বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

লক্ষ্মীপুর জেলা আ.লীগ সভাপতিকে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় উপজেলা চেয়ারম্যানসহ ২৩৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা

লক্ষ্মীপুর জেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২৪ জুন, ২০২১, ১১:৩৩ এএম | আপডেট : ১১:৩৫ এএম, ২৪ জুন, ২০২১

লক্ষ্মীপুর জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি গোলাম ফারুক পিংকুকে হত্যাচেষ্টা ও ব্যক্তিগত গাড়ি ভাঙচুর করার ঘটনায় মামলা হয়েছে। গত বুধবার (২৩ জুন) সকালে পিংকুর গাড়িচালক নিজাম উদ্দিন বাদী হয়ে কমলনগর থানায় এ মামলা দায়ের করেন। এতে কমলনগর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মেজবাহ উদ্দিন বাপ্পি ও তোরাবগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ফয়সাল আহমেদ রতনসহ ৫৪ জনের নাম উল্লেখ ও অচেনা আরো ১৮০ জনকে আসামী করে এ মামলা দায়ের করা হয়।এ ঘটনায় তোরাবগঞ্জ ইউপি সদস্য (মেম্বার) ইসমাইল হোসেন, মো. শরিফ, আবদুল মতিন ও মো. সবুজ নামে চারজনকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়।
জানা যায়, ২১ জুন (সোমবার) দুপুরে ইউপি নির্বাচন চলাকালে লক্ষ্মীপুর জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি গোলাম ফারুক পিংকু সাংগঠনিক কাজে রামগতি উপজেলার আলেকজান্ডারের দিকে গাড়িবহরযোগে যাচ্ছিলেন।পথে কমলনগরের তোরাবগঞ্জ বাজারে পৌঁছলে আসামিরা পরিকল্পিতভাবে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়। এসময় পিংকু গাড়ি থেকে নামতেই হত্যার উদ্দেশ্যে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করা হয়। হামলায় পিংকুসহ অন্তত আওয়ামীলীগের ৬ নেতাকর্মী আহত হন। আহতরা স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন।

অন্যদিকে পিংকুর ওপর হামলা ও গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনায় দুদিন ধরে জেলা শহর ও রামগতি-কমলনগর উপজেলার বিভিন্ন স্থানে প্রতিবাদ সভা বিক্ষোভ মিছিল করা হয়েছে। এসময় দলীয় নেতাকর্মীরা ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতার করতে আলটিমেটাম দেন।এছাড়া হামলার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে তাৎক্ষণিকভাবে তোরাবগঞ্জ ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মামুনুর রশিদকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। একই সঙ্গে ওই ইউনিয়ন কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করেছে জেলা ছাত্রলীগ।আওয়ামীলীগ নেতা গোলাম ফারুক পিংকু বলেন,আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে পরিকল্পিতভাবে রতন ও বাপ্পি বাহিনী হামলা চালিয়েছে। তারা অতর্কিতভাবে গাড়ি ও দলীয় কার্যালয় ভাঙচুর, নেতাকর্মীদের পিটিয়ে-কুপিয়ে আহত করেছে।গত ২২ জুন মঙ্গলবার বিকেলে উপজেলার তোরাবগন্জ বাজারে এক প্রতিবাদ সভা শেষে বিক্ষোভ মিছিল বাজারের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে।এসময় বিক্ষোভকারীরা হামলার ঘটনার জন্য কমলনগর উপজেলা চেয়ারম্যান মেজবাহ উদ্দিন বাপ্পি ও সাবেক তোরাবগন্জ ইউপি চেয়ারম্যান ফয়সল আহমেদ রতনকে দায়ী করে তাদের গ্রেফতার দাবি করে এবং তাদের কুশপুত্তলিকা দাহ করে।দলীয় সুত্রে জানা গেছে,গত ২১ জুন অনুষ্ঠিত তোরাবগন্জ ইউপি নির্বাচনে ফয়সল আহমেদ রতন এবার নৌকার বিরুদ্ধে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে ঘোড়া প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে অংশ নেন। অন্যদিকে নৌকা প্রতীক নিয়ে উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মির্জা আশ্রাফুল জামান রাসেল প্রতিদ্বন্দ্বীতা করেন।

অনুরুপ ভাবে ২০১৯ সালের উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি মাস্টার একেএম নুরুল আমিন দলীয় নমিনেশন পেয়ে নৌকা প্রতীক নিয়ে ভোটের মাঠে নামেন। কিন্তু উপজেলা যুবলীগের আহবায়ক মেজবাহ উদ্দিন বাপ্পি দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হন। এতে উপজেলা নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের পরাজয় ঘটে। ইউপি নির্বাচনে এসেও একই পরিবার থেকে নৌকার বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান নিয়ে মাঠে নামেন উপজেলা চেয়ারম্যান বাপ্পী। আওয়ামীলীগ পরিবার দাবিদার সত্বেও দলীয় সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে একাধিকবার নৌকা প্রতীকের বিরুদ্ধে বাপ্পি ও রতন গংদের অবস্থান দলের বিরোধ প্রকাশ্য রূপ নেয়। একপর্যায়ে ২১ জুন ইউপি নির্বাচনের দিন লক্ষ্মীপুর জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি গোলাম ফারুক পিংকু তোরাবগন্জ ইউনিয়নে ঘটনাস্থলে পৌঁছলে সন্ত্রাসী হামলার শিকার হন। হামলায় তিনি ও তার গাড়ি চালক সহ ৬ জন আহত হয়েছেন। ইট পাটকেল নিক্ষেপ করে তার গাড়ির কাঁচ ভেঙে ব্যাপক ক্ষতিসাধন করে।এব্যাপারে ২৩৪ জনকে আসামী করে থানায় মামলা দায়ের করা হয়।

মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে কমলনগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোছলেহ উদ্দীন বলেন, মামলাটি গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত চলছে। এ ঘটনায় এক ইউপি সদস্যসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান চলছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন