শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

আমে খুলবে অর্থনীতির দিগন্ত

সউদী খেজুরের মতো বিশ্বে বাংলাদেশের আম রাজত্ব করবে সউদী আরব, কাতার, কুয়েত, দুবাই, আরব আমিরাত, আবুধাবি, বাহরাইন, ওমান, জার্মানি, ইতালি, যুক্তরাজ্যে আমের জুস রফতানি হচ্ছে : রাষ্ট্রী

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৪ জুন, ২০২১, ১২:০২ এএম

সোনালী আঁশ পাটের সোনালী যুগ নেই। চিংড়ি রফতানিতেও ধরা খেয়েছি। তবে গার্মেন্টস, টেক্সটাইল পণ্য, ঔষুধ রফতানিতে সাফল্য ধরে রেখেছে বাংলাদেশ। কিন্তু সবকিছুকেই ছাড়িয়ে যেতে পারে আম বাণিজ্য। বিদেশে শুধু আম এবং আমের জুস রফতানি করে পাল্টে ফেলা যেতে পারে দেশের অর্থনীতির চাকা। সউদী আরবের খেজুর যেমন গোটা বিশ্বে রাজত্ব করছে; বাংলাদেশের আম বিশ্ববাজারে তেমন যায়গা করে নিতে পারে। শুধু তাই নয় দেশের মধ্যেও আম নিয়ে চলছে হাজার হাজার মানুষের কর্মযজ্ঞ। আম চাষী, পাইকার, ব্যাপারী, হাটের ইজারাদার, আড়তদার, ট্রাকের মালিক, ড্রাইভার, কুরিয়ার সার্ভিস, ট্রেনের কুলি সবাই মহাব্যস্ত। এমনকি আম রাখার টুকরি, চটের বস্তা তৈরি ও বিক্রেতারা আম নিয়েই এখন মহাব্যস্ত সময় পাড় করছেন।
বাংলাদেশে উত্তরের জেলাগুলোতে কৃষক পর্যায়ে যে আমের উৎপাদন হয়; বাণিজ্যিক পর্যায়ে সেটার উৎপাদন বাড়িয়ে পরিকল্পিত ভাবে রফতানি এবং আমের জুসসহ আমজাত পণ্য রফতানি করে প্রতিবছর হাজার হাজার কোটি টাকা রফতানি খাতে আয় করা যেতে পারে। এ জন্য প্রয়োজন শুধু রাষ্ট্রুীয় পরিকল্পনা ও পৃষ্ঠপোষকতা। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, উত্তরাঞ্চলের জেলাগুলোতে যে পরিমাণ আমের ফলন হয়; তা সচারুভাবে রক্ষণাবেক্ষণ এবং প্রক্রিয়াজাত করা গেলে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে নতুন দিগন্তই শুধু খুলবে না; পাশাপাশি সারাবিশ্বের আমের দেশ হিসেবে পরিচিতি পাবে।
পেশাগত কারণে কয়েক মাস আগে রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নওগাঁ, নাটোর, বগুড়া, রংপুর ঘুরে দেখেছি প্রচুর আমের বাগান। এসব জেলার অসংখ্য গ্রামে ধানের জমিতে আমের বাগান করা হয়েছে। বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে আমের বাগানে ছোট-বড় সুবজ গাছ; দৃশ্য দেখলে চোখ জুড়িয়ে যায়। ধানের দাম না পাওয়ায় কৃষকরা আমের দিকে ঝুকে পড়েছেন। অনেকেই বাণিজ্যিক ভাবে আম উৎপাদন করে বিক্রি করছেন। কিন্তু রক্ষণাবেক্ষণ, প্রক্রিয়াজাতকরণ এবং সুষ্ঠু বিতরণের অভাবে ন্যায্য মূল্য পাচ্ছেন না। কেউ কেউ নিজেদের উদ্যোগের আম বিদেশে রফতানি করে কিছু বৈদেশিক মুদ্র অর্জন করছেন। ওই সব জেলার আমচাষী ও পাইকারদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় আমের রক্ষণাবেক্ষণ, বহুমুখি ব্যবহার এমনকি শুধু জুস করে বিদেশে পাঠানো গেলে কয়েকশ কোটি টাকার বৈদেশিক মূদ্রা অর্জন করা সম্ভব।
কয়েক মাস আগেও রাজশাহী, চাপাইনবাবগঞ্জ, নওগাঁ, রংপুর জেলায় মৌসুমি ফল আমকে কেন্দ্র করে কৃষক, পাইকার, ব্যবসায়ী ও শ্রমিকদের মধ্যে বেড়ে গেছে কর্মচঞ্চলতা। আমবাগান কেনাবেচা, বাগান লিজ দেওয়া, বাগান পরিচর্যা, বাগান পাহারা দেওয়া, আম বহন করা, আড়তদারি, ঝরা আমের কারবার, আমের ঝুড়ি তৈরি ও প্যাকিং করা ও অস্থায়ী হোটেল ব্যবসা। শুধু পুরুষরাই নয়, নারী থেকে শিশুরাও তখন আম কেন্দ্রিক অর্থনীতির সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছে। কৃষকরা জানান, আম শুধু ঢাকায় পাঠানো নয়; কেটে শুকিয়ে তৈরি করা আমচুর কিংবা আমস্বত্বও বিক্রি করা হচ্ছে। দেশে আমের জুস তৈরি করছে কিছু শিল্প প্রতিষ্ঠান। এসব শিল্প প্রতিষ্ঠান প্রতিবছরই উৎপাদিত আমের ১৫ থেকে ২০ শতাংশ সংগ্রহ করে ক্রমেই দেশীয় বাজারকে শক্তিশালী করে তুলছে। তারা দেশের চাহিদা মিটিয়ে সউদী আরব, কাতার, কুয়েত, দুবাই, আরব আমিরাত, আবুধাবি, বাইরাইন, ওমান, জার্মানি, ইতালি, যুক্তরাজ্যের বাজারে জুস রপ্তানি করছে। আম এখন বৈদেশিক মুদ্রা উপার্জনেও সহায়ক ভূমিকা রাখছে। আম উৎপাদনে চাষিদের মনোযোগ বাড়লেও পরিবহন, প্রক্রিয়াকরণ ও হিমাগারের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না থাকায় প্রতিবছর উৎপাদিত আমের ৩৩ শতাংশ নষ্ট হয়ে যায়।
রাজশাহী বিভাগের বিভিন্ন জেলায় গোপালভোগ, হিমসাগর, ল্যাংড়া, ফজলি, চোষা, ক্ষীরসাপাতি, আম্রপালিসহ বিভিন্ন আম চাষ হচ্ছে। রংপুরে চাষ হচ্ছে হাঁড়িভাঙা নামের উন্নত জাতের সুস্বাদু আম। দেশের ভোক্তা চাহিদা মিটিয়ে এখন ব্যাক্তি পর্যায়ে এসব আম বিদেশে রফতানি হচ্ছে। বিশেষ করে ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ বিভিন্ন দেশে প্রতি বছর এক হাজার টনের বেশি আম রফতানি হয়। উন্নত ওই সব দেশে ভারত-পাকিস্তান-মিয়ানমারের আমের তুলনায় আমাদের দেশের আমের চাহিদা অনেক বেশি। বিদেশে বাংলাদেশের আমের বিপুল চাহিদার অন্যতম প্রধান কারণ বাংলাদেশের আম অন্য দেশের আমের চেয়ে অনেক বেশি সুস্বাদু। প্রবাসী বাংলাদেশিদের পাশাপাশি বিদেশিদের কাছেও বাংলাদেশের আমের চাহিদা বাড়ছে। আম নিয়ে রাজশাহী বিভাগের বেশ কয়েকজন ব্যবসায়ী ও বিশেষজ্ঞের সঙ্গে কথা বললে তারা জানান, আম শুধু এখন আর একটি ফল নয়। দেশের একটি অন্যতম প্রধান অর্থকরী ফসল হয়ে গেছে। ক্রমান্বয়ে আমের চাষ ও উৎপাদন বৃদ্ধি পাওয়ায় এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট মানুষজন অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হচ্ছেন। তবে আম থেকে বৈদেশিক মুদ্রা আনতে হলে নিতে হবে কিছু কার্যকরী উদ্যোগ। দেশের চাহিদা মিটিয়ে রফতানির দিকে আরো মনোযোগ দিতে হবে। বাড়াতে হবে নিবন্ধিত আম রফতানিকারকের সংখ্যা। উৎপাদন থেকে শুরু করে রফতানি প্রক্রিয়া পর্যন্ত যদি রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে যথাযথ ও কার্যকরী উদ্যোগ নেওয়া যায়, সম্ভব হয়, তাহলে উন্নত জাতের সুস্বাদু আম বিদেশে রফতানির মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা উপার্জনের নতুন দুয়ার খুলে যাবে।
আমচাষীরা বলছেন, সউদী আরবের মাটি যেমন খেজুর উৎপাদানের উপযোগী; তেমিন বাংলাদেশের চাঁপাইনবাবগঞ্জ, রাজশাহী, নওগাঁ, নাটোর, রংপুরের মাটি আমের জন্য বিখ্যাত। পরিসংখ্যান থেকে জানা যায়, এই চার জেলায় ২০১৫-১৬ অর্থবছরে আমের উৎপাদন হয় লাখ ৩৮ হাজার ৮৮৮ মেট্রিন টন। এ ছাড়াও রংপুরে হাড়িভাঙ্গা আম উৎপাদন হয়। সুত্র মতে, দেশে প্রতিবছর প্রায় এক মিলিয়ন (১০ লাখ টন) আম উৎপাদন হয়। ২০১৬ সালে দেশ থেকে ৩০০ টন আম রপ্তানি হয়েছে। আম উৎপাদনে দেশে নীরব বিপ্লব ঘটছে। উৎপাদন বৃদ্ধিতে নিত্যনতুন প্রযুক্তির প্রভাবে এমন বিপ্লব ঘটেছে। অথচ রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে বিদেশে রফতানির ব্যাপারে পরিকল্পনার অভাবে প্রতি মৌসুমেই বিপুল পরিমান আম নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
আম মিষ্টি দামে নয়: রাজশাহী ব্যুরো জানায়, আবহাওয়া অনুকুল থাকায় এবার আমের বাম্পার ফলন হয়েছে। মওসুমজুড়ে খরাভাব বিরাজ করায় আমের আকার প্রমান সাইজের না হলে স্বাদে মিষ্টতা পেয়েছে বেশি। ফলে এবারের আম হয়েছে আরো বেশি স্বাদের। এবার রাজশাহী অঞ্চলে রাজশাহী চাপাইনববগঞ্জ, নওগা, নাটোরে আমের আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল চুরাশী হাজার হেক্টর জমিতে সাড়ে ৮ লাখ মে:টন আম উৎপাদনের। যার গড় বাজার মূল্য ৮ হাজার কোটি টাকা। বাস্তবে আমের বাগানের পরিধি বেড়েছে। নতুন বাগান হয়েছে ফলন বেড়েছে। বিশেষ করে ধান উৎপাদনকারী এলাকা নওগাঁ জেলায়। কৃষি বিভাগর মতে গতবছর জেলায় ২লাখ ৭২ হাজার মে:টন আম উৎপাদন হয়েছিল। এবার সোয়া তিনলাখ মে:টন আম উৎপাদনের আশা করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে দু’হাজার কোটি টাকার বানিজ্য হয়েছে। সামনে আরো বিক্রি হবে। যার বাজার মূল্য দাড়াবে আড়াই হাজার কোটি টাকা। এমন কথাই জানান ব্যবসায়ীরা।
রাজশাহীতে আম উৎপাদন হয়েছে সোয়া দু’লাখ মে: টনের উপরে। চাপাইনবাবগঞ্জে আম উৎপাদন হয়েছে প্রায় পৌনে তিনলাখ মে:টন। নাটোরের প্রায় সত্তর হাজার মে:টন। এবারো আমের ভরমওসুমে করোনার থাবা এ অঞ্চলে তীব্র ভাবে হানা দেয়ার প্রভাব পড়েছে আমের বাজারেও। বিশেষ করে চাপাইনববাগঞ্জ ও নওগায়। আমের বাজারে নেই ব্যাপারীদের তেমন আনাগোনা। চাপাইনবাবগঞ্জ রাজশাহীতে বিশেষ লকডাউন অব্যাহত রয়েছে। বিধি নিষেধের বেড়াজালে পড়েছেও আম বাণিজ্য। এরমধ্যেও বিশেষ ম্যাঙ্গো স্পেশাল ট্রেন, কুরিয়ার সার্ভিস, ট্রাক আর হালে যোগ হওয়া অনলাইন বানিজ্য কোন রকমে টিকিয়ে রেখেছে আমের বাজার। কিছু আম বিদেশেও যাচ্ছে। তারপরও আমচাষীরা আমের হাটগুলোয় আম নিয়ে এলে পাচ্ছেনা কাংখিত ক্রেতা আর মূল্য। ফলে ফড়িয়াদের পোয়াবারো। তারা ইচ্ছেমত আম কেনা বেচা করছে। আবার শুরু হয়েছে সেই ৪৪/৫০ কেজিতে একমন ধরে। আম চাষীদের কাছ থেকে নিয়ে ক্রেতাদের কাছে চল্লিশ কেজিতে মন হিসাবে বিক্রি। আমের গড় মূল্য ৪০/৪৫ টাকা কেজি। সব মিলিয়ে আম চাষীদের লোকসানের পাল্লা ভারী হচ্ছে।
শুধু আম নয় পরিবহন বিশেষ করে কুরিয়ার সার্ভিসগুলো যার কাছে যেমন পারছে তেমন মাশুল আদায় করছে। খুচরো বাজারে এককেজি আমের দাম পঞ্চাশ টাকা হলেও ঢাকায় এককেজি আম পৌছাতে কুরিয়ার সার্ভিসগুলো নিচ্ছে কুড়ি থেকে পনের টাকা। এখাতে প্রতিদিন বানিজ্য হচ্ছে কোটি কোটি টাকা।
সাপাহারে বাজিমাত :নওগাঁ জেলা সংবাদদাত জানান, সারাদেশে আমের রাজধানী হিসাবে খ্যাতি অর্জন করেছে নওগাঁ জেলার সাপাহার উপজেলা। উত্তরাঞ্চলের সর্ববৃহৎ আমবাজার নওগাঁ জেলার সীমান্তবর্তী সাপাহার। ইতিমধ্যে নানান জাতের আম কেনা বেচার মধ্যে দিয়ে বিস্তীর্ন এলাকাজুড়ে জমে উঠেছে আমের বিশাল হাট। চলতি বছরে এই উপজেলায় ৯ হাজার হেক্টর জমিতে আম চাষ হয়েছে। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১লক্ষ মেট্রিকটন। প্রায় ১৫শ’ কোটি টাকার আম বানিজ্য হতে পারে এই উপজেলার আমবাজার থেকে। কিন্তু চলমান সময়ে আমের বাজারদর নিম্নমূখী হবার ফলে আমচাষীদের মনে হতাশার বীজ বপন হয়েছে।
সরেজমিনে আমবাজার ঘুরে দেখা যায়, বাজারে সারি সারি ভ্যানের উপর নানা জাতের আমের পসরা নিয়ে বসে আছেন আম বিক্রেতারা। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য জাত হলো ল্যাংড়া, নাগফজলী, হিমসাগর, আম্রপালি অন্যতম। আম কেনার জন্য বাইরের ব্যাপারী থাকলেও ক্রেতারা পাচ্ছেন না ন্যায্যমূল্য। প্রতিমণ ল্যাংড়া বিক্রয় হচ্ছে ৮শ থেকে ১২শ, নাগফজলী ১ হাজার থেকে ১২শ’, হিমসাগর ১৫শ’ থেকে ১৭শ’ , আম্রপালী ২ হাজার থেকে ২৪শ টাকা। চলতি বাজারমূল্য তুলনামূলকভাবে অনেক কম বলছেন আম বিক্রেতারা।
চাঁপাইনবাবগঞ্জে শঙ্কা ছিল: চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর উপজেলা সংবাদদাতা জানান, আমের ফলন, দাম বৃদ্ধি ও দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আগত ব্যবসায়ীদের পদচারণায় রহনপরের আম চাষি ও ব্যবসায়ীদের মুখে ফুটে উঠেছে আনন্দের হাসি। গত ২২ মে জেলা প্রশাসক গোমস্তাপুর উপজেলার রহনপুর স্টেশন আমবাজারে আমপাড়া ও বাজারজাতকরণের উদ্বোধন করলেও বিশেষ লকডাউন ও লাগাতার বৃষ্টিপাতের কারণে আমের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গরা নানা শঙ্কায় ছিল। কিন্তু স্বাস্থ্যবিধি আরোপ করে লকডাউন শিথিল হওয়ায় দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আম ব্যবসায়ীরা আসতে শুরু করেছে। যার ফলে বেড়েছে আমের দাম ও চাহিদা।
করোনার কারণে সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্য সচেতনতার জন্য রহনপুরের দীর্ঘদিনের পরিচিত রহনপুর স্টেশন আম বাজারটি বর্তমানে দেড় কি.মি. দূরে রহনপুর পিএম আইডিয়াল কলেজ মাঠে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। কিন্তু আমের আড়তগুলো পূর্বের জায়গায় থাকায় আম ব্যবসায়ীদেরকে দূর থেকে আম ক্রয় করে নিয়ে আসতে হচ্ছে। রহনপুর পৌরসভার কলেজপাড়া মহল্লার আমচাষি মাহতাব আলী বলেন, আমি প্রথমে আম নিয়ে অনেক ভয় পেয়েছিলাম। কিন্তু এখন সাহস হয়েছে। দাম ভা]লো পেতে শুরু করেছি। এখন আর ভয় করি না। আমার আমবাগানে আমের ভরে গাছের সকল ডাল নুয়ে গেছে। এবার আমার অনেক আম হবে।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, এবার গোমস্তাপুর উপজেলায় চার হাজার দু’শত পাঁচ হেক্টর জমিতে আমের ফলন হয়েছে এবং উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে প্রায় আটত্রিশ হাজার মে. টন। রহনপুর আম আড়তদার সমবায় সমিতি লি. এর সাধারণ সম্পাদক ও রহনপুর পৌর মেয়র জানান, এ বছর আমের ফলন ভালো হওয়ায় আমচাষি ও ব্যবসায়ীরা আনন্দে আছে। তবে, করোনার কারণে পূর্বে বাজারে আমের দাম কিছুটা কম থাকলেও বর্তমানে দিনে দিনে আমের দাম বাড়ছে। এছাড়াও গত ২৭ মে থেকে রহনপুর চাঁপাইনবাবগঞ্জ হয়ে ঢাকাগামী ম্যাংগো এক্সপ্রেস ট্রেনে প্রতিদিন ৪ হাজার থেকে ৮ হাজার কেজি পর্যন্ত আম পরিবহন করা হচ্ছে বলে রহনপুর রেলওয়ের সহকারী স্টেশন মাস্টার মামনুর রশিদ জানান। রহনপুরে আম সংরক্ষণের জন্য হিমাগার তৈরি হলে এলাকার কৃষকরা যেমন আর্থিকভাবে লাভবান হবেন তেমনি জাতীয় অর্থনীতিতে আম বড় ধরণের ভূমিকা রাখবে বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করেন।
আম ফলের রাজা। উৎকৃষ্ট সুস্বাদু ফল হিসেবে আমের বাণিজ্যিক গুরুত্ব অপরিসীম। আমি বিদেশে রফতানি হচ্ছে; এবং উৎপাদিত আমের ২৫ শতাংশ নষ্ট হচ্ছে। কারণ দেশে আম সংরক্ষণের জন্য এখনো তেমন কোনো হিমাগার গড়ে ওঠেনি। সংরক্ষণের অভাবে পরিবহনের অনিয়মের জন্য প্রচুর আম নষ্ট হয়। কম দামে তখন আম বিক্রি ছাড়া কোনো উপায় থাকে না। আমকে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে প্রক্রিয়াজাতকরণ ও সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে বিপণন এবং বিদেশে রফতানি করতে পারলে গার্মেন্টশিল্পের মতো প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করতে সক্ষম হবে। যা দেশের অর্থনীতির ভিত মজবুত করবে। ##

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (13)
Abdul Ali ২৩ জুন, ২০২১, ৩:০৬ এএম says : 1
এই সম্ভাবনাকে যথাযথভাবে কাজে লাগাতে হবে।
Total Reply(0)
কিরন ২৩ জুন, ২০২১, ৩:০৬ এএম says : 1
আমকে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে প্রক্রিয়াজাতকরণ ও সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে বিপণন এবং বিদেশে রফতানি করতে পারলে গার্মেন্টশিল্পের মতো প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করতে সক্ষম হবে।
Total Reply(0)
Abdul Mannan ২৩ জুন, ২০২১, ৪:০৫ এএম says : 1
বাংলাদেশের কৃষকদের কপাল সহজে খুলেনা।ফলন বেশি হলে ব্যাবসায়িরা সিন্ডিকেট করে বিনামূল্যে কিনে নেয়ার চেষ্টা করে। কৃষক রা মনের দুঃখে উৎপাদন বন্ধ করে।
Total Reply(0)
Hafiz Bhuian ২৩ জুন, ২০২১, ৪:০৬ এএম says : 0
ব্যাবস্থাপনা ভালো হলে তবেই তো!
Total Reply(0)
Mahmud Hussain Chowdhury ২৩ জুন, ২০২১, ৪:০৭ এএম says : 0
সে তো খুলবে ইন্ডাস্টিয়াল মালিকদের কপাল, আর আওয়ামিলীগের। আম বাগান মালিকদেরকে পেঁয়াজের মতো বাঁশ দিতে দিতে, সেই বাঁশের ধাক্কা জনসাধারণ পর্যন্ত সইতে থাকবে, সইতেই থাকবে৷
Total Reply(0)
MD Omar Faruk ২৩ জুন, ২০২১, ৪:০৮ এএম says : 0
আমের কোয়ালিটি ভাল বিভিন্ন দেশে রপ্তানির সঠিক ব্যাবস্থাপনা করলে আমাদের কৃষক ভাইরা অনেক লাভবান হতো,,, কেননা আমরা সৌদিতে পাকিস্তানী ইন্ডিয়ানি আম অনেক দামে বিক্রি করে থাকি
Total Reply(0)
Md Abdullah ২৩ জুন, ২০২১, ৪:০৮ এএম says : 0
খুলবে কবে? আমরা তো সৌদি আরবে দেশের আমি খেতে পাইনা।
Total Reply(0)
Ruhul Amin Tony ২৩ জুন, ২০২১, ৮:৫১ এএম says : 0
ভাই আমার কথায় কিছু মনে করবেন না আমিও চাই আমার দেশ উন্নত হোক বাংলাদের আম সারা বিশ্ববাসী চিনুক জানুক। তবে আমি এতটুকু বলতে পাড়ি আমি সৌদিআরব থাকি সৌদিআরব এর থেকে হাজার হাজার গুণ ভালো জাতের মানের আম আছে ওই আমি সৌদি খায় না আর বাংলাদেশি আমা খাবে স্বপ্ন দেখা ভালো কিন্তু আকাশ কুসুম স্বপ্ন দেখা ভালো না।
Total Reply(0)
Md Akash Nur ২৩ জুন, ২০২১, ৮:৫২ এএম says : 0
বিদেশে রপ্তানি শুরু হলে দেশের সুনাম খ্যাতি বাড়বে। কিন্তু বাগান মালিক রা যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে।
Total Reply(0)
Mujibur Rahman ২৩ জুন, ২০২১, ৮:৫৩ এএম says : 0
রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে বিদেশে রফতানির ব্যাপারে পরিকল্পনার অভাবে প্রতি মৌসুমেই বিপুল পরিমান আম নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
Total Reply(0)
Kamrul Islam ২৩ জুন, ২০২১, ৮:৫৪ এএম says : 0
উৎপাদন থেকে শুরু করে রফতানি প্রক্রিয়া পর্যন্ত যদি রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে যথাযথ ও কার্যকরী উদ্যোগ নেওয়া যায়, সম্ভব হয়, তাহলে উন্নত জাতের সুস্বাদু আম বিদেশে রফতানির মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা উপার্জনের নতুন দুয়ার খুলে যাবে।
Total Reply(0)
Syeda Nilufar ২৩ জুন, ২০২১, ১০:৫৪ এএম says : 0
Immediate action should be taken to export this item to several countries of the world.Jackfruit also occupies a important position It is our national fruit. The abundance availability of jackfruit is also a great hope for earning foreign exchange by exporting this item also.Allah has given us so many precious things but we are unable to use it properly .Various use of mango and jack fruit juice will be possible if we setup industry in our country..Then various tupe of employment opportunity willbe available in country.It will prevent the misuse of fruits.
Total Reply(0)
মোঃ শামীম উদ্দিন ২৬ জুন, ২০২১, ১:২৮ এএম says : 0
এই প্রজেক্টকে যথাযথ ভাবে মুল্যায়নের জন্য সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
Total Reply(0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন