বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

ভবিষ্যতের সিদ্ধান্ত নিতে হবে আফগানদের : বাইডেন

৬৫০ সৈন্য রেখে যাওয়ার বিষয়ে তালেবানের কঠোর হুঁশিয়ারি

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৭ জুন, ২০২১, ১২:০২ এএম

আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনির সঙ্গে প্রথম মুখোমুখি বৈঠক করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। আফগানিস্তান থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনী প্রত্যাহার অব্যাহত রাখার মাঝেই শুক্রবার হোয়াইট হাউসে দুই নেতা বৈঠকটি করেছেন বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। বাইডেন বলেন, ‘ভবিষ্যতের সকল সিদ্ধান্ত আফগানদের নিজেদের নিতে হবে। সেখান থেকে আমাদের সেনা প্রত্যাহার করান হলেও আফগানিস্তানের প্রতি ওয়াশিংটনের সহযোগিতা এখানেই শেষ হচ্ছে না।’ আশরাফ গনিকে উদ্দেশ্য করে তিনি আরও বলেন, ‘দেশটিতে সেনা উপস্থিতি না রেখেও যুক্তরাষ্ট্র বাইরে থেকেই আফগানিস্তানের সেনাবাহিনীকে সহায়তা করে যাবে। পাশাপাশি অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সহায়তাও অব্যাহত রাখবে। আমরা আপনার সাথেই আছি। এটি মূল্যবোধের বিষয়। আফগানিস্তানকে রক্ষা করতে গত দুই দশক ধরে যুক্তরাষ্ট্র যে কাজ করেছে, তাতে তিনি কৃতজ্ঞ। তবে এখন দেশটি তালেবানের বিরুদ্ধে সরাসরি যুদ্ধের মুখে রয়েছে।’ বৈঠকে আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘এটি মূল্যবোধের বিষয়, একটি ব্যতিক্রমী ব্যবস্থা বা অন্তর্ভুক্তিমূলক ব্যবস্থার মূল্যবোধ। আমরা ঐক্য, সংহতি, ও ত্যাগের বোধের প্রতি দৃঢ় প্রতিজ্ঞ এবং আমরা কিছুতেই ছাড় দেব না।’ এর আগে শুক্রবার দিনের শুরুতে মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিনের সঙ্গে পেন্টাগনে বৈঠক করেছেন আশরাফ গনি। সেখানে যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা বিশ্লেষণকে উদ্ধৃত করে সেনা প্রত্যাহারের ৬ মাসের মধ্যেই তালেবানের হাতে তার সরকারের পতন হওয়ার সম্ভাবনা আছে বলে সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে আফগান প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘আগেও এ ধরনের অনেক ভবিষ্যৎবাণী ছিল এবং সেগুলো মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে।’ আফগানিস্তান থেকে সৈন্য সরাতে শুরু করে দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র-সহ সামরিক জোট ন্যাটো বাহিনী। বাইডেন জানিয়েছেন, চলতি বছরের ১১ সেপ্টেম্বরের মধ্যে দেশটি থেকে সকল বিদেশী সেনা সরিয়ে নেওয়া হবে। ২০২০ সালে তালেবানের সঙ্গে স্বাক্ষরিত চুক্তি মেনেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে ওয়াশিংটন। অপরদিকে, আগামী ১১ সেপ্টেম্বরের পর আফগানিস্তানে মার্কিন সেনা অবস্থান করলে এর প্রতিক্রিয়া দেখানোর অধিকার আছে তালেবানের। কূটনীতিকদের নিরাপত্তার স্বার্থে দেশটিতে ৬৫০ জন সৈন্য থেকে যাওয়ার প্রসঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রকে সতর্ক করছে সশস্ত্র গোষ্ঠীটি। মার্কিন কর্মকর্তার বরাতে সংবাদ সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস-এপি জানিয়েছে, আফগানিস্তান থেকে মূল সেনা সরিয়ে নেওয়ার পর কূটনীতিকদের নিরাপত্তায় ৬৫০ জন সৈন্য দেশটিতে রেখে দিবে ওয়াশিংটন। যদিও এতদিন যুদ্ধ বিধ্বস্ত আফগানিস্তান থেকে সব মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের কথা বলে আসছিল হোয়াইট হাউজ। ইতোমধ্যে অনেক সেনাকেই প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে। তালেবান গোষ্ঠীর সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী কাবুলে আর মার্কিন সেনা রাখতে চাইছেন না মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনও। তাই আগামী ১১ সেপ্টেম্বরের মধ্যেই সব মার্কিন সেনাকে ফিরিয়ে নিতে নির্দেশনা দিয়েছেন তিনি। বেঁধে দেওয়া সময়ের পরও সাড়ে ছয়শ মার্কিন সেনা আফগানিস্তানে থেকে যাওয়ার মন্তব্যে ক্ষোভ জানিয়েছে তালেবান। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরাকে এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে তালেবানের মুখপাত্র সুহেল শাহীন বলেন, নির্ধারিত সময়ের পর কোন মার্কিন সেনা আফগানিস্তানে অবস্থান করলে এর প্রতিক্রিয়া দেখানোর অধিকার তালেবানের আছে। তিনি বলেন, আমেরিকা যদি তা করে তবে দীর্ঘ ২০ বছরের যুদ্ধ বন্ধে কাতারের দোহায় ২০২০ সালের ফেব্রয়ারিতে ওয়াশিংটন ও তালেবানের মধ্যে যে চুক্তি হয়েছে তা স্পষ্ট লঙ্ঘন হবে। শাহীন সংবাদমাধ্যমটিকে আরও বলেন, আমেরিকার পক্ষের সঙ্গে দীর্ঘ ১৮ মাস ধরে আলোচনার পর আমরা একটি চুক্তিতে পৌঁছাই। সামরিক বাহিনী, উপদেষ্টা এবং ঠিকাদারদের প্রত্যাহার করে নিতে একমত এবং প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়েছে তারা’। তার মতে, ‘ওয়াশিংটন এর ব্যতিক্রম কিছু করলে তা হবে চুক্তির লঙ্ঘন। আমরা পুরোপুরি জবাব দেওয়ার অধিকার রাখি’। আমরা আমাদের প্রতিশ্রুতি মেনে চলছি। মার্কিন সেনা প্রত্যাহারে কোনো হামলা করিনি›। সম্প্রতি আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের মধ্যেই বিভিন্ন স্থান দখল ও হামলার ঘটনা বেড়েছে। এমনকি আফগান-তাজিকিস্তানের প্রধান সীমান্তও দখলে নিয়েছে তালেবান গোষ্ঠী। এ অবস্থায় বিভিন্ন দেশ উদ্বেগ জানিয়ে বলছে, মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের পর তালেবানের হামলা ও আক্রমণ আরও বাড়বে। রয়টার্স, আল-জাজিরা।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন