বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে দুষলেন সেতু সচিব

ঢাকা-গাজীপুর মহাসড়কে জনদুর্ভোগ

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২১ জুন, ২০২১, ১২:০২ এএম

যানজট নিরসনে গাজীপুরের জয়দেবপুর থেকে রাজধানীর বিমানবন্দর পর্যন্ত নির্মাণ করা হচ্ছে বিশেষায়িত উড়াল সড়ক। দ্রুত গাড়ি চলাচলের ব্যবস্থা করার এ প্রকল্পের নাম বাস র‌্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি)। ৯ বছর ধরে চলছে এর নির্মাণকাজ। যন্ত্রণা কমানোর প্রকল্পটির নির্মাণকাজে দায়িত্বহীনতা এখন মানুষের দুর্ভোগ-যন্ত্রণা বহু গুণ বাড়িয়ে দিয়েছে। বর্ষার শুরুতেই সেই যন্ত্রণা মাত্রা ছাড়িয়ে গেছে। আগে থেকেই সড়কে খানাখন্দ ছিল, এখন তা আরও বেড়েছে। বৃষ্টি হলেই সড়ক ডুবছে। ১২ কিলোমিটার পথ যেতে লাগছে ১০ ঘণ্টা। সেতু বিভাগের সচিব মো. আবু বকর ছিদ্দীক গতকাল শনিবার মহাসড়কটি পরিদর্শন করেছেন। সেখানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আর্থিক সংকটে থাকার কারণে বিআরটি প্রকল্পের কাজ ধীরগতিতে হচ্ছে। যে কারণে মহাসড়কে চলাচলরতদের দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে। দুপুরে মহাসড়কের চেরাগআলী এলাকায় খানাখন্দে ভরা মহাসড়ক পরিদর্শন করে এমন দাবি করেন সেতু বিভাগের সচিব। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে সচিব বলেন, আগামী তিনদিনের মধ্যে মহাসড়ক যানবাহন চলাচলের উপযোগী করা হবে। এজন্য প্রয়োজনীয় লোকবল বাড়ানো হবে। এ বিষয়ে ঠিকাদারদের বিস্তারিত নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এর কিছুক্ষণ পর সড়ক বিভাগের সচিব মো. নজরুল ইসলামও মহাসড়ক পরিদর্শন করেন।

ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে বৃষ্টি আর বিআরটি প্রকল্পের খামখেয়ালী কাজের কারণে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ দুর্ভোগে পোহাচ্ছে। এ বিষয় নিয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রচারের পর বিআরটি প্রকল্পের কাজ পরিদর্শন করতে যান সড়ক ও সেতু বিভাগের দুই সচিব। এসময় তাদের সঙ্গে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র জাহাঙ্গীর আলম উপস্থিত ছিলেন। জানা গেছে, সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর (সওজ), সেতু কর্তৃপক্ষ আর স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর মিলে বিআরটি প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে। চার বছর মেয়াদি এ প্রকল্পের সময় দ্বিগুণেরও বেশি বেড়েছে। ব্যয়ও বেড়েছে দ্বিগুণ। ৯ বছরে কাজ হয়েছে অর্ধেক। বাকি কাজ এক বছরে (আগামী জুন) শেষ করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। সড়ক বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা জানান, বিআরটি বাস্তবায়নের করুণ দশা এবং তাতে চরম জনদুর্ভোগ তৈরি হওয়ায় মন্ত্রী ও সচিব বিব্রত। ধীরগতির কাজ ও ভোগান্তির জন্য চীনা ঠিকাদারদের দায়ী করছেন কর্মকর্তারা। তারা বলেন, বারবার তাগিদ দেওয়ার পরও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো দুর্ভোগ এড়াতে নির্মাণ এলাকার রাস্তা নিয়মিত মেরামতের মাধ্যমে সচল রাখার কাজ করেনি। আগে থেকেই অবস্থা খারাপ ছিল। বর্ষায় পরিস্থিতি অসহনীয় হয়েছে। স্থানীয় সংসদ সদস্য ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল একই অভিযোগ করেছেন। সড়কের ভোগান্তি এড়াতে জয়দেবপুর-ঢাকা রুটে বিশেষ ট্রেন চালু করা হচ্ছে বলে তিনি গত বুধবার জানান। আজ থেকে এই ট্রেন চালু হওয়ার কথা।

প্রকল্প সংশ্নিষ্টরা জানান, জয়দেবপুর চৌরাস্তা থেকে টঙ্গী পর্যন্ত মহাসড়কের দুই পাশে ১২ কিলোমিটার করে মোট ২৪ কিলোমিটার ‹হাই ক্যাপাসিটি ড্রেন› নির্মাণ করা হয়েছে। এতে ব্যয় হয়েছে শতকোটি টাকা। সড়ক পরিবহন বিভাগের তথ্যানুযায়ী, ৩১ মে পর্যন্ত ড্রেনের নির্মাণকাজ ৯৭ ভাগ শেষ। ঘণ্টায় ৫০ থেকে ৬০ মিলিমিটার বৃষ্টি হলেও পানি নিস্কাশনের ক্ষমতা থাকার কথা ড্রেনটির। কিন্তু গত ১ জুন মৌসুমের প্রথম বৃষ্টিতে সেখানে পানিবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। বৃষ্টির পানি ড্রেন দিয়ে মোগরখাল, হায়দারাবাদ খাল, কামারজুড়ি খাল হয়ে তুরাগ নদীতে মেশার কথা; কিন্তু বাস্তবে মহাসড়কে হাঁটুপানি জমে যাচ্ছে। নতুন নির্মিত ড্রেনকে ত্রুটিপূর্ণ বলছেন গাজীপুর সিটি মেয়র মো. জাহাঙ্গীর আলম। তিনি বলেন, যতটা গভীর গর্তে পাইপ স্থাপন উচিত ছিল, তা হয়নি। পাইপের ব্যাসও মাত্র সাড়ে তিন ফুট। এই ব্যাসের পাইপ দিয়ে এত পানি যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। ফলে পানি উপচে সড়কে চলে আসছে। ভুল নকশায় হাই ক্যাপাসিটি ড্রেন নির্মাণ করে ইঞ্জিনিয়ার ও কর্মকর্তারা টাকা আত্মসাৎ করেছেন বলে তিনি অভিযোগ করেন। বিআরটির সওজ অংশের প্রকল্প পরিচালক এএসএম ইলিয়াস শাহ দাবি করেছেন, শুধু ১ জুনই পানিবদ্ধতা হয়েছিল। ওই দিন পানি জমার কারণ ছিল, সড়ক থেকে ড্রেনে পানি নামতে ম্যানহোল ঢাকনার মতো যে ‹গ্যাসকিট› ছিল, সেগুলো ময়লায় পূর্ণ ছিল। তাই পানি নামতে পারেনি। এখন আর পানি জমছে না। সড়কে খানাখন্দ রয়েছে। সেগুলো নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার আগে ঠিক করা কঠিন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (11)
Masud Rahaman ২০ জুন, ২০২১, ৩:৩৫ এএম says : 0
টঙ্গী থেকে গাজীপুর যাওয়ার পথে পুরা রাস্তা টা ই একটা ভোগান্তির নাম। এই রাস্তা কখনোই ঠিক দেখি নাই। এতটুকু পথ পাড়ি দিতে ২-৪ ঘন্টা লাগে। সব সময়ই রাস্তার কিছু জায়গায় টুকটাক কাজ চলে। কিন্তু কোন দিন কাজ ও শেষ হয় না, রাস্তা ও ঠিক হয় না। মনে হয় কোন এক অদৃশ্য শক্তি এই রাস্তা কোন দিন ঠিক হইতে দিবে না। তারা এই রাস্তার কাজ করেই সারা জীবন আরামে কাটিয়ে দিবে। এই ভোগান্তির কারনে গাজীপুর থেকে ময়মনসিংহের যে অসম্ভব ভালো একটা রাস্তা সরকার করেছে, তার উপকারিতা ম্লান হয়ে যায়। সরকার এর কাছে আকুল আবেদন, এই ভোগান্তির সমাধান করুন।
Total Reply(0)
আব্দুল্লাহ আল মাহদী ২০ জুন, ২০২১, ৩:৩৬ এএম says : 0
২০০৮ থেকে ঢাকায় এই সময়ের মধ্যে কোনদিন গাজীপুরের যন্ত্রণা থেকে মুক্তি মিলে নি!!!
Total Reply(0)
Sky Rehsif Blue Fisher ২০ জুন, ২০২১, ৩:৩৬ এএম says : 0
যানজট এর জন্য বাংলাদেশের মধ্যে প্রথম স্থানে থাকবে জয়দেবপুর চৌরাস্তা-এয়ারর্পোট রোড।
Total Reply(0)
Mohammad Shahidul Islam ২০ জুন, ২০২১, ৩:৩৭ এএম says : 0
উন্নয়নের নামে গাজীপুর বাসী ২০০৮ সাল থেকে রাস্তার এই অসহ্য যন্ত্রণা ভোগ করছে, হরিলুট করার জন্য কাজের মেয়াদ ও খরচ বাড়ানো হচ্ছে, কবে মুক্তি পাবো আমরা।
Total Reply(0)
Moazzem Hossain Hira ২০ জুন, ২০২১, ৩:৩৭ এএম says : 0
উন্নয়ন সবাই চাই তবে জীবন যাত্রার অবমূল্যায়ন করে নয়।।। সাধারণ জনগণের চলাচল স্বাভাবিক রেখে উন্নয়ন হোক বছর জুড়ে।।
Total Reply(0)
Gulam Nowmi Naium Khan Prince ২০ জুন, ২০২১, ৩:৩৭ এএম says : 0
বিমানবন্দর থেকে গাজীপুর চৌরাস্তা যেতে যত টুকু সময় লাগে সেই সময় নিয়ে বিমানবন্দর থেকে মালয়েশিয়া চলে যাওয়া যায়। পার্থক্য টা শুধুই স্থল পথ আর আকাশ পথের।
Total Reply(0)
Bill AL Hossain Alif ২০ জুন, ২০২১, ৩:৩৭ এএম says : 0
ঢাকার বাহিরে ৪ লেন সড়কের চেয়ে ঢাকার আশেপাশে রাস্তা গুলো ৪ লেন করা বেশি জরুরী। দ্রুত টঙ্গী থেকে পূবাইল ঢাকা বাইপাস পর্যন্ত ৪ লেনের সড়ক প্রয়োজন। নয়তো পরিস্থিতি খারাপের দিকে যাবে।
Total Reply(0)
Mozibur Rahman ২০ জুন, ২০২১, ৩:৩৮ এএম says : 0
সাত ঘণ্টায় ঢাকাথেকে গাজীপুর আসছি। এই রাস্তাটার কাজ কি কেয়ামতের আগে শেষ হবেনা।
Total Reply(0)
Nahid Iqbal ২০ জুন, ২০২১, ৩:৩৮ এএম says : 0
টংগি গাজিপুরে আপনি সড়কের কোন উন্নয়ন না পেলেও রাজনৈতিক ব্যাক্তিদের পোস্টারএ আপনার নজর ঠিক ই কাড়বে।
Total Reply(0)
Arafat ২০ জুন, ২০২১, ৮:১০ এএম says : 0
দোষ কার সেটা বলার জন্য এত সুযোগ সুবিধা আর বিশাল অংকের বেতন দিয়ে আপনাকে রাখা হয়েছে। কাজ ঠিক মত করাতে না পারলে পদত্যাগ করুন।
Total Reply(0)
Mominul+Hoque ২০ জুন, ২০২১, ১০:২২ এএম says : 0
সব চোর! চোরে চোরে মাসতুতোভাই! তা না হলে একটি প্রকল্প সম্পন্ন করতে হাজার হাজার কোটি টাকা আর বছরের পর বছর কেন লাগবে। নির্দিষ্ট বাজেট, আর নির্দিষ্ট সময় দিয়ে দিলেইতো হয় ভালো মানের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানগুলোর কাজের মান অনুযায়ী গ্রেডিং করার খুবই প্রয়োজন। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কোন ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কাজ সম্পাদন করতে না পারলে এতে সরকার (জনগণের) যে ক্ষতি হবে তার ডেমারেজের ব্যবস্থা করতে হবে। কিন্তু সবইতো চোর! ..................... খা-সব লুটে-পুটে খা!!!
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন