শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

কুষ্টিয়ায় সর্বোচ্চ শনাক্তের দিনে মৃত্যু ৪ শনাক্ত ১৫৬

কুষ্টিয়া থেকে স্টাফ রির্পোটার | প্রকাশের সময় : ১৮ জুন, ২০২১, ১১:২৬ এএম

কুষ্টিয়ায় গত ২৪ ঘণ্টায় ৩৯৯ নমুনা পরীক্ষা করে ১৫৬ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এ সময়ে চারজনের মৃত্যু হয়েছে। জেলায় এটিই এখন পর্যন্ত একদিনে সর্বোচ্চ শনাক্ত ও মৃত্যু। বৃহস্পতিবার (১৭ জুন) কুষ্টিয়ার সিভিল সার্জন অফিস এসব তথ্য নিশ্চিত করেছে।

নমুনা বিবেচনায় শনাক্তের হার ৪০ দশমিক ২০ শতাংশ। নতুন শনাক্ত ১৫৬ জনের মধ্যে কুষ্টিয়া সদরের ৭৭ জন, দৌলতপুরের ১৭ জন, কুমারখালীর ২৮ জন, ভেড়ামারার ১০ জন, মিরপুরের ১৯ জন ও খোকসার ৫ জন রয়েছে। মৃত চারজনের তিনজন সদরের এবং একজন ভেড়ামারার বাসিন্দা।

এ দিন জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ নতুন আরও ৪১৩ জনের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য সংশ্লিষ্ট ল্যাবে পাঠিয়েছে। এ পর্যন্ত জেলায় ৫৫ হাজার ৯২২ জনের নমুনা পরীক্ষার জন্য নেওয়া হয়েছে। নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট পাওয়া গেছে ৫৪ হাজার ৯৬৭ জনের।

বর্তমানে কুষ্টিয়ায় মোট করোনা রোগীর সংখ্যা ৯৭৬ জন। তাদের মধ্যে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন ৭৯ জন এবং হোম আইসোলেশনে আছেন ৮৯৭ জন।

করোনার বিস্তার রোধে গত ১১ জুন থেকে ১৮ জুন পর্যন্ত কুষ্টিয়া শহরের পৌর এলাকায় সাত দিনের কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করে গণবিজ্ঞপ্তি জারি করেন কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম। তাছাড়া মিরপুর উপজেলা প্রশাসন বৃহস্পতিবার থেকে সাত দিনের কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করেছেন মিরপুর পৌরসভা এলাকায়।

বিধিনিষেধের গণবিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছিল, কুষ্টিয়া ও মিরপুর পৌর এলাকায় কাঁচাবাজার, ওষুধের দোকান ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দোকান সকাল ৮টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত স্বাস্থ্যবিধি মেনে খোলা রাখা যাবে। এ ছাড়া সব ধরনের দোকান বন্ধ থাকবে। শহরে কোনো প্রকার যানবাহন চলাচল করতে পারবে না।
সরেজমিনে শহরের এনএস রোডের কিছু দোকানপাট বন্ধ ছাড়া আর কোথাও বিধিনিষেধ মানতে দেখা যাচ্ছে না। মানুষ চলাচল করায় যানবাহনের উপস্থিতিও চোখে পড়ার মতো। মিরপুর পৌরসভা এলাকারও একই চিত্র।

এ বিষয়ে কুষ্টিয়ার সিভিল সার্জন এইচ এম আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, প্রথম ও দ্বিতীয় ঢেউয়ের মধ্যে এটাই সর্বোচ্চ শনাক্ত ও মৃত্যু। সম্প্রতি কুষ্টিয়া পৌরসভায় সবচেয়ে বেশি রোগী শনাক্ত হয়েছে। কিন্তু এখানে ছয় দিন ধরে কঠোর বিধিনিষেধ চলছে। এরপরও কেন রোগীর সংখ্যা বাড়ছে, তা গবেষণা করা প্রয়োজন। সংক্রমণ ঠেকাতে কঠোর লকডাউনের মতো ব্যবস্থা নেওয়া দরকার। হু হু করে করোনা সংক্রমণ যে হারে বাড়ছে তাতে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া বেশ কঠিন হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডের চিকিৎসকরা জানান, করোনার শুরু থেকেই কুষ্টিয়া জেলায় শনাক্তের সংখ্যা শতকরা ২০ ভাগের ওপরে কখনো অতিক্রম করেনি। কিন্তু এখন আক্রান্তের সংখ্যা ৪০ ভাগের ওপরে উঠে গেছে।

এদিকে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে ভিড় লেগেই আছে। বেডের তুলনায় সেখানে প্রায় দ্বিগুণ রোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন। বেড না থাকায় রোগীদের বারান্দায় রাখতে হচ্ছে। রোগীর ভিড় বেড়ে যাওয়ায় ওয়ার্ডের বারান্দা, স্বাস্থ্যকর্মীদের বসার জায়গাটুকুও রোগীর শয্যায় রূপান্তরিত হয়েছে। এমন অবস্থায় বৃহস্পতিবার (১৭ জুন) থেকে জেনারেল হাসপাতালের ১০ নং সার্জিক্যাল ওয়ার্ডকে করোনা ওয়ার্ড হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে।

কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার তাপস কুমার সরকার বলেন, পরিস্থিতি মোকাবিলায় রোগীদের ভিড় সামাল দিতে নতুন একটি করোনা ওয়ার্ড চালু করা হয়েছে। আগে করোনা ওয়ার্ডে ৭৪টি শয্যা ছিল। সেখানে এখন ২৬টি শয্যা যুক্ত করা হয়েছে। বর্তমানে এ হাসপাতালে প্রায় ৭০ জন করোনা রোগী ভর্তি রয়েছে। করোনা রোগীর ভিড় সামাল দিতে অন্যান্য রোগে আক্রান্ত রোগীদের হাসপাতালে ভর্তি করাকে নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে।

এমতাবস্থায় কুষ্টিয়ায় কঠোর বিধি নিষেধ আরোপ করার দাবি জানিয়েছে বিশিষ্ট সুধীমহল।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন