শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

খেলাধুলা

জোড়া সেঞ্চুরিতে হাতের নাগালে জয়

স্পোর্টস রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১১ জুলাই, ২০২১, ১২:০০ এএম

জিম্বাবুয়ের সাদামাটা বোলিং গুঁড়িয়ে দাপট দেখালেন দুই বাঁহাতি সাদমান ইসলাম ও নাজমুল হোসেন শান্ত। ধীর স্থির খেলে সাদমান তার ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি তুলে নিলেও দ্বিতীয় সেঞ্চুরির পথে উত্তাল ছিল শান্তর ব্যাট। এই দুজনের সেঞ্চুরিতে স্বাগতিকদের উপর বিশাল রানের বোঝা চাপিয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ।

গতকাল ১৮০ বলে ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরির দেখা পান সাদমান। মাত্র ১০৯ বলেই দ্বিতীয় সেঞ্চুরিতে পৌঁছান শান্ত। দ্বিতীয় উইকেটে এই দুজন তুলে তুলেন অবিচ্ছিন্ন ১৯৬ রান। জুতসই রান পাওয়ার পর ১ উইকেটে বাংলাদেশ ২৮৪ রান করে ইনিংস ঘোষণা করে। তখন ১১৮ বলে ১১৭ রানে অপরাজিত ছিলেন শান্ত। ১৯৬ বলে ১১৫ রান করেন সাদমান। এই ম্যাচ জিততে হলে তাই জিম্বাবুয়েকে করতে হবে ৪৭৭ রান। টেস্ট ইতিহাসে এত রান তাড়া করে জেতার নজির নেই। ম্যাচ বাঁচাতে হলেও ব্র্যান্ডন টেইলরদের টিকে থাকতে হবে চার সেশনের বেশি সময়।
বাংলাদেশের বড় পুঁজি পাওয়ার ভিত তৈরি হয়েছিল আগের দিনই। ১৯২ রানের লিড নেওয়ার পর দ্বিতীয় ইনিংসে কথা বলল বাংলাদেশের টপ অর্ডার। প্রথম ইনিংসে টপ অর্ডারের তিন ব্যাটসম্যান মিলে করেছিলেন মোটে ২৫ রান। এবার তিনজনই পেয়েছেন রান। সাইফ ৪৩ করে আউট হওয়ার পর বাকি দুজন পেলেন সেঞ্চুরি।
২০১৮ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে দারুণ প্রতিশ্রুতি দিয়ে টেস্ট ক্যারিয়ার শুরু সাদমানের। নিউজিল্যান্ডে গিয়ে বড় ইনিংস খেলতে না পারলেও দেখিয়েছিলেন নিবেদন। আগে দুবার ফিফটি পেরুলেও সেঞ্চুরির দেখা পাচ্ছিলেন না। এবার সুবিধামত পরিস্থিতি পেয়ে এই ওপেনার তুলে নিলেন নিজের প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি। ৮ম টেস্টে এসে প্রথম সেঞ্চুরির দেখা পেলেন বাঁহাতি এই ওপেনার। মিল্টন শুম্বার বল অন সাইডে ঠেলে দিয়ে দুই রান নিয়ে ১৮০ বলে স্পর্শ করেন ম্যাজিক ফিগার।
এই সেঞ্চুরিতে তামিম ইকবালের পাশে সঙ্গী হিসেবে সাইফ হাসান থেকে অনেকটা এগিয়ে গেলেন তিনি। সেঞ্চুরির পথে সাদমান মেরেছেন ৮ চার। এমনিতে আরও বেশি সময় নিয়ে খেলা এই ব্যাটসম্যান এদিন পরিস্থিতিতির দাবিতেই ছিলেন অনেকটা বেশি সচল। রান বাড়াতে একদম ভুগতেও হয়নি তাকে। জিম্বাবুয়ের সাদামাটা বোলিং আক্রমণ বড় রকমের সমস্যায় ফেলতে পারছিল না। তবে সেঞ্চুরির পথে একবার জীবন পেয়েছেন তিনি। ৫৫ রানে ডোনাল্ড টিরিপানোর বলে পয়েন্টে তার সহজ ক্যাচ ছেড়ে দেন ডিওন মেয়ার্স। এরপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। সাইফ হাসানের সঙ্গে ওপেনিং জুটিতে ৮৮ আনার পর শান্তর সঙ্গে দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে হয়ে যান আরও দুর্বার।
গত শ্রীলঙ্কা সফরে ক্যারিয়ারে প্রথম সেঞ্চুরি পাওয়া শান্তর ব্যাট এদিন আরও চওড়া। প্রথম ইনিংসে রান না পাওয়ার খেদ মেটান দারুণ সব ছক্কা-চারে। ফিফটির পর স্লিপে ক্যাচ দিয়ে বেঁচেছিলেন। আর কোন সুযোগ দেননি। এবার তিন অঙ্কে যাওয়ার পথে পাঁচ চারের সঙ্গে শান্ত মেরেছেন ৪ ছক্কা। যার একটিতে ছক্কায় পৌঁছান নব্বুইয়ের ঘরে, আরেক ছক্কায় যান তিন অঙ্কের কাছে। দারুণ অথরিটি নিয়ে খেলা শান্তকে বিন্দুমাত্র ভোগাতে পারেননি জিম্বাবুয়ের কোন বোলার। তিন অঙ্কে গিয়ে ছক্কা পিটিয়েছেন আরও দুটি।
এদিন খুবই নির্বিষ দেখা গেছে জিম্বাবুয়ের বোলারদের। পেসারদের বলে রান আটকে দেওয়ার কাজ হচ্ছিল। কিন্তু টেইলর তার দুই অনিয়মিত স্পিনার দিয়ে বল করিয়েছেন লম্বা সময়। বাঁহাতি স্পিনার শুম্বা ১৩ ওভার বল করে দিয়েছেন ৬৭ রান। ১৪ ওভার বল করে ৮৪ রান দিয়েছেন রয় কাইয়া! সহজ দুই স্পিনারকে মেরে রান বাড়াতে কোন সমস্যাই হয়নি বাংলাদেশের।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
বাংলাদেশ : ৪৬৮ ও ২য় ইনিংস : ৬৭.৪ ওভারে ২৮৪/১ (ইনিংস ঘোষণা) (সাদমান ১১৫*, সাইফ ৪৩, শান্ত ১১৭*; মুজারাবানি ০/২৭, এনগারাভা ১/৩৬, টিরিপানো ০/৩৩, নিয়াউচি ০/৩৬, শুম্বা ০/৬৭, কাইয়া ০/৮৪।
জিম্বাবুয়ে ১ম ইনিংস : ২৭৬।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন