ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপে শেষ ষোল’র লড়াইয়ে পর্তুগালকে কাঁদিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে জায়গা করে নিল বেলজিয়াম। রোববার সেভিয়ার লা কার্তুহায় বাংলাদেশ সময় রাত ১টায় শুরু হওয়া ম্যাচে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন পর্তুগালকে ১-০ গোলে হারিয়ে শেষ আটের টিকিট কাটে বেলজিয়ানরা।
তোরগান হ্যাজার্ড ডি-বক্সের বাইরে থেকে অসাধারণ এক গোল করে বেলজিয়ামের জয় এনে দেন। এই হারে টুর্নামেন্টের শিরোপা ধরে রাখার মিশন শেষ হলো পর্তুগালের। ম্যাচের বেশির সময় আধিপত্য বিস্তার করে খেলেও কাঙ্ক্ষিত গোলের দেখা পায়নি ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর দল। ফিফা র্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষ দল বেলজিয়াম সুযোগের স্বদ ব্যবহার করে ঠিকই গোল আদায় করে নেয়।
ম্যাচে ভুল করা যাবে না।ছোট ভুলে আসর থেকে বিদায় নিতে হতে পারে। এই মন্ত্র মাথায় রেখে মাঠে নেমেছিল বেলজিয়াম ও পর্তুগাল।ম্যাচের শুরু থেকে দু’দল বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করলে ফুটবল হারায় গতি। প্রথমার্ধে বল দখলের লড়াইয়ে দু’দল সমান তালে এগোলেও আক্রমণে কিছুটা এগিয়ে ছিল পর্তুগাল।
প্রথম ৪০ মিনিটে যে ক’টি সুযোগ তৈরি হয়, তার সবগুলোই পর্তুগিজদের। প্রতিপক্ষের রক্ষণে তারা প্রথম ভীতি ছড়ায় ৬ মিনিটে। তবে ফাঁকায় বল পেয়ে ডি-বক্সে ঢুকে দিয়োগো জটা যে শটটি নেন তা লক্ষ্যে ছিল না। ২৫ মিনিটে বেলজিয়ান গোলরক্ষক থিবো কোর্তোয়ার পরীক্ষা নেন রোনালদো। তার ফ্রি কিক ঝাঁপিয়ে পড়ে ফিরিয়ে দেন কোর্তোয়া। ধীরে ধীরে নিজেদের গুছিয়ে পাল্টা আক্রমণে যায় বেলজিয়াম।
ম্যাচের ৪২ মিনিটে তারা প্রথমবার উল্লেখযোগ্য আক্রমণে যায়। আর একবারেই বাজিমাত। তমা মুনিয়ের পাস ডি-বক্সের বেশ বাইরে পান তোরগান হ্যাজার্ড। বল ধরে একটুখানি আড়াআড়ি এগিয়ে বুলেট গতির শটে গোল করে বেলজিয়ানদের আনন্দে ভাসান তিনি (১-০)। ব্যাস ওই এক গোলই শেষ পর্যন্ত মাচের ভাগ্য গড়ে দেয়। এগিয়ে থেকে বিরতিতে গেলেও পায়ে ব্যথা পাওয়ায় দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে মাঠ ছেড়ে যান বেলজিয়ামের গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড় কেভিন ডে ব্রুইনে। প্রথমার্ধের মতো বিরতির পরও প্রতিপক্ষকে চাপে রেখে খেলতে থাকে পর্তুগাল। ৫৮ মিনিটে দারুণ একটি সুযোগও পায় তারা। কিন্তু রোনালদোর পাস পেনাল্টি স্পটের কাছে পেয়ে উড়িয়ে মারেন পর্তুগালের লিভারপুল ফরোয়ার্ড জটা।
৭০ থেকে ৮০ মিনিট পর্যন্ত কয়েকটি ফাউলের ঘটনায় ম্যাচে উত্তেজনা ছড়ায়। পর্তুগালের এক ও বেলজিয়ামের দুজন হলুদ কার্ডও পান। পরপর দুই মিনিটে দারুণ দুটি সুযোগ পায় পর্তুগিজরা। তবে রুবেন দিয়াসের হেড গোলরক্ষক ফেরানোর পর রাফায়েল গেররোরর শট বাধা পায় গোল পোস্টে।
ম্যাচের বাকি সময়ও পর্তুগাল আধিপত্য করে খেললে সম্ভাবনা উঁকি দেয়।কিন্তু বেলজিয়ামের রক্ষণভাগের দারুণ পারফরমেন্স সমতায় ফিরতে দেয়নি ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোদের। নিজেদের রক্ষণ জমাট রেখেই জয় নিশ্চিত করে বেলজিয়াম। ফলে ম্যাচ শেষে উচ্ছ্বাসে মেতে ওঠে রাশিয়া বিশ্বকাপের সেমিফাইনালিস্টরা। আগামী শুক্রবার জার্মানির মিউনিখে কোয়ার্টার ফাইনালে ইতালির মুখোমুখি হবে বেলজিয়াম।
এটাই এবারের ইউরোয় রোনালদোর শেষ ম্যাচ।শেষটা ভীষণ হতাশার হলেও ব্যক্তিগত পারফরম্যান্সের বিচারে এই আসর স্মরণীয় হয়ে থাকবে ৩৬ বছর বয়সী এই তারকা ফুটবলারের রোনালদোর ক্যারিয়ারে।
গ্রুপ পর্বের প্রথম ম্যাচে তিনি গড়েন ইউরোর সর্বোচ্চ গোলদাতার রেকর্ড, সর্বাধিক ম্যাচ খেলার রেকর্ড। গোলের দেখা পান পরের ম্যাচেও। আর শেষ রাউন্ডে জোড়া গোল করে স্পর্শ করেন আন্তর্জাতিক ফুটবলে আলি দাইয়ের ১০৯ গোলের বিশ্ব রেকর্ড।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন