শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

সরকার লুটেরা অর্থনীতি চালু করেছে

জাতীয় প্রেসক্লাবে মির্জা ফখরুল

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২০ জুন, ২০২১, ১২:০১ এএম

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার দেশে লুটেরা অর্থনীতি চালু করেছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, পঞ্চাশ বছরে আমাদের যত অর্জন ছিল তার সবকিছু এই সরকার শেষ করে দিয়েছে। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, অর্থনীতি সব শেষ করেছে। চালু করেছে লুটেরা অর্থনীতি। যেখানে সম্পূর্ণ লুট ছাড়া আর কিছু হয় না। ১০ হাজার কোটির টাকার একটা প্রজেক্ট হয়ে যায় ৪০-৫০ হাজার কোটি টাকা এবং এই ৪০/৫০ হাজার কোটি টাকা লুট হয়ে যায়। অন্যদিকে সুইজারল্যান্ডে বাংলাদেশীদের একাউন্টস বাড়ছে। কানাডা, মালয়েশিয়ায় সেকেন্ড হোম তৈরি হচ্ছে। কাদের এসব?

গতকাল শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাদা দলের আয়োজনে ‘শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান: ইতিহাসের ধ্রুব তারা’ গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের দেশ রক্ষায় এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, সরকার গোয়েবলসীয় কায়দায় মিথ্যাচার প্রচারণা করছে, ইতিহাসকে বিকৃত করছে। আপনারা হচ্ছেন সব চাইতে সচেতন শ্রেণির পেশাজীবী। আপনারা আপনাদের দায়িত্ব পালন করবেন, গোটা জাতিকে, ভবিষ্যত বংশধরদের এবং লাখো সৈনিক তৈরি করতে হবে। আসুন আমরা সবাই মিলে একসাথে কাজ করে এই বড় সংকট থেকে কাটিয়ে উঠি, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করি, গণতন্ত্রকে মুক্ত করি এবং তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনি।

শিক্ষকদের দলীয় রাজনীতিতে লীন হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদের দর্শনে যারা বিশ্বাস করেন তাদের সম্মিলিত একটা সংগঠন সাদা দল। একেবারে দলীয় সংগঠনের পরিণত হওয়াটা বোধহয় খুব একটা ভালো হবে না। দলের জন্য হবে না, নিজেদের জন্য হবে না, রাজনীতির জন্যও হবে না। আপনারা আমাদেরকে পরামর্শ দেন, বুদ্ধি দেন যে, এভাবে আপনারা কাজ করবেন। আমরা সেইভাবে কাজ করব।

মির্জা ফখরুল বলেন, আমাদের দুর্ভাগ্য যে আমাদের দেশ এখন পুরোপুরি বিভক্ত হয়ে গেছে। আওয়ামী লীগ-বিএনপির এই দুইভাবে বিভক্ত হয়ে গেছে। তার ফলে কী হয়েছে? একজন মানুষ আপনি ধরেন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কথাগুলো বলছেন সেটাও অনেকের কাছে গ্রহণযোগ্য হয় না সে হয়ত বিএনপি অথবা আওয়ামী লীগের লোক। এই বিষয়গুলো থেকে আমাদের বেরিয়ে আসা দরকার।

জিয়াউর রহমানকে একজন বিপ্লবী নেতা হিসেবে আখ্যা দিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সময়ের ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি ফখরুল বলেন, আমরা একসময় শপথ নিয়েছিলাম ছাত্রজীবনে। সমাজ পাল্টিয়ে দেবো, বিপ্লব করবো। কিন্তু বিপ্লবটা করেছেন জিয়াউর রহমান। এতো অল্প সময়ের মধ্যে সব কিছু পাল্টিয়ে দিয়েছেন, মানুষের চিন্তাগুলোকে পাল্টিয়ে দিয়েছেন। গণতন্ত্র ছাড়া অর্থনীতি টেকসই হবে না, খালকাটা কর্মসূচিতে হাজার হাজার মানুষকে নামিয়ে দিয়েছেন, প্রশাসন ও অর্থনীতি পরিচালনার জন্য গ্রাম সরকার তৈরি করেছেন-এই বিষয়গুলোর এসেছে জিয়াউর রহমানের মৌলিক চিন্তা, স্বকীয় চিন্তা থেকে।জিয়াউর রহমান আমাদের নিজস্ব পরিচিতি বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ দিয়েছেন।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর থেকেই অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে ক্যাম্পেইন শুরু করেছে যে, জিয়াউর রহমান মুক্তিযুদ্ধের ঘোষক ছিলেন না, উনি মুক্তিযুদ্ধ করেননি, পাকিস্তানের অনুচর ছিলেন। তাকে খলনায়কে তারা পরিণত করতে চায়। শিশুদের শেখানো হয় জিয়াউর রহমান নাকী একজন কিলার, শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যার সঙ্গে জড়িত ছিলেন। একথা প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে তাদের নেতা-কর্মী সবাই একই কথা বলে। ওটাকে আমাাদের কাউন্টার করতে হবে, সত্য তুলে ধরতে হবে। কেনো তারা মিথ্যা বলছে বুঝতে হবে।
গ্রন্থে জিয়াউর রহমানের নিজের লেখা তিন প্রবন্ধ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৪ জন শিক্ষকের লেখা স্থান পেয়েছে। সংকলিত গ্রন্থটির প্রকাশক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাদা দল। এর প্রচ্ছদ এঁকেছেন মো. ইসরাফিল প্রামানিক রতন। ২‘শ পৃষ্ঠার গ্রন্থের মূল্য ধরা হয়েছে ৪‘শ টাকা।

প্রকাশিত গ্রন্থের সম্পাদনা পরিষদের আহবায়ক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিভাগের প্রফেসর এবিএম ওবায়দুল ইসলামের সভাপতিত্বে এবং সাদা দলের আহবায়ক প্রফেসর মো. লুৎফর রহমানের পরিচালনায় আলোচনায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি প্রফেসর আনোয়ার উল্লাহ চৌধুরী, অর্থনীতিবিদ প্রফেসর মাহবুব উল্লাহ, গ্রন্থের সম্পাদনা পরিষদের নির্বাহী সম্পাদক প্রফেসর ছিদ্দিকুর রহমান খান ও সদস্য প্রফেসর ড. মোর্শেদ হাসান খান বক্তব্য রাখেন।

উপস্থিত ছিলেন- বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সুকোমল বড়ুয়া, আবুল কালাম সরকার, এমতাজ হোসেন, শামসুল আলম, মোজাদ্দেদী আল ফেসানী, শহিদুল ইসলাম, রফিকুল ইসলাম, মিজানুর রহমান, তোজাম্মেল হোসেন, হাসানুজ্জামান স্বপন, মতিউর রহমান, দেবাশীষ পাল, আল আবদুল করীম, কামরুল হাসান, মঞ্জুর এলাহী, নুরুল ইসলাম, ছবিরুল ইসলাম হাওলাদার, আতাউর রহমান, বিএনপির ব্যারিস্টার নাসির উদ্দিন অসীম, হেলেন জেরিন খান, শামীমুর রহমান শামীম, সেলিমুজ্জামান সেলিম, কাদের গনি চৌধুরী, আলবার্ট পি কস্টা, খালেদ হোসেইন ফাহিন, মাহবুব আলম, আবদুর রহিম, কাজী মনিরুজ্জামান প্রমূখ।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন