শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

খেলাধুলা

গ্রুপসেরা ইংল্যান্ড-রানার্সআপ ক্রোয়েশিয়া

আলোকবর্তিকা হাতে স্টার্লিং-মদ্রিচ

স্পোর্টস ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৪ জুন, ২০২১, ১২:০০ এএম

হ্যারি কেইনের মতো তারকা যখন দলে থাকেন, তখন পাদপ্রদীপের আলোটা কেড়ে নেওয়া কঠিনই হয়ে দাঁড়ায়। কিন্তু রাহিম স্টার্লিং যে সেই কঠিনেরেই বেসেছিলেন ভালো! ইউরো ২০২০-এ ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে ইংল্যান্ডের প্রথম ম্যাচে জয়ের নায়ক স্পটলাইট কেড়ে নিলেন তৃতীয় ম্যাচেও। তার একমাত্র গোলে ভর করেই যে চেক প্রজাতন্ত্রকে হারিয়ে শেষ ষোলোয় জায়গা করে নিয়েছে কোচ গ্যারেথ সাউথগেটের শিষ্যরা!
ইউরোপিয়ান শ্রেষ্ঠত্বের এ আসরে অন্তত গ্রুপপর্বে স্বাগতিক হওয়ার সুবিধাটা পেয়েছিল ইংলিশরা। শেষ ষোলতেও একই সুযোগ পেতে হলে হতে হতো গ্রুপসেরা। ‘ডি’ গ্রুপ থেকে শেষ ষোল নিশ্চিত হয়ে গেলেও তাই গ্রুপ পর্বে নিজেদের শেষ দিনে কিছু হিসেব মেলাতে হতো ইংলিশদের। চেকদের কাছে হেরে গেলে, দিনের অন্য ম্যাচে ক্রোয়েশিয়া বড় ব্যবধানে জিতে গেলে সে হিসেবে গড়বড় হয়ে যেত কেইনদের, চেকদের হারিয়ে সেটা অবশ্য হতে দেয়নি শিরোপাপ্রত্যাশীরা।
ইতিহাস অবশ্য কথা বলছিল ইংলিশদেরই পক্ষে। বছর দুই আগে ইউরোর বাছাইয়ে এই ওয়েম্বলিতেই যে চেক রিপাবলিককে তারা হারিয়েছিল ৫-০ ব্যবধানে! সেদিনও অবশ্য নায়ক ছিলেন এই স্টার্লিংই। হ্যাটট্রিক করেছিলেন তিনি, দল পেয়েছিল বড় জয়। তবু ইউরোর গ্রæপপর্বের এই ম্যাচে কিছুটা শঙ্কা তো ছিলই, বড় টুর্নামেন্ট বলে কথা। সে শঙ্কাকে শেষমেশ উড়িয়েই দিয়েছে দলটি। শেষ ম্যাচে চেকদের বিপক্ষে তুলে নিয়েছে ১-০ গোলের জয়। তাতে তিন ম্যাচে ৭ পয়েন্ট ঝুলিতে পুরেছে থ্রি লায়ন্সরা।
দ্বিতীয় মিনিটে গোলের সুবর্ণ সুযোগ পেয়েছিলেন স্টার্লিং। কিন্তু গোলপোস্ট বাঁধা হয়ে দাঁড়ায় তার আর ইংল্যান্ডের পথে। এরপর ১২ মিনিটে অবশ্য যে সুযোগটা তাকে গড়ে দিয়েছেন জ্যাক গ্রেলিশ, সেটায় গোল করার চেয়ে মিস করাই ছিল বেশি কঠিন। স্টার্লিং অবশ্য সে পথে হাঁটেননি। গোল করেছেন, দলকে দিয়েছেন এগিয়ে।
এরপর হ্যারি কেইনের একটা চেষ্টা রুখে দিয়ে চেকদের ম্যাচে রাখেন গোলরক্ষক থমাস ভাচলিক। এর একটু পরেই ও প্রান্তে ইংলিশ গোলরক্ষক জর্ডান পিকফোর্ডকেও দিতে হয় পরীক্ষা। থমাস হোলসের বক্সের বাইরে থেকে করা শটটি সেভ দেন তিনি। এর কিছু পরে থমাস সুচেকের শটটা বেরিয়ে যায় লক্ষ্যের একটু বাইরে দিয়ে। ফলে এক গোলে এগিয়ে থেকে বিরতিতে যায় ইংল্যান্ড। বিরতি থেকে ফেরার পর ইংলিশরা মনোযোগ দিয়েছে রক্ষণে। ফলে এটাই হয়ে যায় শেষ বাঁশি বাজার সময়ের ব্যবধান।
অবশ্য ইংল্যান্ডের কাছে হেরেও তৃতীয় দল হিসেবে ‘ডি’ গ্রæপের খেলা শেষ করল চেক প্রজাতন্ত্র। ৩ ম্যাচে তাদের সংগ্রহ ৪ পয়েন্ট। ছয়টি গ্রæপে তৃতীয় হওয়া ছয় দলের মধ্যে শীর্ষ চারে থেকে শেষ ষোলোয় উঠল চেক প্রজাতন্ত্র।
২০১৮ রাশিয়া বিশ্বকাপে বিশ্বজয়ের খুব কাছে গিয়েও স্বপ্নভঙ্গের বেদনায় পুড়তে হয় ক্রোয়েশিয়াকে। সেবার ফাইনালে উঠেও শিরোপা অধরা থেকে যায় লুকা মদ্রিচের দলের। সে বিশ্বকাপের পর দলের একাধিক তারকা খেলোয়াড় অবসরে যান। যার প্রভাব পড়ে এবারের ইউরোতে। টুর্নামেন্টের শুরুতে একেবারেই সুবিধা করতে পারেনি ক্রোয়েশিয়া। ইংল্যান্ডের সঙ্গে হারের পর চেক রিপাবলিকের সঙ্গে ড্র করে তারা। তবে স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে বড় জয় পেয়েছে দলটি।
৩-১ গোলে জয়ের ব্যবধানে শেষ ষোলো নিশ্চিত করেছে ক্রোয়েশিয়া। গোল গড়ে চেক রিপাবলিককে পিছনে ফেলে ডি গ্রুপের রানার আপ হয়ে শেষ ষোলোতে জ্লাতকো দালিদের দল। ৩ ম্যাচে ৭ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ড। ক্রোয়েশিয়া ও চেক রিপাবলিকের পয়েন্ট সমান ৪ করে। তবে সমান পয়েন্ট হলেও গোল পার্থক্যে এগিয়ে থাকায় দ্বিতীয় অবস্থানে ক্রোয়েশিয়া, তৃতীয় স্থানে চেকরা।
নিজেদের ঘরের মাঠে শুরু থেকেই আধিপত্য বিস্তার করেছে ক্রোয়েশিয়া। ম্যাচের ৬৬ শতাংশ সময় বল দখলে এগিয়ে থেকে প্রতিপক্ষের গোলের উদ্দেশে নেওয়া ১১ শটের ৬টি ছিল লক্ষ্যে। শুরুর দিকে সমান তালে লড়াই চালিয়েছিল স্কটল্যান্ডও। তবে ম্যাচের ১৭তম মিনিটে গোলের উদ্দেশে নেওয়া নিজেদের প্রথম শটেই বাজিমাত ক্রোয়েশিয়ার।
অবশ্য প্রথমার্ধেই সমতায় ফেরে স্কটল্যান্ড। অ্যান্ড্রু রবার্টসনের ক্রস ডি-বক্সে ঠিকমতো ক্লিয়ার করতে পারেনি ক্রোয়েশিয়ার ডিফেন্ডাররা। ডানপায়ের শটে চার ডিফেন্ডারের মাঝ দিয়ে জালে বল জড়ান ক্যালাম ম্যাকগ্রেগর।
মদ্রিচ ম্যাজিকে ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধ পুরোপুরি নিজেদের করে নেয় ক্রোয়াটরা। ৬২ মিনিটে কোভাচিচের কাছ থেকে বল পেয়ে নিশানাবাজি করতে ভুল করেননি ক্রোট অধিনায়ক। ডান পায়ের শটে ব্যবধান বাড়িয়ে ২-১ করেন মদ্রিচ। ২০০৮ সালে ইউরোতে দেশের সর্বকনিষ্ঠ গোলদাতার রেকর্ড গড়ার পর এবার ৩২ বছর ২৮৬ দিনে করা এই গোলে সবচেয়ে বয়স্ক গোলদাতার মর্যাদাও পেলেন। একই সঙ্গে দেশটির প্রথম ফুটবলার হিসেবে তিন ইউরোতে (২০০৮, ২০১৬ ও ২০২১) গোল করলেন তিনি।
ম্যাচের ৭৭তম মিনিটে হওয়া আরেক গোলে অবদান রাখেন মদ্রিচ। তার কর্নার থেকে পেরিসিচের হেড ব্যাকপোস্টে আঘাত করে জালে জড়ায়। এর সুবাদে ৩-১ গোলের জয় পায় ক্রোয়েশিয়া।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন