তাজিকিস্তানের সঙ্গে সীমান্তের প্রধান একটি ক্রসিং পয়েন্টের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নিয়েছে আফগানিস্তানের সশস্ত্র গোষ্ঠী তালেবানরা। মঙ্গলবার আফগানিস্তানের প্রাদেশিক কর্মকর্তা ও একজন সেনা কর্মকর্তা এ তথ্য দিয়েছেন। তারা বলেছেন, এ সময়ে ওই সীমান্ত পোস্টে দায়িত্বরত নিরাপত্তা রক্ষাকারীরা পোস্ট ছেড়ে চলে গেছেন। অনেকে সেখান থেকে পালিয়েছেন।
দখল হওয়া সীমান্ত পোস্টটির নাম শির খান বন্দর। এর অবস্থান কুন্দুজ শহর থেকে প্রায় ৫০ কিলোমিটার উত্তরে। ১লা মে যুক্তরাষ্ট্র আফগানিস্তান থেকে তাদের সেনা প্রত্যাহার চূড়ান্ত দফায় শুরু করে। তারপর থেকে তালেবানরা তাদের কর্মকাণ্ডে গতি আনে। এরপর এটাই তাদের বড় অর্জন। কুন্দুজ প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য খালিদ্দিন হাকমি বলেছেন, দুর্ভাগ্যজনকভাবে ওই পোস্টের দখল নিয়ে এক ঘন্টার লড়াই হয়। এরপরই তালেবানরা তাজিকিস্তানের সঙ্গে আফগানিস্তানের শির খান বন্দর, শহর ও ওই চেকপোস্টের পুরোটা তাদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নিয়েছে।
বার্তা সংস্থা এএফপিকে একজন সেনা কর্মকর্তা বলেছেন, সব চেকপোস্ট থেকে আমরা সরে আসতে বাধ্য হয়েছি। এ লড়াইয়ের সময় আমাদের কিছু সেনা সদস্য সীমান্ত অতিক্রম করে তাজিকিস্তানে চলে গিয়েছেন। সকাল নাগাদ সর্বত্রই ছড়িয়ে পড়ে তালেবানরা। তারা ছিল শত শত। তালেবান মুখপাত্র জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ তাদের যোদ্ধাদের ওই সীমান্ত পোস্ট দখলে নেয়ার খবর নিশ্চিত করেছেন। এই সীমান্ত পোস্টটি পায়াঞ্জ নদীর পাশে। তালেবান মুখপাত্র বলেছেন, শির বন্দর এবং কুন্দুজে তাজিকিস্তানের সঙ্গে সব সীমান্ত ক্রসিংয়ের পূর্ণাঙ্গ নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নিয়েছেন আমাদের মুজাহিদরা।
তালেবানদের এই হামলা এমন এক সময়ে ঘটলো যখন আফগানিস্তান বিষয়ক জাতিসংঘের বিশেষ দূত সতর্ক করে বলেছেন যে, মে মাস থেকে আফগানিস্তানের ৩৭০টি জেলার মধ্যে কমপক্ষে ৫০টির দখল নিয়েছে তালেবান যোদ্ধারা। সংঘাত বৃদ্ধি মানেই হবে কাছের বা দূরের অন্য দেশগুলোর জন্য নিরাপত্তাহীনতা বৃদ্ধি। জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে জাতিসংঘ মহাসচিবের আফগানিস্তান বিষয়ক বিশেষ প্রতিনিধি ডেবোরাহ লিওন বলেছেন, যেসব জেলার দখল নিয়েছে তালেবানরা তা প্রাদেশিক রাজধানীগুলোকে ঘিরে আছে। এর অর্থ হলো যখনই বিদেশি শক্তিগুলো তাদের বাহিনীকে পুরোদমে প্রত্যাহার করে নেবে, তখনই এসব রাজধানীকে তারা তাদের নিয়ন্ত্রণে নেয়ার চেষ্টা করবে। সম্প্রতি উত্তরাঞ্চলের ফারিয়াব, বলখ এবং কুন্দুজ প্রদেশের প্রাদেশিক রাজধানীর বাইরে আফগানিস্তানের সেনাবাহিনী ও তালেবানদের মধ্যে ভয়াবহ লড়াই হয়েছে। সূত্র: এক্সপ্রেস ট্রিবিউন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন