শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

মুরাদনগরে ভ্রাম্যমান আদালতের জরিমানা

হোটেল-বেকারীগুলোতে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাবার তৈরী ও চড়া মূল্যে বিক্রির অভিযোগ

দেবিদ্বার (কুমিল্লা) উপজেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২৯ জুন, ২০২১, ৯:৪০ পিএম

কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলা সদরের বাজারের প্রবেশ মুখে অবস্থিত আল-মদিনা বেকারীতে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করছেন, সহকারী কমিশনার (ভূমি) সাইফুল ইসলাম কমল।


কুমিল্লা জেলার মুরাদনগর উপজেলা সদরের বাজারের প্রবেশ মুখে আল-মদিনা বেকারী ও হোমনা রোডে একই মালিকের আল-মদিনা রেস্টুরেন্ট। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে ইফতারি ও অন্যান্য পণ্য উৎপাদনের অপরাধে আল-মদিনা বেকারীর মালিক হানিফ মিয়াকে গত রমজানে ভ্রাম্যমান আদালতে জরিমানা গুনতে হয়। একই অপরাধে তাকে গতকাল মঙ্গলবারও ভ্রাম্যমান আদালতে জরিমানা করেন, সহকারী কমিশনার (ভূমি) সাইফুল ইসলাম কমল। বার বার জরিমানা করার পরেও সে তার নিজের খেয়াল খুশীমতো অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে নি¤œমানের দ্রব্যসামগ্রী উৎপাদন করে চড়া মূল্যে বিক্রি করায় সচেতন মহলের মাঝে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।

অপর দিকে উপজেলা রোডে অবস্থিত হোটেল ডায়না। তার মালিক মনির হোসেন। অন্য সকল হোটেলে এককাপ চায়ের মূল্য ৫ টাকা হলেও হোটেল ডায়নায় ১০ টাকা। পরটার মূল্যও ১০ টাকা। প্রথমে সাইজ বড় হলেও বর্তমানে পরটার সাইজ ৫ টাকার সমতুল্য। সাম্প্রতিক তিনি ৫ টাকার সিঙ্গারা ও সমুছার মূল্য বৃদ্ধি করে করেছেন ১০ টাকা। হুট হাট নিজের খেয়াল খুশী মতো সে খাদ্যদ্রব্যের দাম বৃদ্ধি করে। তাকে দেখে অন্য হোটেল মালিকরাও দাম বৃদ্ধিতে উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন। তাছাড়া বিভিন্ন মুখরোচক খাবারের তালিকা করে চড়া মূল্য নিচ্ছে রেড চিলি ও কয়েকটি ফাস্ট ফুডের দোকান। এ ভাবে অভিনব কায়দায় মানুষের পকেট কাটায় হোটেলে খেতে আসা লোকজনের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে।

উপজেলা সদরের জাকির হোসেন বলেন, আল-মদিনা নাম দিয়ে ধর্মীয় অনূভূতিকে পূঁজি করে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে নিম্নমানের খাদ্য সামগ্রী তৈরী করে চড়া মূল্যে বিক্রি করছে। বিএনপির আমলে এক যুবদল নেতার কাছে মেয়ে বিয়ে দিয়ে একচেটিয়া ব্যবসা শুরু করে আল-মদিনার মালিক হানিফ মিয়া। গত কয়েক দশকেরও বেশী সময় এ ব্যবসা করে একাধিক বাড়ি ও প্রচুর ধন-সম্পদের মালিক হন তিনি। বর্তমান সময়ে ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে প্রশাসন জরিমানা করলেও সুধরাচ্ছেন না বেকারী ও হোটেল মালিক হানিফ মিয়া।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ডায়না হোটেলে খেতে আসা বেশ কয়েকজন কাস্টমার বলেন, খাদ্য দ্রব্যের মূল্য তালিকা নাই তার হোটেলে। কয়দিন পর পর নিজের মনগড়া মতো খাদ্যের দাম বাড়াচ্ছে সে। তাকে দেখে অন্য হোটেল মালিকরাও দাম বাড়ায়। আমরা এখন জিম্মি হয়ে গেছি তাদের কাছে।

আল-মদিনা হোটেলের মালিক হানিফ মিয়ার কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে অনুমতি নিয়েই আমি ব্যবসা করে যাচ্ছি। বিভিন্ন খাদ্যসামগ্রীর প্যাকেটে মেয়াদ উর্ত্তীণের তারিখ নেই, তাছাড়া গত ২ মাসে প্রশাসন আপনাকে ২ বার জরিমানা করেছে কেন এমন প্রশ্নে? তিনি বলেন, সাক্ষাতে আপনার সাথে কথা বলব বলে মুঠো ফোনের লাইন কেটে দেন।

ডায়না হোটেলের মালিক মনির হোসেনের মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও সংযোগ না পাওয়ায় এ বিষয়ে বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্যানিটারী ইন্সপেক্টর খালেদ মাহমুদ দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, আল-মদিনা বেকারীর বিভিন্ন অনিয়ম ও ডায়না হোটেলের অতিরিক্ত মূল্য বৃদ্ধির বিষয়টি আমার নলেজে আছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে প্রতিবেদনের মাধ্যমে বিষয়টি অবহিত করা হবে।

মুরাদনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অভিষেক দাশ দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, অনিয়মের কারণে আল-মদিনা বেকারীকে দুইবার জরিমানা করেছি। এতেও যদি সে না সুধরায় তাহলে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

কুমিল্লা জেলার ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মো. আছাদুল ইসলামের মুঠোফোনে যোগাযোগ করে না পাওয়ায় এ বিষয়ে বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন