বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

কোভিড নিরোধক স্প্রে ‘ভলটিক’ আবিষ্কার করে যুক্তরাজ্যে সাড়া ফেললেন সিলেটি মেয়ে সাদিয়া

সিলেট ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ৬ জুলাই, ২০২১, ৭:৫২ পিএম

‘ভলটিক’ নামক একটি কোভিড-১৯ নিরোধক স্প্রে আবিষ্কার করে বিশ্বব্যাপী আলোড়ন সৃষ্টি করেছেন যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত সাদিয়া খানম। এর মধ্যে দিয়ে সৃষ্টিশীল প্রতিভার অন্য এক বিস্ময়ে পরিণত হয়েছেন তিনি। বয়স ২৫ বছর মাত্র তার। করেছেন ‘ভলটিক’ স্প্রের আবিষ্কার, এছাড়া বাবার রেস্টুরেন্ট ‘ক্যাফে ইন্ডিয়াতে’ কাজ করেন সাদিয়া। বসবাস করেন যুক্তরাজ্যে চেস্টারের। সিলেটে বিশ্বনাথের নাজির বাজারের মোহাম্মদপুর গ্রামে পৈত্রিক নিবাস তার। সাদিয়া আবিষ্কৃত ‘ভলটিক’ স্প্রে এর বিশেষত্ব হলো কোন স্থানে ব্যবহারের সাথে সাথে সবধরনের প্যাথোজন (ভাইরাস, ভ্যাক্টেরিয়া, ফাঙ্গি ইত্যাদি) টেনে এনে মেরে ফেলতে সক্ষম। ‘ভলটিক’ স্প্রে কোনো স্থানে একবার ব্যবহার করলে ওই জায়গায় সম্পূর্ণরূপে কেভিডমুক্ত থাকে ১৫দিন পর্যন্ত।

যুক্তরাজ্যের হাসপাতাল গুলো বলেছে, ভাইরাস নিরোধে এই স্প্রে শতভাগ কার্যকর। তাছাড়া এই স্প্রে ব্যবহার করে হাসপাতালগুলোর পরিচ্ছন্নতা খরচ কমিয়ে আনা সম্ভব প্রায় ৭০ ভাগ। এদিকে, ‘ভলটিক’ স্প্রে আবিষ্কারের সাথে সাথে ইতোমধ্যে বিশ্বের ১৩টি দেশ থেকে ১০ মিলিয়ন ডলারেরও বেশি মূল্যের অর্ডার পেয়েছেন সাদিয়া। এনএইচএস যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন হাসপাতাল ও কেয়ার হোমে পরীক্ষামূলক ভাবে এই স্প্রে ব্যবহার করে সুফল মিলেছে। নাসার ল্যাবেও ব্যবহার হচ্ছে এই স্প্রে। মেডিকেল যন্ত্রপাতি, হোটেল, মোটেল, রেস্টুরেন্ট, এয়ারলাইন্স ইন্ডাস্ট্রি, আর্ম ফোর্সেস, নিউক্লিয়ার স্টেশনে ব্যবহার করা যায়। সারাবিশ্ব কোভিড-১৯ পাদূভার্বের মধ্যে রেস্টুরেন্টে কাজের পাশাপাশি কোভিড নিরোধক শক্তিশালী কিছু আবিষ্কারে গবেষণা শুরু করেন সাদিয়া। বাবার রেস্টুরেন্টকে ব্যবহার করেন কেস স্টাডি হিসেবে তিনি। প্রায় ১৪ মাসের গবেষণার পর একসময় সাফল্য ধরা দেয় তার হাতে। আবিষ্কার করে ফেলেন বিশেষ স্প্রে ‘ভলটিক’।

এরপর কলিন হেইগান নামক একজন সিনিয়র বিজ্ঞানীকে সঙ্গে নিয়ে এই স্প্রেকে আরো ডেভলপ করেন। কলিন হেইগান সাদিয়ার এই অবিস্কার যুগান্তকারী বলে অভিমত দিয়েছেন। সাদিয়া এক প্রতিক্রিয়ায় বলেন, তিনি অত্যন্ত আনন্দিত তাঁর এই স্প্রে ব্যবহার হবে বিশ্বজুড়ে। স্প্রে থেকে প্রাপ্ত অর্থ দিয়ে আলজাইমার রোগের ওপর অধিকতর গবেষণা করবেন এবং বিশ্বকে এই রোগের প্রতিষেধক দিতে পারবেন বলে আশাবাদী তিনি। রেস্টুরেন্ট ব্যবসায়ী বাবা কবির আহমদের তিন সন্তানের মধ্যে সবার বড় সাদিয়া। মা ফরিদা আহমদ গৃহিনী। দাদা আজমত আলী সূত্র ধরে যুক্তরাজ্যেও বাসিন্দা হয় সাদিয়ার পরিবার। সাদিয়ার বয়স যখন ১৪ বছর তখন তাঁর দাদা আলজাইমার রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়েন। তখন তিনি সংকল্প করেন বড় হয়ে বিজ্ঞানী হবেন এবং আলজাইমার রোগের প্রতিষেধক আবিষ্কার করবেন। ছোটকাল থেকেই বিজ্ঞানের প্রতি ঝোঁকে পড়েন তিনি। কিন্তু তাঁর বাবা প্রথমে স্থানীয় ব্লাকবার্ণ মাদ্রাসায় ভর্তি করে দেন তাঁকে। মাদ্রাসা থেকে কৃতিত্বের সাথে আলিমা কোর্সসহ জিসিএসই পাশ করেন তিনি। এরপর ম্যানচেস্টারের হলিক্রস সিক্সথ ফর্ম কলেজ থেকে জিসিএসই, ম্যানচেস্টার ইউনিভার্সিটি থেকে বায়ো-মেডিকেলে গ্রাজুয়েশন শেষ করে চেস্টার ইউনিভার্সিটি থেকে জেনেটিক্সে মাস্টার্স সম্পন্ন করেন। এরপর আলজাইমার ও নিউরোডিজেনারেশন নিয়ে গবেষণা শুরু করেন তিনি।তরুণ প্রজন্মর আবিষ্কারক সাদিয়া একজন প্র্যাকিটিসীন মুসলিম। তার আটপৌড় জীবন ধর্মী অনুশাসনের মধ্যে গাঁথা। ১৩ বছর যাবত অ্যালকোহলমুক্ত রেস্টুরেন্ট ব্যবসা পরিচালনা করে নিজস্ব এক ইতিবাচক ইমেজ সৃষ্ট করে সমাদৃত হয়েছেন তিনি।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (5)
Sohrab Hossain ৬ জুলাই, ২০২১, ৯:৪১ পিএম says : 0
God bless you.
Total Reply(0)
Sohrab Hossain ৬ জুলাই, ২০২১, ৯:৪২ পিএম says : 0
God bless you.
Total Reply(0)
আঃ রহমান ৬ জুলাই, ২০২১, ৯:৪৬ পিএম says : 0
সাদিয়া নামটি পড়েই চমকে উঠেছিলাম। কারন আমার মেয়ের নামও সাদিয়া, সে লন্ডনে বসবাস করে। পেশায় দন্ত চিকিৎসক। সাদিয়ার আবিষ্কারের সাফল্য কামনা করছি, সাথে ওর উজ্জ্বল জীবন।
Total Reply(0)
Azim ৬ জুলাই, ২০২১, ১০:০০ পিএম says : 0
আলহামদুলিল্লাহ
Total Reply(0)
Afroza ৭ জুলাই, ২০২১, ৬:৩৭ এএম says : 0
Nominate sadia for noble peace prize.
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন