করোনাভাইরাস বিস্তারিত রোধে দেশে সার্বিক কার্যাবলি ও চলাচলে বিধি-নিষেধ আরোপ করা হয়েছে। বুধবার জারি হওয়া এ সম্পর্কিত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, সরকারি নির্দেশনা বাস্তবায়নে পুলিশ-বিজিবি ও অন্যান্য বাহিনীর সঙ্গে মাঠে থাকবে সেনাবাহিনীও।
১ জুলাই সকাল ৬টা থেকে ৭ জুলাই মধ্যরাত পর্যন্ত বিধি-নিষেধের প্রজ্ঞাপনে ২১টি নির্দেশনা।
সেখানে বলা হয়, ‘আর্মি ইন এইড টু সিভিল পাওয়ার’ বিধানের আওতায় মাঠ পর্যায়ে কার্যকর টহল নিশ্চিত করার জন্য সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ প্রয়োজনীয় সংখ্যক সেনা মোতায়েন করবে। জেলা ম্যাজিস্ট্রেট স্থানীয় সেনা কমান্ডারের সঙ্গে যোগাযোগ করে বিষয়টি নিশ্চিত করবেন।
আরও বলা হয়, জেলা ম্যাজিস্ট্রেট জেলা পর্যায়ে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নিয়ে সমন্বয় সভা করে সেনাবাহিনী, বিজিবি, পুলিশ, র্যাব ও আনসার নিয়োগ ও টহলের অধিক্ষেত্র, পদ্ধতি ও সময় নির্ধারণ করবেন। সে সঙ্গে স্থানীয়ভাবে বিশেষ কোনো কার্যক্রমের প্রয়োজন হলে সে বিষয়ে পদক্ষেপ নেবেন। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়/বিভাগসমূহ এ বিষয়ে মাঠপর্যায়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করবে।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় মাঠপর্যায়ে প্রয়োজনীয় সংখ্যক নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগের বিষয়টি নিশ্চিত করবে।
আরও বলা হয়, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক তার পক্ষে জেলা প্রশাসন ও পুলিশ বাহিনীকে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের প্রয়োজনীয় ক্ষমতা প্রদান করবেন।
প্রজ্ঞাপনের শুরুতেই বলা হয় সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি অফিস এ সময় বন্ধ থাকবে। বিমানসহ সড়ক, রেল, নৌ পথে গণপরিবহন ও সকল প্রকার যন্ত্রচালিত যানবাহন বন্ধ থাকবে।
আরও জানানো হয়, শপিংমল, মার্কেটসহ সকল প্রকাশ দোকানপাট বন্ধ থাকবে। তবে অত্যাবশ্যকীয় সেবাসমূহ চালু থাকবে। সকাল ৮টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত রেস্তোরাঁগুলো পার্সেল সার্ভিস দিতে পারবে। কাঁচা বাজার ও নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি স্বাস্থ্য বিধি মেনে সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত উন্মুক্ত স্থানে ক্রয়-বিক্রয় করা যাবে।
তবে অফিস বন্ধ থাকলেও ব্যতিক্রম রয়েছে শিল্প-কারখানার ক্ষেত্রে। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, শিল্প-কারখানাসমূহ স্বাস্থ্য বিধি অনুসরণপূর্বক নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় চালু থাকবে।
এ সময় বন্দরসমূহ ও সংশ্লিষ্ট অফিসে নিষেধাজ্ঞার বাইরে থাকবে।
টিকা কার্ড প্রদর্শন সাপেক্ষে টিকাগ্রহণের জন্য যাতায়াত করা যাবে।
আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চালু থাকবে এবং যাত্রীরা টিকিট প্রদর্শন করে গাড়ি ব্যবহারপূর্বক চলাচল করতে পারবেন।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, অতি জরুরি প্রয়োজনীয় ব্যতীত (ওষুধ ও নিত্য প্রয়াজনীয় দ্রব্যাদি ক্রয়, চিকিৎসা সেবা, মৃতদেহ দাফন/সৎকার ইত্যাদি) কোনোভাবে বাড়ির বাইরে বের হওয়া যাবে না। নির্দেশনা অমান্যকারীর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
আরও বলা হয়, আদালত ও ব্যাংক সংশ্লিষ্টদের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা জারি করবে। মসজিদে নামাজের বিষয়ে নির্দেশনা দেবে ধর্ম মন্ত্রণালয়।
জরুরি ও অত্যাবশ্যকীয় সেবার সঙ্গে জড়িতরা পরিচয়পত্র প্রদর্শন সাপেক্ষে এ সময় চলাচল করতে পারবে। প্রজ্ঞাপনে বলা হচ্ছে, আইনশৃঙ্খলা এবং জরুরি পরিষেবা, যেমন- কৃষি পণ্য ও উপকরণ (সার, বীজ, কীটনাশক, কৃষি যন্ত্রপাতি ও ইত্যাদি), খাদ্যশস্য ও খাদ্যদ্রব্য পরিবহন, ত্রাণ বিতরণ, স্বাস্থ্য সেবা, কভিড-১৯ টিকা প্রদান, রাজস্ব আদায় সম্পর্কিত কার্যাবলি, বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস/জ্বালানি, ফায়ার সার্ভিস, টেলিফোন ও ইন্টারনেট (সরকারি-বেসরকারি), গণমাধ্যম (প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়া), বেসরকারি নিরাপত্তা ব্যবস্থা, ডাক সেবা, ব্যাংক ফার্মেসি ও ফার্মাসিটিক্যালসসহ অন্যান্য জরুরি/অত্যাবশ্যকীয় পণ্য ও সেবার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অফিসসমূহের কর্মচারী ও যানবাহন প্রাতিষ্ঠানিক পরিচয়পত্র প্রদর্শন সাপেক্ষে যাতায়াত করতে পারবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন