বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

অভ্যন্তরীণ

বরগুনায় স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষিত

৯০ শতাংশ মানুষ মাস্ক পরেন না

জাহাঙ্গীর কবির মৃধা, বরগুনা থেকে | প্রকাশের সময় : ২১ জুন, ২০২১, ১২:০১ এএম

বরগুনায় মহামারি করোনাভাইরাস সংক্রমন রোধে সরকার কর্তৃক লকডাউনেও হাট-বাজার, গ্রাম-গঞ্জে কোথাও মুখে মাস্ক ব্যবহারের বালাই নেই। মুষ্টিমেয় সচেতন মানুষ ব্যতিত এর ব্যবহার শুধুমাত্র অফিস-আদালতেই সীমাবদ্ধ রয়েছে। সড়ক-মহাসড়ক, হাট-বাজার, পাড়া-মহল্লা, মার্কেট-চিকিৎসাকেন্দ্র সর্বত্রই ৯০% মানুষ মাস্ক পড়েন না। করোনার প্রথমদিকে প্রতিটি সরকারি-বেসরকারি দপ্তর, প্রতিষ্ঠান, বাসাবাড়ির মূল ফটকে সাবান, হ্যান্ড স্যানিটাইজারসহ হাত ধোয়ার ব্যবস্থা চালু করলেও এখন সে ব্যবস্থা উল্লেখ করার মতো চোখে পড়ে না। অনেক সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের হাত ধোয়ার স্থানটি অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে আছে। এটাকে সচল রাখার ব্যাপারে নেই কারো উদ্যোগ। সর্বত্র শিথিলতার কারণে উপেক্ষিত হচ্ছে স্বাস্থ্যবিধি।
করোনার বিস্তার রোধে জেলার প্রতিটি উপজেলায় স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষিত। স্বাস্থ্যবিধি না মেনে সকাল থেকে বিভিন্ন বয়সের নারী-পুরুষ ও শিশুরা শহর ও গ্রাম-গঞ্জের হাট-বাজারসহ বিপনীবিতানগুলোতে কেনাকাটা করছে।
বেলা যত বাড়ে তত ক্রেতাদের ভিড়ও বাড়তে থাকে। স্বাস্থ্যবিধি না মেনে ঠাসাঠাসি করেই একসঙ্গে একাধিক ক্রেতা কেনাকাটা করছেন। কোথাও স্বাস্থ্যবিধি মানার নেই কোন বাধ্যবাধকতা। কোথাও নেই জীবাণুনাশক স্প্রে। নেই হাত ধোয়ার কোনো ব্যবস্থা। গুটি কয়েক সচেতন মানুষের মুখ কাপড় দিয়ে ঢাকা থাকলেও ৯০% ক্রেতা-বিক্রেতা মুখে মাস্ক নেই। ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা, মাহেন্দ্রা, ইজিবাইকসহ দূরপাল্লার সকল প্রকার যাত্রীবাহী যানবাহনে ইচ্ছামতো যাত্রী পরিবহন করছে। ভাড়া বেশি নিলেও কোথাও স্বাস্থ্যবিধি মানার কোন বালাই নেই।
মাহেন্দ্রা ড্রাইভার কামাল বলেন, আমরা আগের মতই ১০ জন যাত্রী নিয়ে গাড়ি চালাই। তবে সকল যাত্রীকে মাস্ক পড়িয়ে নির্ধারিত গন্তব্যে আসা যাওয়া করি। ব্যাংকসহ বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি দপ্তরে ‘নো মাস্ক, নো সার্ভিস’ এমন লেখাকে উপেক্ষা করেই আসছেন দপ্তরে থাকা কর্তাব্যক্তি, কর্মচারী ও সেবা গ্রহীতারা। কোথাও নেই সামাজিক দূরত্বের বালাই। জেলার প্রতিটি মসজিদে ৯৫% মুসল্লি স্বাস্থ্যবিধি না মেনে মুখে মাস্কবিহীন নামাজ আদায় করছেন।
সরেজমিনে বরগুনা ও আমতলী পৌর শহরের বাসস্ট্যান্ড ও মাছ-তরকারি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, অভ্যন্তরীণ ও দূরপাল্লার রুটে চলাচলকারী যাত্রীবাহী একাধিক পরিবহন বাসগুলো দাঁড়িয়ে আছে। চালক, হেলপার ও যাত্রী কারো মুখে নেই মাস্ক। একাধিক সিটে দু’জন করে যাত্রী বসে আছেন। মাছ ও তরকারি বাজারের অবস্থা আরো ভয়াবহ, এখানে ক্রেতা-বিক্রেতা কারো মুখেই মাস্ক নেই। স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা করেই মানুষ শরীরের সাথে শরীর মিশিয়ে জঠলা তৈরি করেই কেনাকাটা করছেন।
এ বিষয়ে একাধিক মাছ বিক্রেতা ও ক্রেতাদের জিজ্ঞেস করলে তারা জানায়, ‘মোগো দেশে কোন করোনা নাই, সরকার শুধু শুধু লকডাউন দেয়। মাস্ক পড়লে মোগো শ্বাস-প্রশ্বাস গরম হইয়া যায়, হ্যার লইগ্যা মুহে মাস্ক পড়িনা। আর আল্লাহ মোগোমতো গরীবেরে করোনা দেয় না।’
আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আবদুল মুনয়েম সাদ বলেন, করোনাভাইরাস সংক্রমন থেকে বাঁচতে হলে অবশ্যই স্বাস্থ্যবিধি মেনে মুখে মাস্ক পড়ে পরিস্কার-পরিচ্ছন্নভাবে চলতে হবে।
লকডাউন চলমান থাকলেও জেলার সর্বত্র মানুষকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা, মুখে মাস্ক পড়া এবং লকডাউন মেনে চলার ব্যাপারে প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো করণীয় আছে কিনা তাও বোঝা যাচ্ছেনা বলে মন্তব্য করছেন একাধিক মানুষ।
এ ব্যাপারে বরগুনা জেলা প্রশাসক হাবিবুর রহমান দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, জেলা প্রশাসন স্বাস্থ্যবিধির বিষয়ে প্রতিনিয়ত মানুষকে সচেতন করে যাচ্ছে। মুখে মাস্ক পড়তে ও স্বাস্থ্যবিধি মানাতে নিয়মিত মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হচ্ছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (4)
Md Abdul Kaiyum Molla ২১ জুন, ২০২১, ৫:২৯ এএম says : 0
পাশের দেশ ভারতে তাণ্ডব চলছে,,,আমাদের দেশেও বিভিন্ন জায়গায় ভয়াবহ অবস্থা বিরাজ করছে...তারপরেও যদি েএরা সচেতন না হয়!!!
Total Reply(0)
নূরুজ্জামান নূর ২১ জুন, ২০২১, ৫:৩০ এএম says : 0
বাঙালির অবহেলায় দুর্ভোগ ডেকে আনে। কবে এরা সচেতন হবে।
Total Reply(0)
হিমালয় হিমু ২১ জুন, ২০২১, ৫:৩০ এএম says : 0
করোনা আবারও যেভাবে বাড়ছে সবার স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা জরুরি।
Total Reply(0)
নূরুজ্জামান নূর ২১ জুন, ২০২১, ৫:৩১ এএম says : 0
করোনাকে এত অবহেলা করা উচিত নয়, আল্লাহ উদাসানী মানুষকে পছন্দ করেন না।
Total Reply(0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন