শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

বরিশালে নৌকাডুবি ১৩ জনের লাশ উদ্ধার

প্রকাশের সময় : ২২ সেপ্টেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

বরিশাল ব্যুরো : বরিশালের বানারীপাড়া থেকে উজিরপুরের হাবিবপুরগামী যাত্রী বোঝাই একটি যন্ত্রচালিত নৌকা ডুবিতে নিখোঁজ অন্তত কুড়ি জনের মধ্যে ১৩ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। উদ্ধারকৃত লাশের মধ্যে ৫ নারী ও একটি শিশু রয়েছে। সব ধরনের সনদবিহীন ‘এমবি ঐশি’ নামের ঐ যন্ত্রচালিত নৌযানটির বিআইডব্লিটিএ’র কোনো রুট পারিমিটও ছিল না। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত উদ্ধার অভিযান চলছিল। স্বজনহারাদের আর্তনাদে ভারি হয়ে উঠেছে খর¯্রােতা সন্ধ্যা নদীর তীর।
বানারীপাড়া থেকে প্রায় ৫০ যাত্রী নিয়ে ছেড়ে আসা নৌযানটি গতকাল দুপুর ১২টার দিকে একই উপজেলার দাশেরহাট এলাকায় সন্ধ্যা নদী তীরে যাত্রী নামাবার সময় আচমকা ভাঙনকবলিত নদীর কিনারা থেকে একটি বড় মাটির চাই তার সম্মুখ ভাগে ভেঙে পড়ে। সাথে সাথেই নৌযানটি একদিকে কাঁত হয়ে ডুবে যায়। নদী কিনারায় দুর্ঘটনার কারণে বেশিরভাগ যাত্রীই নিরাপদে উঠতে সক্ষম গলেও নারী ও শিশুদের পক্ষে তা সম্ভব হয়নি। মোট কুড়ি জনের মতো নিখোঁজের কথা বলা হলেও সন্ধ্যায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত পুলিশ-প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে দমকল ও বিআইডব্লিউটিএ’র ডুবুরীরা তল্লাশি চালাচ্ছে। ১৩টি লাশ উদ্ধার করা হলেও তল্লাশি চলছিল। সন্ধ্যার তীব্র ¯্রােতের ৪০ ফুট নিচে নৌযানটিকে চিহ্নিত করে স্থানীয়ভাবে উদ্ধারের চেষ্টাও অব্যাহত থাকলেও তা খুব একটা সফল হচ্ছিল না।
তবে বিআইডব্লিউটিএ’র বন্দর ও নৌ নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা উপ-পারিচালক জানান, কর্তৃপক্ষের টাগ ‘নির্ভীক’ বিকেলে বরিশাল থেকে রওয়ানা হয়েছে। রাত ৯টার মধ্য টাগটি দুর্ঘটনাস্থলে পৌঁছবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করে তিনি বলেন, তার ডুবুরী দলও উদ্ধার তৎপরতায় সম্পৃক্ত রয়েছে। নির্ভীক পৌঁছার পরে যত দ্রত সম্ভব দুর্ঘটনাকবলিত নৌযানটির উদ্ধার তৎপরতা শুরু হবে বলেও জানান নৌ নিরাপত্তা কর্মকর্তা। এমবি ঐশি নামের যন্ত্রচালিত নৌযানটির কোনো অনুমোদন ছিল না বলে জানিয়ে তিনি জানান, সম্পূর্ণ অবৈধভাবেই এটি যাত্রী পরিবহনকালে এ দুর্ঘটনার কবলে পড়ে।
গতকাল দুপুরে খবর পেয়ে স্থানীয় এমপি তালুকদার মোঃ ইউনুস দ্রুত দুর্ঘটনাস্থলে ছুটে যান। বরিশাল ও বানারীপাড়া থেকে পুলিশ-প্রশাসনের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাগণও দুর্ঘটনাস্থলে গিয়ে উদ্ধার তৎপরতার তদারকি করেন। বরিশাল নৌ ফায়ার স্টেশন ও বানারীপাড়া থেকে দমকল কর্মীসহ ডুবুরী দলও সেখানে পৌঁছে উদ্ধার কাজে অংশ নেয়। দুর্ঘটনার পরে হাজার হাজার নারী-পুরুষ ও শিশু সন্ধ্যা নদী তীরে ভিড় জমান।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের বরিশালের সহকারী পরিচালক ফারুক হোসেন সিকদার জানান, লঞ্চ ডুবির ঘটনায় বিকেল চারটা পর্যন্ত উজিরপুরের হারতা গ্রামের সুকদেব মল্লিক (৩০), রাবেয়া বেগম (৫০), মোজাম্মেল মোল্লা (৬০), রুপা বেগম (২৫), সাগর মীর (২৪), জিরাকাঠী গ্রামের মিলন ঘরামী (৩৫), মশাং গ্রামের শান্তা (৮)সহ ১০ জন এবং দুপুর একটার দিকে রহিমা বেগম (৬৫), অজ্ঞাত (৮) এক শিশু, বরিশাল শহরের কহিনুর বেগম (৪৫)সহ মোট ১৩ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।
স্বজনহারাদের আহাজারীতে সন্ধ্যা নদীর ঐ এলাকার সবার চোখেই পানি। উদ্ধারকৃত মৃতদেহগুলো নিকটাত্মীয়দের অনাপত্তিতে বিনা ময়না তদন্তে হস্তান্তর করা হয়েছে।
শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত নৌযানটি উদ্ধারের চেষ্টা অব্যাহত ছিল।
এদিকে উদ্ধারকারী জাহাজ ‘নির্ভীক’ রাত ১০টা নাগাদ গাবখান চ্যানেলের অর্ধেক পথ অতিক্রম করছিল। গভীর রাত ২টার দিকে দুর্ঘটনাস্থলে পৌঁছার কথা।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন