প্রতীক বরাদ্দ পেয়েছেন সিলেট-৩ আসনের উপ-নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী ৪ প্রার্থী। দলের নির্দিষ্ট প্রতীক ৩ প্রার্থী পেলেও ধানের শীষের সাবেক এমপি, স্বতন্ত্র প্রার্থী শফি আহমদ চৌধুরী পেয়েছেন মোটরগাড়ি (কার) প্রতীক। আওয়ামী লীগের হাবিবুর রহমান হাবিব পেয়েছেন নৌকা, জাপার আতিকুর রহমান আতিক পেয়েছেন লাঙল ও জুনেদ মুহাম্মদ মিয়া পেয়েছেন ডাব প্রতীক। গতকাল সকাল সাড়ে ১১টায় বরাদ্দকৃত প্রতীক সংগ্রহ করেন প্রার্থীরা। এর মধ্যদিয়ে আনুষ্ঠানিক প্রচারণায় নেমেছেন প্রার্থীরা।
এদিকে প্রতীক বরাদ্দের পর জেলার সিনিয়র নির্বাচন অফিসার ফয়সল কাদের সর্তকবার্তা প্রদান করেছেন প্রার্থীদের। সেই বার্তায় বলেছেন, প্রার্থীরা এমন কিছু করবেন না যাতে নির্বাচন কমিশন প্রার্থীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হয়। কারণ উপ-নির্বাচনটি সুষ্ঠু হওয়ার লক্ষ্যে সবাইকে সহযোগিতা করতে হবে।
সিলেট-৩ আসনটি ভ‚-কৌশলগত কারণে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এলাকা। সারাদেশের সাথে সড়ক ও রেলপথের যোগাযোগের সেতুবন্ধন এ আসনটি। এছাড়া আন্দোলন সংগ্রামের কারণে এ আসনটির অবস্থান খুবই স্পর্শকাতর। ১৯৯১ সালের সাধারণ নির্বাচনের পর থেকে ধারাবাহিকভাবে নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখে জাতীয় পার্টি-বিএনপি-আওয়ামী লীগ। এর মধ্যে জাতীয় পার্টি ও আওয়ামী লীগের কর্তৃত্ব একাধিকবার হলেও বিএনপি নিয়ন্ত্রণ নিয়েছিল কেবল ২০০১ সালের নির্বাচনে। জাপা ও আ.লীগের বিজয়ী সেই প্রার্থীরা মারা গেলেও বেঁচে আছেন বিএনপির সাবেক এমপি শফি আহমদ চৌধুরী। উপ-নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন তিনি। সে কারণে দল বহিস্কার করেছে তাকে। আওয়ামী লীগ প্রার্থী হাবিবুর রহমান হাবিব নির্বাচনী মাঠে নবাগত। জাতীয় পার্টির প্রার্থী আতিকুর রহমান আতিক অতীতে এ আসনে দুইবার নির্বাচনী যুদ্ধে অংশ নিয়ে পরাজিত হলেও, এবারও প্রার্থী হয়েছেন লাঙল নিয়ে।
এদিকে বাংলাদেশ কংগ্রেসের জুনায়েদ মোহাম্মদ মিয়া একেবারে নতুন মুখ। নির্বাচনে অংশগ্রহণের মধ্যে কানে কানে উঠছে দল ও তার নাম। কিন্তু স্বতন্ত্র প্রার্থী শফি আহমদ চৌধুরী কি প্রতীক পাচ্ছেন তা নিয়ে কৌতুহল ছিল অনেকের। অবশেষে তিনি পেয়েছেন মোটরগাড়ি (কার)। ফলে মোটরগাড়ি নিয়ে নৌকা-লাঙলের মুখোমুখি হচ্ছেন শফি চৌধুরী। ধানের শীষের সাবেক এ এমপির মোটরগাড়ি নিয়ে নতুন করে পরিচিতি লাভে চষে বেড়াতে হবে নির্বাচনী মাঠে। রাজনীতিক পরিচয় মুছে ব্যক্তি শফি চৌধুরী মোটর গাড়িতে কতটুকু এগুতে পারেন, তা দেখার অপেক্ষায় রয়েছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
এদিকে, জাপার প্রার্থী আতিকুর রহমান আতিক প্রথমবারের মতো লাঙল প্রতীকে নির্বাচন করেছিলেন ২০০৮ সালের সাধারণ নির্বাচনে। সেই নির্বাচনী ফলাফলে তার অবস্থান ছিল তৃতীয়। এবার ২য় বারের মতো নির্বাচনে নামছেন লাঙল কাঁধে নিয়ে। আওয়ামী লীগের প্রার্থী হাবিবুর রহমান হাবিব নৌকার হাল ধরেছেন এবারই প্রথম। তরুণ এ প্রার্থী নির্বাচনী মাঠে নবাগত। কিন্তু তার নৌকা এ আসনে ২০০৮ সাল থেকে ২০১৯ সালে ১ জানুয়ারির সাধারণ নির্বাচনেও টানা বিজয় কেতন উড়িয়েছে। সময় ও নৌকার ভাগ্য এ আসনে খুবই উর্বর। এমতাবস্থার মধ্যে দিয়ে গতকাল থেকে আনুষ্ঠানিক প্রচারণা শুরু করেছেন সিলেট-৩ আসনের প্রার্থীরা।
গতকাল প্রতীক বরাদ্দের পর সিনিয়র জেলা নির্বাচন অফিসার ফয়সল কাদের প্রার্থীদের উদ্দেশে বলেন, গতকাল থেকে আনুষ্ঠানিক প্রচারণা শুরু করতে পারলেও বেশ কয়েকটি বিধি-নিষেধ রয়েছে। সেগুলো না মানলে নির্বাচন কমিশন প্রার্থীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হবে। এছাড়া তিনি প্রার্থীদের কানে দেন, কোনো প্রার্থী প্রতিদ্ব›িদ্ব প্রার্থীকে ঘায়েল করার লক্ষ্যে কোনো ধরনের মানহানিকর বক্তব্য প্রদান করতে পারবেন না। কোনো প্রার্থী বা তার পক্ষে অন্য কোনো ব্যক্তি কোনো নিয়ম ভঙ্গ করলে সর্বোচ্চ ছয় মাসের কারাদÐ অথবা সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকা অর্থদÐ অথবা উভয়দÐে দÐিত হবেন। এ আসনে ভোটগ্রহণ হবে আগামী ২৮ জুলাই। এ আসনে মোট ভোটার ৩ লাখ ৫২ হাজার। কেন্দ্র ১৪৯টি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন