শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

নীরব ভোটার : কৌশলগত যুদ্ধে ব্যস্ত প্রার্থীরা

সিলেট-৩ আসনের উপনির্বাচন

ফয়সাল আমীন, সিলেট থেকে | প্রকাশের সময় : ২৫ জুন, ২০২১, ১২:০৩ এএম

সিলেট-৩ আসনের নিরব সাধারণ ভোটাররা। নেই এখনো নির্বাচন নিয়ে আগ্রহ বা উত্তেজনা। নির্বাচনে বিএনপি ও জামায়াত নেই। সে কারণে তৃণমূলে মিলছে না কোনো সাড়া শব্দ। নির্বাচনী মাঠে লড়ছে শাসক দল আ.লীগ। একান্ত দলীয় বিত্তে চালাচ্ছে নির্বাচনী কার্যক্রম তারা। জাতীয় পার্টির সাংগঠনিক ভিত্তি নেই বললেই চলে এখানে। যদিও এক সময় টানা ৩ বার জাপার লাঙ্গলে জয়জয়কার ছিল এ আসনে।

জানা যায়, জাপার দূর্গে ২০০১ সালের সাধারণ নির্বাচনে হানা দেন বিএনপির প্রার্থী শফি আহমদ চৌধুরী। কিন্তু এবার শফি চৌধুরী স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নেমেছেন নির্বাচনী যুদ্ধে। দলের সিদ্ধান্তের বাইরে যেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন তিনি। ফলশ্রæতিতে বহিষ্কার খড়গে পড়েছেন শফি চৌধুরী। জাপার প্রার্থী আতিকুর রহমান আতিক। ১৯৯১ সালে এ আসনে সাধারণ নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলেন নৌকা প্রতীকে। সেই নির্বাচনে জাপা প্রার্থীর নিকট পরাজিত হয়েছিলেন তিনি। পুনরায় ২০০৮ সালের নির্বাচনে নৌকা ছেড়ে লাঙ্গলের হাল ধরেন আতিক। কিন্তু পরাস্ত হন নৌকা প্রতীকের কাছে। তারপরও নাছোড়বান্দা আতিক। ছাড়ছেন না নির্বাচনের মাঠ। সে কারণে এবারও প্রার্থী হয়েছেন সিলেট-৩ উপনির্বাচনে। হেভিওয়েট এ তিন প্রার্থী নিজস্ব দৌড়ঝাঁপের মধ্যে এখনো সীমাবন্ধ রয়েছে সিলেট-৩ আসনের নির্বাচন পরিস্থিতি নিয়ে। তিন প্রার্থীর ভিন্নরকম লড়াইয়ে সরগরম এ আসনের মাঠ।

যুক্তরাষ্ট্র থেকে দেশে ফিরে শফি আহমদ চৌধুরী বলেন, সিলেট-৩ আসনের প্রয়াত এমপি মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরীর স্ত্রী ফারজানা সামাদের সঙ্গে আমি কথা বলেছি। আমাকে সমর্থন দিয়েছেন তিনি। এ আসনে আ.লীগের মনোনয়ন চেয়েছিলেন প্রয়াত সামাদের স্ত্রী ফারজানাসহ দলটির অন্তত দুই ডজন নেতা। এরপর মনোনয়নপত্র জমা দিতে গিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে শফি বলেন, আ.লীগের প্রার্থী নিয়ে দলের মধ্যেই অসন্তোষ রয়েছে। দলের নেতাকর্মীরা আশা করেছিলেন মানবিক দিক বিবেচনায় আ.লীগ মনোনয়ন দেবে মাহমুদ উস সামাদের স্ত্রীকে। কিন্তু আ.লীগ তার প্রতি সহানুভ‚তি না দেখানোর কারণে দলের নেতাকর্মীরা মারাত্মক ক্ষুব্ধ। তারা আমার সঙ্গে যোগাযোগ করছেন। জামায়াতও আমাকে নির্বাচনে অংশ নিতে উৎসাহ দিচ্ছে। সব মিলিয়ে দলীয় নেতাকর্মী ও এলাকার মানুষের সমর্থন উপেক্ষা করতে না পেরে যুক্তরাষ্ট্র থেকে ছুটে এসে প্রার্থী হতে হয়েছে।

শফি চৌধুরীর মন্তব্যে ক্ষুব্ধ হন আ.লীগের প্রার্থী হাবিবুর রহমান হাবিব। এরপর এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেছিলেন তিনি। এতে এক সাংবাদিক শফি চৌধুরীর মন্তব্যের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয় তার। এ সময় হাবিব বলেন, শফি চৌধুরী বিভ্রান্তি ছড়ানোর চেষ্টা করছেন। বয়স্ক মানুষ তিনি। কোন সময় কী বলেন, কী করেন তার ঠিক নেই। তার কর্মীদেরই বলতে শুনেছি, বয়সের কারণে তিনি প্যান্টে প্রস্রাব-পায়খানা পর্যন্ত করে দেন। সুতরাং তার কথায় কান দিয়ে লাভ নেই। হাবিবের এমন মন্তব্য নজরে পড়েছে প্রবীন শফি আহমদের। গত শুক্রবার এক ভিডিওবার্তায় এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমার বয়স এখন ৮৪ বছর। আজকেও সারাদিন নির্বাচনী কাজে এলাকায় ছিলাম। একবারও বাথরুমে যেতে হয়নি। আমার কাপড় চোপড়ও অপরিষ্কার হয়নি। এখনো অজু আছে। প্রবীন এই বিএনপি নেতার দাবি, তিনি বিএনপির রাজনীতি করলেও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তাকে ছোট ভাইয়ের মতো স্নেহ করতেন।

বাগযুদ্ধের এ উত্তাপের মধ্যেই আ.লীগ প্রার্থী হাবিবের দ্বৈত নাগরিকত্ব চ্যালেঞ্জ করে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ করেছিলেন জাতীয় পার্টির প্রার্থী আতিকুর রহমান। তার অভিযোগ, রিটার্নিং কর্মকর্তা একতরফা রায় দিয়েছেন, তাদের কথা শোনেননি। যে কারণে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বরাবরে ২০ জুন লিখিত অভিযোগ করেন তিনি। আতিকের এমন অভিযোগের ঘটনায় দু:চিন্তা কপালে ভাজ পড়ে হাবিব সমর্থকদের। কিন্তু গত বুধবার নির্বাচন কমিশন সেই অভিযোগের ওপর শুনানি করেন। শুনানি শেষে রায় যায় হাবিবের পক্ষে। এদিকে ইসির এই রায়ে অসন্তুষ্ট হয়ে উচ্চ আদালতে যাচ্ছেন আতিকুর রহমান আতিক। এখন আতিক সমর্থকরা অপেক্ষা করছেন উচ্চ আদালতে কি হয় হাবিবের।

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন