পাকিস্তান শান্তির জন্য যুক্তরাষ্ট্রের অংশীদার হতে পারে। তবে কোনও অবস্থাতেই তারা সংঘাত বা যুদ্ধের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের অংশীদার হবে না। বুধবার পার্লামেন্টে দেয়া ভাষণে এই মন্তব্য করেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। তিনি বলেন, সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, দেশের সার্বভৌমত্বের সঙ্গে কোনও আপোস করা হবে না।
ইমরান খান বলেন, যুক্তরাষ্ট্র আফগানিস্তানে পরাজিত হয়েছে এবং তারা তাদের পরাজয়ের দায় আমাদের ওপর চাপিয়ে দেয়ার চেষ্টা চালিয়েছে। তিনি বলেন, আফগানিস্তানের মানুষ পাকিস্তানিদের ভাই। ফলে তাদের সম্পর্কে ওয়াশিংটনের চেয়ে ইসলামাবাদের বোঝাপড়া বেশি। তিনি আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্র তালেবানকে আলোচনার টেবিলে বসাতে পাকিস্তানকে বাধ্য করার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু কৌশলগত অবস্থানের চেয়ে আমরা বরং আফগানিস্তানের মানুষের সিদ্ধান্তকে সম্মান জানাবো। আমরা শুধু আফগানিস্তানে শান্তি চাই এবং এটিই আমাদের সবচেয়ে বড় স্বার্থ।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী বলেন, ইতোপূর্বে ‘সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধে’ যুক্তরাষ্ট্রকে সহায়তার পথ বেছে নিয়েছিল পাকিস্তান। কিন্তু পরে দেখা গেছে, আমরা আমাদের নিজেদের নাগরিকদেরই বন্দি করছি এবং পরবর্তীতে তাদের গুয়ানতানামো বে কারাগারে পাঠাচ্ছি। সাবেক প্রেসিডেন্ট পারভেজ মোশাররফ এটি স্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, ‘সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধে আমরা আমাদের ৭০ হাজার মানুষকে হারিয়েছি। ১৫০ বিলিয়ন ডলার নষ্ট করেছি।’
ইমরান খান জানান, যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে কথিত সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধের অংশ হিসেবে পাকিস্তানকে তার উপজাতীয় এলাকায় সেনা পাঠাতে বলা হয়েছিল। কয়েকশ’ লোককে তাড়া করার জন্য তাদের সেখানে পাঠানোর কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু এর জন্য চালানো ড্রোন হামলায় সেখানকার স্থানীয়দের চরম মূল্য দিতে হয়েছে। তিনি বলেন, সেই সময়ে পাকিস্তান তার বন্ধু ও শত্রুদের মধ্যে পার্থক্য করতে পারেনি। তিনি প্রশ্ন রাখেন, একটা দেশ কি তার মিত্রদের ওপর হামলা চালায়?
তৎকালীন সরকারের যুক্তরাষ্ট্রের মুখের ওপর না বলার মতো সাহস ছিল না এবং তারা নিজ দেশের মানুষের কাছে মিথ্যা বলেছিল। এই কথা জানিয়ে ইমরান খান বলেন, ‘আমাদের অবশ্যই এটা বুঝতে হবে যে, কোনও জাতি যখন তার নিজেকেই সম্মান করে না, তখন বাইরের দুনিয়াও তাকে সম্মান করে না।’ সূত্র: ভয়েস অব আমেরিকা।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন