ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপে প্রথমবার নকআউটের পরীক্ষায় পাশ করলো ইউক্রেন। মঙ্গলবার (২৯ জুন) গ্লাসগোর হ্যাম্পডেন পার্কে অতিরিক্ত সময়ের খেলায় জিতে কোয়ার্টার ফাইনালে উঠলো তারা, গড়লো ইতিহাস। ১৯৯২ সালের সেমিফাইনালিস্ট সুইডেনকে ২-১ গোলে হারিয়ে প্রথম নকআউটে জিতে গেলো ইউক্রেন। আগামী শনিবার রোমে শেষ আটে তাদের প্রতিপক্ষ ইংল্যান্ড।
প্রথম আক্রমণটা ছিল সুইডেনের কাছ থেকে। ৭ মিনিটে বক্সের মধ্যে বল নিয়ে কুলুসেভস্কি জায়গা বের করে গোলের দিকে শট নেন। স্টেপানেঙ্কো খুব দ্রুত ওই প্রচেষ্টা ব্লক করেন। কিছুক্ষণ পরই সুইডিশ গোলকিপার ওলসেনকে পরীক্ষা দিতে হয়। ১১ মিনিটে ইয়ারমোলেঙ্কোর সঙ্গে ওয়ান-টু পাসে ইয়ারেমচুকের শক্তিশালী শট দারুণভাবে ঠেকান তিনি। শুরুর দিকে এই দুটিই ছিল দুই দলের চোখে পড়ার মতো গোল প্রচেষ্টা।
তবে ম্যাচ ঘড়ির কাঁটা আধঘণ্টায় না যেতেই স্কোরে আসে পরিবর্তন। ২৭ মিনিটে ডান দিক থেকে ইয়ারমোলেঙ্কোর চতুর ক্রস, প্রতিপক্ষ ডিফেন্ডারদের নজর এড়িয়ে বক্সে ঢুকেই লাফানো বলে বাঁ পায়ের শট নেন ওলাক্সান্ডার জিনচেঙ্কো। শট এতটাই শক্তিশালী ছিল যে, ওলসেনের বাঁ হাতে লাগলেও জালে জড়ায় বল। ২৪ বছর ১৯৬ দিন বয়সে গোল করে ইউরোতে দেশের সর্বকনিষ্ঠ গোলদাতা হলেন জিনচেঙ্কো।
বিরতির আগেই সমতা ফেরায় সুইডেন। এমিল ফর্সবার্গের ৩০ গজ দূর থেকে নেওয়া শট ইউক্রেন খেলোয়াড় জাবারনির গোড়ালিতে লেগে জালে জড়ায়। এই ইউরোতে চার গোল হলো ফর্সবার্গের, কেবল কেনেট এডারসন (৫) কোনও বড় টুর্নামেন্টে (১৯৯৪ বিশ্বকাপ) সুইডেনের জার্সিতে তার চেয়ে বেশি গোল করেছেন।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে দুই দলের শটই আঘাত করে গোলপোস্টে। ৫৫ মিনিটে ইউক্রেনের সিডোরচুক, পরের মিনিটে ফর্সবার্গকে হতাশ করে গোলপোস্ট। ৬০ মিনিটে একডাল একা ইউক্রেন গোলকিপার বুশকানকে পেয়েও গোলের সুযোগ নষ্ট করেন। তার শটে বল চলে যায় গোলবারের পাশ দিয়ে।
৬৯ মিনিটে ফর্সবার্গ বাঁ দিক দিয়ে ইউক্রেনের বক্সে ঢুকে পড়েন এবং দুই তিন জন ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে শট নেন লক্ষ্যে। কিন্তু গোলবারে ফের আঘাত করে বল। পোল্যান্ড-স্পেন ম্যাচের পর এই আসরে দ্বিতীয়বার একই ম্যাচে তিনবার গোলপোস্টে বল লাগার ঘটনা ঘটলো। ৮৯ মিনিটে কুলুসেভস্কি ডানপ্রান্ত দিয়ে বক্সে ঢুকে আড়াআড়ি শট নেন, তা ব্লক করে ইউক্রেনকে রক্ষা করেন জাবারনি।
১-১ গোলে শেষ হয় নির্ধারিত সময়ের খেলা। অতিরিক্ত সময়ের শুরুতে বড় ধাক্কা খায় সুইডেন। ৯৮ মিনিটে বল বিপদমুক্ত করতে গিয়ে ভেসেডিনকে ফাউল করেন ড্যানিয়েলসন। প্রথমে রেফারি হলুদ কার্ড দিলেও ভিএআর যাচাই করে লাল কার্ড দেখান। ১০ জনের দল নিয়ে বাকি সময় সামাল দিচ্ছিল সুইডিশরা। দ্বিতীয়ার্ধে যোগ করা হয় তিন মিনিট। ম্যাচ টাইব্রেকারে নিষ্পত্তি হওয়ার আভাস দিচ্ছিল, ঠিক তখনই অসাধারণ গোল। যোগ করা সময়ের দ্বিতীয় মিনিটে বাঁ উইং থেকে জিনচেঙ্কোর মাপা ক্রস, হেড করতে ভুল করেননি ডভবিক। জালে বল জড়াতেই জয়ের আনন্দে মেতে ওঠে ইউক্রেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন