বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

ধামরাইয়ে বানিজ্যিক বৈদ্যুতিক মিটার চুরির হিড়িক বিপাকে গ্রাহকরা

ধামরাই (ঢাকা) উপজেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২৮ জুন, ২০২১, ৪:৩৪ পিএম

ঢাকার ধামরাইয়ের মিল কারখানার বৈদ্যুতিক বানিজ্যিক/ শিল্প মিটার চুরির হিড়িক পড়েছে। চোরেরা থ্রি ফেইজ মিটার চুরি করে গ্রাহকদের প্রতারনা করে বিকাশের মাধ্যমে হাতিয়ে নিচ্ছে হাজার হাজার টাকা। গত এক মাসে প্রায় শকাধিক বৈদ্যুতিক মিটার চুরি হয়েছে বলে জানা গেছে। এ বিষয়ে ধামরাই থানায় কয়েকটি সাধারণ ডাইরী ও অভিযাগ হয়েছে। অভিযোগ হলেও পুলিশ কাউকে গ্রেফতার করতে পরেনি।

বর্তমানে মিটার চুরির বিষয়টি সারা উপজেলায় এখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে পড়েছে।

বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় রাইচমিল / কারখানার থ্রি ফেইজের বৈদ্যুতিক মিটার, ট্রান্সমিটার চুরি হচ্ছে প্রতিনিয়ত। চোরেরা মিটার চুরি করে মিটারের বোর্ডের কাছে কাগজে মোবাইল নম্বর লিখে দিয়ে আসছে। ওই মোবাইল ফোন নম্বরে ফোন দিলে মিটার পাওয়া যাবে বলে লিখে আসে। এ ঘটনায় চলতি মাসে থানায় কয়েকটি চুরির সাধারণ ডাইরী ও অভিযোগ দায়ের হয়েছে। তবে পুলিশের কোন তৎপরতা না থাকায় চোরেরা থেমে নেই। প্রতি রাতেই তারা কারো না কারো মিটার চুরি হচ্ছে।

কুশুরা ইউনিয়নের কাঠালিয়া গ্রামের হাজী আব্দুল মান্নান বলেন, কয়েকদিন আগে তার রাইচ মিলের মিটারটি রাতে চুরি হয়। এসময় চোরেরা মিটারের কাছে একটি কাগজে মোবাইল নম্বর ও একটি কয়েক সংখ্যার কোড নম্বর দিয়ে যায়।
ওই মোবাইল নম্বরে ফোন দিলে বিকাশে ১০ হাজার টাকা পাঠাতে বলে। টাকা দিলেই মিটার পাওয়া যাবে। পরে প্রথমে ৬ হাজার দ্বিতীয় বার আরো ২ হাজার টাকা পাঠায়। এ টাকা পাঠানোর পরে বলে দিয়েছে মিটারটি বেশ কিছু দূরে একটি খুঁটির মধ্যে বাঁধা আছে।

একই কথা জানালেন বালিয়া ইউনিয়নের বনেরচর গ্রামের পোল্ট্রি ব্যাবসায়ী সুলতান হোসেন, কুশুরা ইউনিয়নের শাসন গ্রামের আনোয়ার হোসেন তার রাইচ মিলের মিটার ও চুরি হলে বিকাশে টাকা পাঠিয়ে সে মিটার ফেরত পায়।
আবার অনেকে চোরদের দেয়া বিকাশ নাম্বারে টাকা না পাঠিয়ে থানায় জিডি করে বিদ্যুৎ অফিস থেকে অর্ধেক মূল্য দিয়ে নতুন মিটার নিয়েছে।


এব্যাপারে ধামরাই জোনাল অফিসের ডিজিএম খালিদ মোঃ সালাহ উদ্দিন জোয়ারদার বলেন, অনেক গ্রাহকের মিটার চুরি হয়েছে। মিটার চুরি বন্ধে গ্রাহকদের সচেতন করার জন্য এলাকায় মাইকিং করেছি। শুধু তাইনয় থানায় অভিযোগ পর্যন্ত দিয়েছি।

কুশুরা জোনাল অফিসের ডিজিএম একে আব্দুল্লাহ আল নোমান বলেন, এলাকায় মিটার চুরি একটি মহামারি আকার ধারণ করেছে। এ পর্যন্ত ২৬ টি ট্রান্সফরমার ও ১৩ টি মিটার চুরি হয়েছে। মিটার চুরি বন্ধে এলাকায় মাইকিং করেছি গ্রাহকদের সচেতন করার জন্য। আবার থানায় অভিযোগ ও দেয়া হয়েছে।
এভাবে প্রতারণা চক্র মিটার খোলে নিয়ে ধামরাই থেকে প্রায় কয়েক লক্ষাধিক টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। তবে কটি কারখানার সিসি ক্যামেরায় চোরের চেহারা ধরা পড়েছে বলে জানা গেছে।

অভিযোগকারীরা জানান, চুরি হওয়া মিটার না নিয়ে নতুন করে পল্লী বিদ্যুৎ অফিস থেকে মিটার নিলে সে মিটারও পরের দিন চুরি হয়ে যাবে বলে হুমকি দিয়ে আসছে।
আর চোরের দেওয়া নম্বরে টাকা দিলে চুরি হওয়া মিটার আশেপাশে খরের পালা ও ধান ক্ষেতে পাওয়া যায়। আর চুরি হয় না। গ্রাহকদের এমনি অভিযোগ রয়েছে ওই চোরদের বিরুদ্ধে ।

বিদ্যুতের কর্মকর্তারা মিটার চুরির ঘটনা স্বীকার করে বলেন, মিল কারখানার থ্রি ফেইজ মিটার চুরির বিষয়ে মিল মালিকসহ আমরা উদ্ধিগ্ন। প্রতিটি চুরির বিষয়ে উর্দ্ধতন কতৃপক্ষ ও প্রশাসনকে লিখিত ভাবে অবহিত করা হয়েছে।

এ ব্যাপারে ধামরাই থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ আতিকুর রহমান বলেন, এ বিষয়ে ২/৩ জি ডি হয়েছে। চোরের রেখে যাওয়া মোবাইল নম্বর তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে অনুসন্ধান চলছে। আইনী ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধী।
উল্লেখ গত ৪ দিন আগে ধামরাইয়ে বালিয়া আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশে পল্লী বিদ্যুতের অভিযোগ কেন্দ্র ও সাবষ্টেশন অফিসে পোষাক পরিহিত ডিবি পুলিশ পরিচয়ে দুর্ধর্ষ ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। ডাকাতরা অফিসের স্টাফদের অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে হাত পা বেধে ও মারধর করে ৬টি ট্রান্সফরমার,তার ,কম্পিউটার, নগদ টাকা, ও মোবাইল সেট কাপর-চোপরসহ প্রায় ৮ লাখ টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে গেছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন