শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

খেলাধুলা

আবাহনীর হ্যাটট্রিকের হ্যাটট্রিক

স্পোর্টস রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৬ জুন, ২০২১, ৬:৫৫ পিএম | আপডেট : ৮:২৭ পিএম, ২৬ জুন, ২০২১

ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে (ডিপিএল) হ্যাটট্রিক শিরোপা জয়ের হ্যাটট্রিক করেছে আবাহনী লিমিটেড। শনিবার শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ডিপিএলের সুপার লিগের শেষ রাউন্ডের ম্যাচে আবাহনী ৮ রানে প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাবকে হারিয়ে শিরোপা উৎসবে মাতে।

এর আগে লিগে আবাহনী ১৯৭৪-৭৫, ৭৫-৭৬, ৭৬-৭৭, ২০০৬-০৭, ২০০৭-০৮ ও ২০০৮-০৯ মৌসুমে দু’বার হ্যাটট্রিক চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল। সর্বশেষ ২০১৭-১৮, ২০১৮-১৯ এবং ২০১৯-২০ মৌসুমে চ্যাম্পিয়ন হয়ে তারা হ্যাটট্রিক শিরোপা জয়ের হ্যাটট্রিক করেছে। গত পাঁচ বছরের মধ্যে এটি আবাহনীর চতুর্থ শিরোপা জয়। লিগের ৪৩ আসরের মধ্যে ২১ বার চ্যাম্পিয়ন হওয়ায় সবার আগে আবাহনীর নাম। ৯ বার চ্যাম্পিয়ন হয়ে দ্বিতীয়স্থানে আছে মোহামেডান।

ডিপিএলের অঘোষিত ফাইনালে শনিবার টস জিতে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে আবাহনী নির্ধারিত ২০ ওভারে ৭ উইকেটে করে ১৫০ রান। জবাবে প্রাইম ব্যাংক ৯ উইকেটে ১৪২ করলে শ্বাসরুদ্ধকর জয় তুলে নেয় আবাহনী। আবাহনীর জয়ের নায়ক মোহাম্মদ সাইফ উদ্দিন। ব্যাট হাতে ১৩ বলে ২১ রানের গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস খেলার পর এই অলরাউন্ডার ৩৬ রানে তুলে নেন প্রাইম ব্যাংকের ৪টি উইকেট।

তবে ম্যাচে ব্যাট-বলের লড়াই ছাপিয়ে স্পষ্ট চোখে পড়েছে আম্পায়ারদের ভুলগুলো। ম্যাচের প্রথম ওভারেই প্রাইম ব্যাংকের মুস্তাফিজুর রহমানের বলে আবাহনীর লিটন দাসের নিশ্চিত এলবিডব্লিউ দেননি আম্পায়ার তানভির আহমেদ। এরপর শেষ ওভারে ‘নো’ বল না দেওয়া, লেগ আম্পায়ারও ছিলেন সেই তানভিরই। করোনাকালে জৈব-সুরক্ষা বলয়ে আয়োজিত এই লিগ যেমন ঘরোয়া ক্রিকেটের জন্য স্বস্তি বয়ে এনেছে, তেমনি বেশ কিছু ম্যাচে অস্বস্তিতে পড়তে হয়েছে আম্পায়ারিংয়ের ভুলগুলোর জন্য। যার বেশ কটিই গেছে আবাহনীর পক্ষে। তবে তীরে এসে তরী ডোবালো প্রাইম ব্যাংক। আবাহনীকে বাগে পেয়েও তারা সুযোগ কাজে লাগাতে পারেনি।

ব্যাটিংয়ে নেমে আবাহনী শুরুতেই উইকেট হারায়। ম্যাচের প্রথম বলেই ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে মুস্তাফিজুর রহমানের বল মেরে উইকেট বিলিয়ে দেন মোহাম্মদ নাঈম শেখ। এক বল পরই ফুল লেংথ ডেলিভারি লাগে লিটনের পায়ে। তবে জোরালো আবেদনে সাড়া দেননি আম্পায়ার। প্রাইম ব্যাংকের ক্রিকেটাররা এতে হতাশ হয়ে দাঁড়িয়ে থাকেন কিছুক্ষণ। টিভি রিপ্লে দেখে নিশ্চিত আউট বলেই মনে হয়েছে। দ্বিতীয় ওভারে রুবেল ফেরান মুনিম শাহরিয়ারকে। তবে লিটনের পাল্টা আক্রমণে গা ঝারা দেয় আবাহনী। কিন্তু ১৩ বলে ২ চার ও ১ ছয়ের মারে লিটন ১৯ রান করে এনামুলের অসাধারণ ক্যাচে ফিরে গেলে হতাশ হন আবাহনী সমর্থকরা। নাহিদুল ইসলামের বলে মিড অফ থেকে অনেকটা পেছনে ছুটে গিয়ে ডাইভিং ক্যাচ নেন প্রাইম ব্যাংক অধিনায়ক।

৩১ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে যখন ব্যাকফুটে আবাহনী তখন দলকে এগিয়ে নেন মোসাদ্দেক ও নাজমুল হোসেন শান্ত। এই জুটিতে রানের গতি তেমন ভালো না থাকলেও তারা ৬১ বলে ৭০ রান যোগ করেন দলীয় সংগ্রহে। ৩ চার ও ২ ছয়ের মারে ৪০ বলে ৪৫ রান করে আউট হন শান্ত। আর রুবেলের সাজা বল ক্রস ব্যাটে খেলে ৩৯ বলে ৪০ করে বোল্ড হন মোসাদ্দেক। সাইফ উদ্দিনের মারমুখী ব্যাটিংয়েই দেড়শ’র ঘরে পৌঁছায় আবাহনীর ইনিংস। ফিজের করা আবাহনীর শেষ ওভারে দু’টি ছক্কা মারেন সাইফ।

ব্যাটিংয়ে শেষটা ভালো করার পর বোলিংয়েও আবাহনীকে দারুণ সূচনা এনে দেন সাইফ। প্রাইম ব্যাংকের বড় ভরসা রনি তালুকদারকে তিনি ফিরিয়ে প্রথম ওভারেই। নিজের পরের ওভারে আউট করেন প্রাইম ব্যাংক অধিনায়ক এনামুলকে। এরপর রকিবুল হাসান, মোহাম্মদ মিঠুনরা দ্রুত বিদায় নিলে লড়াইয়ে পিছিয়ে পড়ে প্রাইম ব্যাংক। ওপেনার রুবেল মিয়া দীর্ঘক্ষণ এক প্রান্ত আকড়ে ধরে রাখলেও দলকে আশা দেখাতে পারেননি। তানজিম হাসানের স্লোয়ারে তিনি বোল্ড হন। ফেরার আগে করেন ৪৩ বলে ৪১।

সাইফ যখন এক ওভারেই ফেরান নাঈম হাসান ও রুবেল হোসেনকে, শেষ ৩ ওভারে প্রয়োজনে পড়ে তাদের ৪১ রানের। উইকেট বাকি তখন মাত্র ২টি। অভিজ্ঞ অলকের ঝড় শুরু হয় এরপরই। তানজিমকে ছক্কা মারেন তিনি, টানা দুই বলে চার-ছক্কা মানে সাইফকে। অলকের মারমুখী ব্যাটিয়ে শেষ ওভারেও টিকে থাকে প্রাইম ব্যংকের আশা। কিন্তু প্রথম বলে প্রশ্নবিদ্ধ সিদ্ধান্ত, পরের দুই বলে রান না পেয়ে শেষ হয়ে যায় তাদের সব সম্ভাবনা। কাজে লাগেনি অলকের ১৭ বলে ৩৪ রানের ইনিংস। ফলে শেষ পর্যন্ত ৮ রানের জয় পেয়ে উল্লসিত আবাহনী উৎসবে মাতে। ব্যাটিং ও বোলিংয়ে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স করে ম্যাচসেরার পুরস্কার পান মোহাম্মদ সাইফ উদ্দিন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন