চলমান যুদ্ধের কারণে ইথিওপিয়ার টাইগ্রেতে চার লাখের বেশি মানুষ এখন দুর্ভিক্ষের ভেতরে বাস করছেন বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ। শনিবার জাতিসংঘের কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে এ তথ্য প্রকাশ করেছে বিবিসি। ইথিওপিয়ার পরিস্থিতি নিয়ে প্রথম উন্মুক্ত বৈঠকে শুক্রবার জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের প্রথম বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এতে সদস্য রাষ্ট্রগুলো জানায়, টাইগ্রে অঞ্চলের ৩৩ হাজার শিশু তীব্র অপুষ্টিতে ভুগছে। এ ছাড়া ৮ মাসব্যাপী এই যুদ্ধ ও সংঘর্ষের কারণে আরও ১৮ লাখ মানুষ দুর্ভিক্ষের মধ্যে পড়ার ঝুঁকিতে রয়েছে। জাতিসংঘের মানবিক ত্রাণবিষয়ক ভারপ্রাপ্ত প্রধান রমেশ রাজাসিংঘাম জানান, গত কয়েক সপ্তাহে টাইগ্রের নিরাপত্তা পরিস্থিতির মারাত্মক অবনতি হয়েছে। তিনি বলেন, ইথিওপিয়ায় এখন যে পরিস্থিতি চলছে গত কয়েক দশকে এমন পরিস্থিতি আমরা দেখিনি। ইথিওপিয়ার সরকার সম্প্রতি সর্বসম্মত অস্ত্রবিরতি কার্যকরের ঘোষণা দেয়। অস্ত্রবিরতি কার্যকর হওয়ার পরও অঞ্চলটিতে নতুন করে সংঘাতের শঙ্কা রয়েছে বলেও সতর্ক করেছে জাতিসংঘ। গত বছরের নভেম্বরে ইথিওপিয়ার টাইগ্রেতে একটি সামরিক ঘাঁটিতে আকস্মিক হামলা হয়। হামলার পর ওই প্রদেশের ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল টাইগ্রে পিপলস লিবারেশন ফ্রন্টকে (টিপিএলএফ) ক্ষমতাচ্যুত করে সেখানে আইনের শাসন ফেরাতে সামরিক অভিযান শুরুর নির্দেশ দেন ইথিওপিয়ার প্রেসিডেন্ট আবি আহমেদ। ওই মাসের শেষ দিকেই টাইগ্রের আঞ্চলিক রাজধানী মেকেলের নিয়ন্ত্রণ নেয় সরকারি বাহিনী। পাল্টা আক্রমণ চালিয়ে আবারও মেকেলে পুনর্দখল করে বিদ্রোহীরা। নিউইয়র্ক টাইমস জানায়, শুক্রবার কয়েক হাজার বন্দি সরকারি সেনাসদস্যকে টিগ্রের রাজধানী মেকেল্লে অভিমুখে সড়কে মার্চ করানো হয়েছে। গত আট মাসের সংঘাতে এ পর্যন্ত কয়েক হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে এবং ২০ লাখের বেশি মানুষ গৃহহীন হয়েছেন। উভয়পক্ষের বিরুদ্ধেই গণহারে মানুষ হত্যা এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ রয়েছে। ইথিওপিয়ায় গোষ্ঠীগত পার্থক্যের ভিত্তিতে ১০টি আঞ্চলিক প্রদেশ রয়েছে। স্বায়ত্তশাসিত ব্যবস্থা কার্যকর থাকলেও এগুলো কেন্দ্রীয় প্রতিষ্ঠানের আওতাভুক্ত থাকে। ২০১৮ সালে সরকারবিরোধী বিক্ষোভের পর প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ক্ষমতা গ্রহণ করেন আবি আহমেদ। তিনি রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থায় বেশকিছু সংস্কার আনেন। বিবিসি, নিউ ইয়র্ক টাইমস।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন