মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

নারায়ণগঞ্জের ঘটনা হত্যার পর্যায়ে পড়ে: মির্জা ফখরুল

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১১ জুলাই, ২০২১, ৫:২২ পিএম

নারায়ণগঞ্জের ‘হাশেম ফুড এন্ড বেভারেজ’ কারখানায় ভয়াবহ অগ্নিকা-ের ঘটনাটি হত্যার পর্যায়ে পড়ে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এই ঘটনায় ফায়ার বিগ্রেডের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। বিএনপি মহাসচিব বলেন, শিল্প মন্ত্রণালয়ের অধিনস্থ সংশ্লিষ্ট সংস্থা কলকারখানার নির্মাণ মান, পরিবেশ এবং অগ্নি নির্বাপন ব্যবস্থা, নিয়মিত পরিদর্শন ও নজরদারি না করার কারণেই এবং প্রশাসনিক দূর্বলতার কারণে এই ভয়াবহ অগ্নিকা- সংঘটিত হয়েছে। ফায়ার বিগ্রেড ২৭ ঘণ্টা যাবৎ আগুন নেভাতে না পারা গ্রহনযোগ্য হতে পারে না। এই দুর্ঘটনার সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত দাবি, দোষীদের অবিলম্বে আইনের আওতায় আনা এবং নিহত ও ক্ষতিগ্রস্থ ব্যক্তিদের যথাযথ ক্ষতি পূরনের দাবি জানান তিনি।

রোববার (১১ জুলাই) এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে দলের জাতীয় স্থায়ী কমিটির সভার সিদ্ধান্ত জানাতে গিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।

জাতীয় পরামর্শ কমিটির কাউফিউ জারি পরামর্শ সম্পর্কে মির্জা ফখরুল বলেন, কারফিউ জারি কোনো সমাধান নয়। এই লকডাউনেও যদি সঠিকভাবে সাধারণ মানুষের অর্থ ও খাদ্যের ব্যবস্থা করতে না পারেন তাহলে ওই অপরিকল্পিত লকডাউনও তো সঠিক সমাধান আনতে পারবে না। একদিকে পর পর লকডাউনগুলো হয়েছে, সরকারি ছুটি, লকডাউন, কঠোর লকডাউন- কিন্তু সেভাবে সামাজিক দূরত্ব, শারীরিক দূরত্ব সৃষ্টি করা সম্ভব হয়নি। লকডাউনে কি দেখা যাচ্ছে? মানুষকে হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে, কষ্ট পাচ্ছে, অনেকে খাদ্যের অভাবে কষ্ট পাচ্ছেন। খালি ধমক দিয়ে আর গরীব মানুষকে জেলে পুরে দিলে তো হবে। এবার লকডাউনে সাড়ে ৪ হাজার মানুষকে জেলে দেয়া হয়েছে। এরা কারা? তারা সাধারণ গরীব মানুষ। তারা দিন আনে দিন খায়।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, দিন আনে দিন খায় মানুষ তারা কোনো রকমের সহযোগিতা পাচ্ছে না। ইনফরমাল সেক্টার তো এমনিতেই তারা ছোট ছোট পূঁজি নিয়ে কাজ করে। দুইবার লকডাউনের ফলে এই ক্ষুদ্র মানুষগুলো তাদের পূঁজি হারিয়ে ফেলেছে, তারা নিঃস্ব হয়ে গেছে, পথে বসে গেছে। বৃটেন, যুক্তরাষ্ট্রে যারা ছোট ছোট রেস্টুরেন্ট চালান, ইনফরমাল সেক্টরগুলোতে সকলেই আগেই প্রণোদনা পেয়ে গেছে। এটাই হওয়া উচিত সরকারের।

ঢাকার সিভিল সার্জন জেলার সব হাসপাতালে সাংবাদিকদের করোনা সংক্রান্ত কোনো তথ্য না দিতে যে সার্কুলার জারি করেছেন তার নিন্দা জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, এই ধরনের সার্কুলার প্রমাণ করে তারা (সরকার) প্রকৃত তথ্য গোপন করছে এবং করতে চায়। সংক্রমণ ও মৃত্যুর সংখ্যা সরকার প্রকাশিত সংখ্যার চাইতে অনেক বেশি। এই ধরনের তথ্য গোপনের প্রচেষ্টা স্বাধীন গণমাধ্যম ও গণতন্ত্র পরিপন্থি।

চিকিৎসা ব্যবস্থায় অব্যবস্থাপনার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, হাসপাতালগুলোতে আইসিইউ নেই, অক্সিজেন নেই, সিলিন্ডার নেই, বেড নেই-এই যে চরম অব্যবস্থাপনা এবং দুর্নীতি। যার ফলেই আজকে করোনা পরিস্থিতি আক্রমণাত্মক হয়ে দেখা দিচ্ছে, একে সামাল দেয়া যাচ্ছে না। জনগণের কাছ থেকে ট্যাক্স-ভ্যাট নিচ্ছেন অথচ জনগনের জন্য কোনো ব্যয় করছেন না। কিসে ব্যয় করছেন? মেগা প্রজেক্টে ব্যয় করছেন যেটাতে এই মুহুর্তে দেশের প্রান্তিক মানুষগুলোকে বাঁচানোর কোনো পথ নেই। এখন তাদেরকে না বাঁচানো গেলে সত্যিকার অর্থেই তারা দারিদ্র্যের নি¤œস্তরে নেমে যাবে।

বিএনপির ৫ দফা প্রস্তাব নিয়ে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদকের বক্তব্যের সমালোচনা করে তিনি বলেন, উনার সুনির্দিষ্টভাবে বলুক কোনটা কোনটা বাস্তবায়ন করেছেন। চর্বিত চর্বণ তো প্রতিদিন উনারা করছেন। তাদের সমস্যাটা হচ্ছে যে, তারা কোনো সমালোচনা শুনতে চান না। আমরা শুধুমাত্র সমালোচনা করি না, পাশাপাশি সমস্যা সমাধানের প্রস্তাবও দেই। তাদের একলা চলো নীতি, দুর্নীতি করো নীতি, লুটপাট করো নীতি এটাই তো এই দেশটাকে, এই জাতিকে চরম বিপর্যয়ের দিকে ঠেলে নিয়ে গেছে।

করোনা মোকাবিলায় সরকারের ওয়ার্ড পর্যায় কমিটি গঠন সম্পর্কে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে বিএনপি মহাসচিব বলেন, এখন আবার ওয়ার্ড কমিটিতে দুর্নীতি শুরু হবে। ওখানে টাকা-পয়সা ভাগ করে নেবে আরকি। আমরা মনে করি এটা ফিজিবল না।

তিনি বলেন, আমরা বলেছি যে, সরকারের যে হাসপাতালগুলো আছে সেগুলো ইকুইপ্ট করুক, সেই হাসপাতালগুলোতে বেড সংখ্যা বাড়াক, ডাক্তার বাড়াক, সেই হাসপাতালগুলোকে অক্সিজেন সিলিন্ডার সরবারহ করুক, আইসিইউ বেড রাখুক তাহলে তো সমস্যার সমাধান হয়ে যায়। এমন তো না যে, সমস্যা অন্য জায়গায় ছড়িয়ে পড়ছে তা তো না। হাসপাতালগুলোতে সুবিধা বাড়ালে মানুষ চিকিতসাটা নিতে পারবে আর মানুষের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে। ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে কমিটি করবে কি জন্যে? কারণটা কী?

প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্নের প্রকল্প’ নামের আড়ালে উপহারের ঘর নির্মাণে ‘হরিলুট’ চলছে উল্লেখ করে অবিলম্বে দুর্নীতির এই লোক দেখানো প্রকল্প বন্ধ করে নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের খুঁজে বের করার দাবি জাতীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে জানানো হয়েছে বলে জানান মির্জা ফখরুল

ঠাকুরগাঁওয়ে টিভি চ্যানেল ইন্ডিপেন্ডেন্ট ও দৈনিক ইত্তেফাকের সংবাদদাতা তানভীর হাসান তনুকে ডিজিটাল আইনে গ্রেপ্তারের নিন্দা জানিয়ে অবিলম্বে তার মুক্তির দাবি জানান তিনি।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন