শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

ইউরোপা সম্পর্কে বিস্ময়কর খবর জানাবে নাসা

প্রকাশের সময় : ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

ইনকিলাব ডেস্ক : নাসা ইউরোপার ব্যাপারে বড় খবর জমিয়ে রেখেছে। তারা যাকে ‘ইউরোপার বিস্ময়কর কর্মকা- বিষয়ে সাক্ষ্য প্রমাণ’ বলে আখ্যায়িত করেছে সে ব্যাপারে সোমবার মিডিয়ার সাথে কথা বলবে। তারা কি অ্যালিয়েনস নিয়ে কথা বলবে? না, অ্যালিয়েনস নয়।
কিন্তু আমরা কীভাবে জানব এটা অ্যালিয়েনস নয়? হাবল মহাকাশ টেলিস্কোপ থেকে নতুন তথ্য আসছে। এটা যদি অ্যালিয়েন হয় তাহলে আমরা পাগল হয়ে যাব। যদি তারা হাবল দিয়ে দেখার মত অনেক বড় হয়, তাহলে আগুন দিয়ে তা হত্যা করতে হবে।
সোমবারের কথাবার্তার কেন্দ্রবিন্দু হবে চাঁদে ভূ-গর্ভস্থ মহাসাগরের সম্ভাব্য উপস্থিতি। বিজ্ঞানীদের বিশ^াস যে ইউরোপার বরফাবৃত উপরিভাগের নিচে একটি মহাসাগর রয়েছে। এ ব্যাপারে শক্ত প্রমাণ আছে, তবে তারা এখনো তার অস্তিত্ব সুনির্দিষ্টভাবে নিশ্চিত করতে পারেননি।
উদাহরণ স¦রূপ ২০১৩ সালে হাবল কি চিহ্নিত করেছিল তার উল্লেখ করা যায়। তখন ইউরোপার দক্ষিণ মেরু অঞ্চলে জলীয় বাষ্প চিহ্নিত করা হয়েছিল। সাউথওয়েস্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউট থেকে লোরেনজা রথ সে সময় বলেছিলেনঃ “যতদূর মনে হয়, জলীয় বাষ্পের সহজ ব্যাখ্যা হচ্ছে যে এটা উত্থিত হয়েছে ধোঁয়া থেকে। এ ধোঁয়া যদি ভূগর্ভস্থ মহাসাগরের পানির সাথে সংশ্লিষ্ট হয় তাহলে আমরা নিশ্চিত যে তা ইউরোপার কঠিন পৃষ্ঠের নিচে রয়েছে। তার অর্থ দাঁড়ায় এই যে ভবিষ্যৎ অনুসন্ধানকালে বরফের স্তর ড্রিলিং না করেই ইউরোপার সম্ভাব্য বসবাসযোগ্য পরিবেশের রাসায়নিক বিন্যাস সরাসরি অনুসন্ধান করা সম্ভব হবে। আর তা ভীষণ উত্তেজনাকর।”
রথ বলেন, জলীয় বাষ্পের ধোঁয়া আড়াআড়ি লম্বা ফাটল থেকেও আসতে পারে।
তবে ২০১৪ সালের ক্যাসিনি উপাত্তের বিশ্লেষণে জলীয় বাষ্পের ধোঁয়া দেখা যায় না। (সূত্রঃ ক্যাসিনির শনি পরিক্রমণ। এ উপাত্ত বিশ্লেষণ ছিল শনি গ্রহে পৌঁছার আগে ২০০১ সালে বৃহস্পতি গ্রহ অতিক্রমণ থেকে।) সে সময় ল্যারি এসপোসিটো বলেছিলেন, আমরা ইউরোপার কাছে পানির কোনো প্রমাণ পাইনি যদিও আমরা তাৎক্ষণিকভাবে আমরা ইউরোপার ধোঁয়া থেকে এটা উত্থিত হয়েছে বলে শনাক্ত করেছি। ল্যারি ছিলেন ক্যাসিনির ইউভিআইএস যন্ত্রপাতি তদারকির দলনেতা।
হাবল ও ক্যাসিনির পর্যবেক্ষণে পার্থক্য কেন? এটা সময়ের জন্য হতে পারে। ইউরোপা শনির উপগ্রহ এনসেল্যাডাসের মত নয়। এনসেল্যাডাসের দক্ষিণ মেরু অঞ্চলে আগ্নেয় উদ্গিরণ অব্যাহত রয়েছে। ইউরোপায় সম্ভাব্য উদ্গিরণ নেই।
আসলে হাবলের ২০১৩ সালের পর্যবেক্ষণ এদিকেই নির্দেশ করে। টেলিস্কোপ জলীয় বাষ্প শুধু তখনি দেখতে পায় যখন ইউরোপা বৃহস্পতি থেকে সর্বোচ্চ দূরত্বে থাকে। বিজ্ঞানীদের বিশ^াস যে অনেক বড় গ্যাসীয় দানবের মহাকর্ষীয় টানের সাথে বৃহস্পতির কিছু করার আছে।
তিনি বলেন, আমি আরেকটি জলীয় বাষ্প শনাক্তের ইউরোপা বিষয়ক সোমবারের ঘোষণাকে চ্যালেঞ্জ করছি। এটা দেখতে অনেকটাই উপরিভাগের মত নয়, কিন্তু এ খবরের বিরাট প্রভাব আছে। আমরা জানি, যেখানে পানি আছে সেখানেই শুধু জীবন থাকা সম্ভব। ইউরোপায় ভূগর্ভের নীচে একটি সক্রিয় মহাসাগর থাকার নিশ্চয়তা মহাকাশ অভিযান তালিকার শীর্ষ থেকে চাঁদকে সরিয়ে দেবে।
২০২০ সালের দিকে নাসা ইউরোপায় একটি মিশন পাঠানোর পরিকল্পনা করেছে।
নাসা জানে যে পুনরায় অভিযানের ক্ষেত্রে ইউরোপা একটি আগ্রহজনক লক্ষ্য। হাবল কর্তৃক ভূগর্ভস্থ মহাসাগরের কথা নিশ্চিত করার খবর তা আরো বাড়িয়ে দেবে। নাসা ইতোমধ্যেই বরফাবৃত চাঁদে অভিয়ানের জন্য একটি মহাকাশযান নির্মাণে ব্যস্ত হয়ে পেেড়ছে।
২০২০ সালের দিকে উৎক্ষেপণযোগ্য এ মহাকাশযান বৃহস্পতির চারপাশে পরিক্রমণ করবে এবং বরফাবৃত চাঁদ কয়েক ডজন বার অতিক্রম করবে। কথা হচ্ছে, ইউরোপায় কি জীবন গঠনের মত উপাদান আছে? পরিক্রমণকারী মহাকাশযান সে কথাই জানাবে।
বরফ ভেদকারী রাডার, তাপ যন্ত্রপাতি ও আরা বহু যন্ত্রপাতি সজ্জিত হয়ে ৪৫ বার অতিক্রমণের সময় মহাকাশযান সতর্কতার সাথে ইউরোপার উপরিভাগ পর্যবেক্ষণ করবে। নাসার মতে, এ সময় উচ্চতা থাকবে ১৭০০ মাইল থেকে মাত্র ১৬ মাইলের মধ্যে।
পরবর্তী সোমবার হাবল জলীয় বাষ্পের অস্তিত্ব নিশ্চিত করবে, কিন্তু এটি হবে সেই মহাকাশযান যা ইউরোপার বরফাবৃত আবরণ ভেঙ্গে ফেলবে ও তার গোপন রহস্য প্রকাশ করবে। সূত্র নিউজ লেজ।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন