অনিয়মিত ছাত্রদের নিয়ে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটি গঠন। নবগঠিত কমিটির অধিকাংশ শীর্ষস্থানীয় নেতৃবৃন্দের নেই বিশ^দ্যিালয়ের কোন শিক্ষাবর্ষে ভর্তি। কয়েকজনের সন্ধ্যাকালীন কোর্সে ভর্তি থাকলে একাধিক নেতার নেই ছাত্রত্ব। এছাড়া কলেজ শিক্ষক, ব্যবসায়ী, অনিয়মিত ছাত্র, ত্যাগীদের অবমূল্যায়ন করা, আওয়ামীলীগ পন্থিদের কমিটিতে রেখে নানা বির্তকের সৃষ্টি করেছেন। বুধবার (১৬ জুন) কমিটি ঘোষণার পর বির্তকিত কমিটি প্রত্যাখ্যান করে দ্রুত নতুন কমিটি গঠনের দাবি জানিয়েছে নতুন কমিটির একাংশ।
জানা যায়, বুধবার ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ফজলুর রহমান খোকন ও সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন শ্যামলের স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে কুবি শাখা ছাত্রদলের ৩১ সদস্যবিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়। লোকপ্রশাসন বিভাগের ২০০৭-০৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মোহাম্মাদ আব্দুল্লাহ আল মামুন কে আহ্বায়ক এবং ইংরেজি বিভাগের ২০০৮-০৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মোস্তাফিজুর রহমান শুভ কে সদস্য সচিব করে এ কমিটি গঠন করা হয়। মামুন বিগত কমিটির সিনিয়র সহ-সভাপতি ও শুভ সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন।
কমিটি ঘোষণার পর নতুন কমিটির সদস্য সচিব মোস্তাফিজুর রহমান অছাত্র, অনিয়মিত শিক্ষার্থী, আওয়ামীপন্থিদের কমিটিতে রাখা, ত্যাগীদের অবমূল্যায়ন করা, সিনিয়র-জুনিয়র সিকুয়েন্স না মানাসহ বিভিন্ন অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, নব কমিটির কয়েকজন সদস্য রয়েছে যাদের ছাত্রত্ব নেই। যারা ক্যাম্পাস থেকে বিছিন্ন। দীর্ঘদিন ছাত্রদলের কার্যক্রম থেকে তারা বাইরে রয়েছেন। অথচ তাদেরকে বড় পদে বসানো হয়েছে। আমরা এ কমিটি মানিনা। কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের প্রতি আহ্বান জানাবো বির্তকদের সরিয়ে নতুন কমিটি গঠন করতে হবে। ইতিমধ্যে আমরা কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ কে বিষয়টি জানিয়েছি। সমাধান না হলে আমরা একযোগে পদত্যাগ করব।
অভিযোগ রয়েছে কমিটির আহ্বায়ক আবদুল্লাহ আল মামুন ২০১৩ সাল থেকে ছাত্রদলের রাজনীতিতে নিস্ক্রীয়। যুগ্ম-আহ্বায়ক অহিদ উল্ল্যাহ অহিদের ছাত্রত্ব নেই এবং তিনি দীর্ঘদিন ঢাকায় অবস্থান করছেন। গিয়াস উদ্দিন আশিক আইকন কোচিং সেন্টারের পরিচালক এবং গোলাম রাব্বানী আশিক কুমিল্লা রেসিডেন্সিয়াল স্কুল এন্ড কলেজের প্রভাষক। এমদাদুল হক সাকিব আওয়ামীলীগ পরিবারের সন্তান এবং তার মা আওয়ামীলীগ থেকে মহিলা মেম্বার নির্বাচিত হন। সায়মন সরকার ছাত্রলীগের সক্রিয় কর্মী। আতিকুর রহমান ও ইউসুফ মিয়ার ছাত্রত্ব নেই।
অভিযোগের বিষয়ে যুগ্ম-আহ্বায়ক গিয়াস উদ্দিন আশিক বলেন, আইকন কোচিং কোন ব্যবসা নয়। আমি সেখানে পড়াই। আমি আগে পরিচালক হিসাবে থাকলেও বর্তমানে আমি সেভাবে যুক্ত নয়, আবার কাজিন চালায়।
নব কমিটির যুগ্ম-আহ্বায়ক আবুল বাশার ক্ষোভ প্রকাশ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বলেন, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল’র কমিটি প্রত্যাখান করলাম। সদ্য ঘোষিত ছাত্রদলের বিতর্কিত কমিটি ঘোষনা করায় তৃনমূলের ক্ষোভ। উক্ত কমিটিতে আনাড়ি,আওয়ামীপন্থী,অনিয়মিত এবং অছাত্রদের দিয়ে ঘোষণা করায় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল নেতাকর্মীরা হতাশ। অনতিবিলম্বে সদ্য ঘোষিত কমিটি বাদ দিয়ে নতুন কমিটি ঘোষণার অনুরোধ করছি। অন্যথায় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল পরিবারসহ সেচ্ছায় পদ থেকে পদত্যাগ করতে বাধ্য থাকিবো।
তবে কমিটির আহ্বায়ক আবদুল্লাহ আল মামুন এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, কমিটিতে যারা আছেন সবাই নিয়মিত শিক্ষার্থী। বিশ্ববিদ্যালয়ের যাদেরকে নিয়মিত না বলছেন সবাই সন্ধ্যাকালীন কোর্সে ভর্তি রয়েছেন। আমি সবকিছু ঝেড়েঁ ছাত্রদলকে নতুনভাবে সাজাতে চাই। সবাইকে নিয়ে কাজ করতে চাই। তবে যদি অছাত্র বা অনিয়মিত কেউ কমিটি থাকে তাহলে কেন্দ্রের সাথে কথা বলব।
এসব বিষয়ে কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন শ্যামল বলেন, আহ্বায়ক কমিটি স্বল্প সময়ের জন্য হয়। এটা বেশিদিন থাকবে না। আমরা সাংগঠনিকভাবে খোঁজ খবর নিয়েই কমিটি দিয়েছি। অনিয়মিত ছাত্র, ব্যবসায়ী ও নিষ্ক্রিয়দের প্রাধান্য দেয়ার অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ইভিনিং এর ছাত্রও বিশ^বিদ্যালয়ের ছাত্র। সংগঠনের দরজা কারও জন্য বন্ধ না। শহীদ জিয়ার আদর্শ ধারণ করে সবাই এ সংগঠনে আসতে পারবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন