বন্ধন, মাধ্যম। সামাজিক বাঁধন। ভ্রাতৃত্বের মিলন। ভব্যতার আভা। মুসলিম উম্মাহর ঐক্যবদ্ধের প্রতীক। সালাম বিনয়ী মানুষের পোশাক। সুন্দর সমাজ গঠনে সালামের ভূমিকা অপরিসীম। মনোমালিন্যতা ও শত্রুতার চিরবিদায়কারী এই সালাম। মোদ্দাকথা একটি সালাম দেওয়াতে রয়েছে অনেক উপকার। সালাম ইসলামি শরীয়তের একটি দুয়া, যা মুসলমানদের পরস্পরে সাক্ষাতে হাসিমুখে বিনিময় হয়ে থাকে। সাহাবায়ে কেরামের মধ্যে প্রতিনিয়ত সালামের প্রতিযোগিতা হতো। সালাম দ্বারা সমাজের মধ্যে অনাবিল সুখ-শান্তি আর সহমর্মিতা বিরাজিত হয়। পৃথিবীতে প্রত্যেক সভ্য জাতির মধ্যে পারস্পরিক সাক্ষাতে ভালোবাসা-স¤প্রীতি প্রাকাশার্থে কোনো না কোনো বাক্য আদান-প্রদান করার প্রথা প্রচলিত আছে। তুলনা করলে দেখা যাবে ইসলামি সালাম ব্যাপক ও অর্থবোধক। কেননা এতে ভালোবাসা প্রকাশ করার সাথে সাথে ভালোবাসার হকও আদায় করা হয়।
সালামের ব্যাপারে মহান রব আল কুরআনে বলেন : আর তোমাদেরকে যদি কেউ দুয়া করে তাহলে তোমারও তার জন্য দুয়া করবে; তারচেয়ে উত্তম দুয়া অথবা তারই মত ফিরিয়ে বল। নিশ্চয় আল্লাহ সর্ববিষয়ে হিসেবে-নিকাশ গ্রহণকারী। (সূরা ইবরাহিম-৪)।
পৃথিবীতে যত উত্তম কাজ আছে এর মধ্যে সালাম অন্যতম। হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আমর রাযি. হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, এক ব্যক্তি রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিগ্যেস করল, ইসলামে কোন অভ্যাসটি উত্তম? রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, অপরকে খানা খাওয়াবে এবং পরিচিত-অপরিচিতি সবাইকে সালাম করবে। (বুখারী-মুসলিম)। এই হাদিস থেকে একটি জিনিস প্রতীয়মান হয় যে, আমরা পরিচিতি- অপরিচিত সবাইকে সালাম করব। সালাম মুসলমানদের ঐক্য-সংহতির অন্যতম দিক।
হযরত আবু হোরায়রা রাযি. হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তোমরা ততক্ষণ পর্যন্ত বেহেশতে প্রবেশ করতে পারবে না, যতক্ষণ না তোমরা ঈমান গ্রহণ করবে। আর ততক্ষণ পর্যন্ত ঈমান গ্রহণ করবে না, যতক্ষণ না তোমরা পরস্পরকে ভালোবাসবে। আমি তোমাদেরকে এমন কথা বলে দেব, যার উপর আমল করলে তোমাদের পারস্পরিক ভালোবাসা বৃদ্ধি পাবে। তোমরা পরস্পরের মধ্যে সালামের প্রচলন করবে। (মুসলিম)।
পারস্পরিক ভালোবাসা মুসলমানদের ঐক্য-সংহতিকে সুদূর করে। ঐক্য-সংহতি দ্বীন প্রতিষ্ঠার পথকে সুগম করে। সালামই মুসলমানদের পারস্পরিক বিচ্ছিন্নতা ও হিংসা-দ্বেষকে দূরভীত করে। আর এই সালামই পরস্পরের মধ্যে ভালোবাসা ঐক্য সংহতি রক্ষার অন্যতম বাহন। অহংকার একটি ঘৃণিত কাজ। মহান রব এটাকে অপছন্দ করেন। স্বভাবতই মানুষের অন্তরে অবস্থার পরিবর্তনে কিছু না কিছু গর্ব-অহংকার জেগে ওঠে। তাই বান্দার সুপ্তা গর্বকে খর্ব করার জন্য মানবতার অগ্রদূতের মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আধ্যাত্নিক একটি গুরুত্বপূর্ণ কথা বলে দিয়েছেন, তা হলো; সালাম।
হযরত আবু হুরায়রা রাযি. হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আরহী ব্যক্তি পায়ে হেঁটে চলা ব্যক্তিকে সালাম দেবে। পদব্রজে গমনকারী উপবিষ্ট ব্যক্তিকে সালাম দেবে এবং অল্প সংখ্যক লোক বেশি সংখ্যক লোককে সালাম দেবে। (বুখারী-মুসলিম)। আজ গন্ডমূর্খ অধ্যুষিত সমাজে সালাম মযলূম। বড্ড অসহায়। সমাজে এক মুসলিম ভাই হিসেবে অপর ভাইকে সালাম দেওয়া-পাওয়া দুরূহ ব্যাপার। অথচ আমার- আপনার নবী সা. বড়দেরকে তো সালাম দিতেন ই এমনকি ছোটো ছোটো শিশুদেরকেও আদর ও আদব শিক্ষা দেওয়ার জন্য সালাম করতেন।

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (1)
Md Anish Ahmed ১৮ জুন, ২০২১, ১:২৮ এএম says : 0
Alhamdulillah.
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন