লাহোরে গত মাসে শক্তিশালী গাড়িবোমা বিস্ফোরণের পেছনে ভারতের হাত রয়েছে এবং এ সংক্রান্ত তথ্যপ্রমাণ হাতে পাওয়ার দাবি করেছে পাকিস্তান। তদন্ত করে তারা জানতে পেরেছে যে, এই হামলার ঘটনাটি ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা রিসার্চ এন্ড অ্যানালাইসিস উইং (র) দ্বারা পরিচালিত হয়েছিল।
রোববার ইসলামাদে এক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানান দেশটির জাতীয় নিরাপত্তা (এনএসএ) উপদেষ্টা মইদ ইউসুফ।
তিনি বলেন, ফরেনসিক বিশ্লেষণ এবং সন্ত্রাসীদের কাছ থেকে উদ্ধার ইলেকট্রনিক সরঞ্জাম থেকে আমরা এ হামলার মূলহোতাকে শনাক্ত করেছি। এতে কোনো সন্দেহ নেই যে, ওই ব্যক্তি ‘র’ এর সদস্য, সে ভারতে থাকে এবং ভারতীয় নাগরিক। গত ২৩ জুন পাকিস্তানের পূর্বাঞ্চলীয় শহর লাহোরে ভারত-বিরোধী নেতা হাফিজ সাঈদের বাড়ির কাছে শক্তিশালী বিস্ফোরণ ঘটে। এতে অন্তত তিনজন নিহত এবং ২২ জন আহত হন।
হাফিজ সাঈদকে যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগ ‘সন্ত্রাসী’ ঘোষণা করেছে এবং তার মাথার বিনিময়ে এক কোটি ডলার পুরস্কার রয়েছে। এই লোকই মুম্বাই হামলার মূলহোতা বলে বিশ্বাস ভারতের। পাঞ্জাব পুলিশের প্রধান ইনাম ঘানি জানিয়েছেন, ওই হামলার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে ১২ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এদের মধ্যে একজন আফগান নাগরিক এবং তিনি শরণার্থী হিসেবে পাকিস্তানে বসবাস করতেন। ওই ব্যক্তি বিস্ফোরকভর্তি গাড়িটি ঘটনাস্থলে নিয়ে যান এবং পরে রিমোট কন্ট্রোল ডিভাইসের মাধ্যমে বিস্ফোরণ ঘটান।
মইদ ইউসুফের দাবি, লাহোর হামলার পরপরই পাকিস্তানের গুরুত্বপূর্ণ তদন্ত অবকাঠামোগুলো লক্ষ্য করে ভারতীয়দের মাধ্যমে কয়েক হাজার সাইবার আক্রমণেরও প্রমাণ পেয়েছেন তারা। তার কথায়, এসব হামলায় কোনো সন্দেহ থাকে না যে, এই ঘটনায় রাষ্ট্রীয় সমর্থন এবং রাষ্ট্রীয় যোগসূত্র রয়েছে। এনএসএ জানিয়েছে যে, ভারত অবৈধভাবে অধিকৃত জম্মু ও কাশ্মীরে (আইআইওজেকে) ড্রোন হামলার ‘নাটক’ করছে। লাহোর হামলা থেকে দৃষ্টি আকর্ষণ করার জন্য এটি তাদের একটি প্রচেষ্টা ছিল। তবে পাকিস্তানের এসব অভিযোগের বিষয়ে এখনো কোনো মন্তব্য করেনি ভারত।
এদিকে, প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান লাহোর সন্ত্রাসী হামলায় অদম্য প্রমাণ পাওয়ার জন্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর প্রশংসা করেছেন এবং বিশ্ব সম্প্রদায়কে ভারতের ‘দুর্বৃত্ত আচরণ’ নোট করার আহ্বান জানিয়েছেন। এনএসএর সংবাদ সম্মেলনের পরপরই তিনি একটি টুইট বার্তায় বলেন, ‘প্রমাণগুলো সংগ্রহ করতে আমি পাঞ্জাব পুলিশের কাউন্টার টেররিজম বিভাগের অধ্যবসায় এবং গতির প্রশংসা করি এবং আমাদের সমস্ত বেসামরিক ও সামরিক গোয়েন্দা সংস্থার চমৎকার সমন্বয়ের প্রশংসা করি।’ তিনি বলেন, এই ‘জঘন্য সন্ত্রাসী হামলা’র পরিকল্পনা ও অর্থায়নের মাধ্যমে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদে ভারতীয় পৃষ্ঠপোষকতার যোগসূত্র রয়েছে। বিশ্বব্যাপী সম্প্রদায়কে এই দুষ্ট আচরণের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোকে একত্রিত করতে হবে।’ সূত্র: ট্রিবিউন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন