মুজিব বর্ষের উপহার হিসাবে প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া ঘরগুলো এখন গরিবদের গলার কাঁটায় পরিণত হয়েছে। এ কারণে সরকার বিব্রত অবস্থার মধ্যে রয়েছে। এদিকে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর নিয়ে অনিয়মের প্রেক্ষিতে উচ্চতর তদন্ত কমিটি বগুড়ায় আসবে জেনে তড়িঘড়ি করে বগুড়া ও নন্দীগ্রামে আশ্রায়ণ প্রকল্পের ঘরগুলোর মেরামত ও মাটি ভরাটের কাজ শুরু করা হয়েছে।
সরেজমিনে গিয়ে বগুড়ার নন্দীগ্রামে দেখা গেছে, প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে দেওয়া আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরে থাকা ঝুঁকিপুর্ণ হয়ে উঠেছে। দেয়াল ধসে দুর্ঘটনার শঙ্কায় ভূমিহীনরা ঘরে উঠতে সাহস পাচ্ছেন না। কেননা এগুলো নির্মাণের ৬ মাস মধ্যে ঘরের মেঝেতে ফাটল ধরেছে। সিমেন্টের পলেস্তারা উঠে যাচ্ছে। টিন দিয়ে বৃষ্টির পানি পড়ছে।
ভুক্তভোগীরা জানান, মুজিববর্ষে আশ্রয়ণ প্রকল্প-২ এর অধীনে দাসগ্রাম পুকুরপাড়ে ১৭ টি নির্মাণ করা ঘরে কেউ এখনো উঠেনি। সেখানে যাওয়ার মতো কোনো রাস্তা নেই। যার ফলে পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে ঘরগুলো। এছাড়া কিছু ঘরের বারান্দার পিলার ভেঙে পড়ছে, ফলে তড়িঘড়ি করে মেরামত করা হয়েছে।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) আবু তাহের এ প্রসঙ্গে বলেন, কোনো ঘরের বারান্দার পিলার ভেঙে পড়েনি। কেউ হয়তো ঠেলা দিয়ে ফেলে দিয়ে থাকতে পারে। যে ঘরগুলো একটু ফাটল ধরেছে, সেগুলো মেরামত করে দেয়া হচ্ছে।
নন্দীগ্রাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শিফা নুসরাত বলেন, আমার সময়ে কাজগুলো করা হয়নি। কিছু কিছু ঘর মেরামত করা হচ্ছে। ঘরে না ওঠার কারণে এবং ঘর গুলো পড়ে থাকতে থাকতে কিছুটা নষ্ট হয়েছে।
একই চিত্র দেখা গেছে বগুড়া সদরের গোকুল ইউনিয়নের চাঁদমুহা হরিপুর গ্রামের আবাসন প্রকল্পে। শুক্রবার এই প্রকল্পে গিয়ে দেখা যায়, মোট ৬০ টি বরাদ্দকৃত ঘরের অর্ধেকটাই খালি পড়ে আছে। বর্ষার শুরতেই প্রকল্পের পাশের বিলের পানি ঘরে প্রবেশ করে বাথরুম ও কিচেন নষ্ট করে ফেলেছে। অনেকগুলো ঘরে মেঝের প্লাষ্টার উঠে গেছে। কোন কোন ঘরের মেঝে দেবে গেছে।
এই প্রকল্পের রাস্তায় চলছে মাটি ভরাটের কাজ। বগুড়া সদরের নির্বাহী অফিসারের পক্ষে এখানে বিট বালু ফেলে মাটি ভরাটরে কাজ চলছে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার এ ব্যাপারে মন্তব্য করতে চাননি। রোববার অফিস টাইমে যোগাযোগের পরামর্শ দেন।
ইতোমধ্যে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর নিয়ে অনিয়মের অভিযোগে বগুড়ার শেরপুর ও শাজাহানপুরের ২ জন উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে ওএসডি করা হয়েছে। এছাড়া তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
তবে প্রধানমন্ত্রীর ঘর নিয়ে সবচেয়ে বেশি অভিযুক্ত ও আলোচিত ব্যক্তি বগুড়া সদরের নির্বাহী অফিসার আজিজুর রহমান ধরা ছোঁয়ার বাইরে থাকায় জনমনে বিভিন্ন প্রশ্ন সৃষ্টি হয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন