বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

খেলাধুলা

উৎসবের নগরী রোম

স্পোর্টস ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৫ জুলাই, ২০২১, ১২:০২ এএম

মাত্র তিন বছর আগেই ইতালির ফুটবল চলে গিয়েছিল তলানিতে। ২০১৮ বিশ্বকাপেই জায়গা করে নিতে না পারায় বিধ্বস্ত অবস্থা ছিল তাদের। স্বভাবতই নিজেদের ফুটবল নিয়ে হতাশায় ভুগছিলেন সমর্থকরা। মাত্র তিন বছরের ব্যবধানে ইউরো চ্যাম্পিয়ন হওয়াটা তাই তাদের কাছে বিশেষ কিছুই। তারই বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে তাদের উম্মাতাল উদযাপনে।
যেন ‘ইটস কামিং হোম’কে উল্টে দিয়ে হলো ‘ইটস গোয়িং রোম’। আশায় বুক বেঁধেছিলেন ইংলিশরা ভক্তরা; লন্ডনের ওয়েম্বলিতে তাদের মাটিতে তাদেরকেই কাঁদিয়ে ইতালি ট্রফি নিয়ে চলে গেল রোমে। মুহুর্তেই শ্মশানে পরিণত হলো লন্ডন আর চিরন্তন শহর রোম হয়ে গেলো উৎসবের নগরী।
৫৩ বছর পর ইউরো জেতার আনন্দে বাঁধভাঙ্গা উল্লাসে মেতেছে ইতালি। কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে ট্রফি নিয়ে উড়ল ইতালি দলকে বহনকারী বিশেষ বিমান। গন্তব্য, রাজধানী রোম। খবর চাইর হতে সময় লাগেনি। মুহূর্তেই রাস্তায় হাজারো সমর্থকের ঢল। রোমের অলিতে গলিতে চছেন উদযাপন, একসাথে নাচছেন, গাইছেন। অনেকে আবার আতশবাজিও পোড়াচ্ছেন। এরই মাঝে বীরবেশে ট্রফি উঁচিয়ে আগমন জাতীয় বীরদের। হাজার হাজার মানুষ ভিড় করছেন স্বপ্নের রাজপুত্রদের বরণে। টিম বাসের আশে পাশে ছিল ইতালিয়ানদের উৎসবের মিছিল। কারো গায়ে জার্সি, কারো হাতে পতাকা-প্ল্যাকার্ড। হোটেলের সামনে অপেক্ষারত ছিলেন বহু ভক্ত। অধিনায়ক কিয়েল্লিনি যখন বাস থেকে নামছেন তখন তার মাথায় মুকুট; হাতে ঝা চকচকে ট্রফি। নেমেই ট্রফি উঁচু করে ধরে শুরু করেন উল্লাস। তখন থেকে শুরু, যেন থামার নাম-গন্ধও নেই! গতকাল দিনভর ছাদখোলা বাসে চড়ে ইউরোজয়ী দলটি ট্রফি নিয়ে ঘুরে বেরিয়েছে রোমের অলি-গলি থেকে রাজপথ। মাঝে গাড়ি থামিয়ে তাদের বাসভবনে দেখা করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট সার্জিও মাত্তারেল্লা আর প্রধানমন্ত্রী মারিও দ্রাঘির সঙ্গেও। সময়টিকে ছবির ফ্রেমে আটকে রেখেছেন স্মৃতির গহŸরে।
গত রোববার রাতে লন্ডনের ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ফাইনালে নির্ধারিত সময়ে ১-১ গোলে ড্র থাকে খেলা। অতিরিক্ত সময়েও হয়নি মীমাংসা। খেলা টাইব্রেকারে গেলে সেখানে স্বাগতিক ইংল্যান্ডকে ৩-২ গোলে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয় রবার্তো মানচিনির শিষ্যরা। ওয়েম্বলিতে যখন সুনসান নিস্তব্ধতা তখন রোমে চলছে উৎসব। করোনা মহামারীতে ইতালি পরিণত হয়েছিল মৃত্যুপুরীতে। সেখানে ইউরোপ জয়ের এই ট্রফি দেশটির জনগণের জন্য এসেছে অক্সিজেন হিসেবে। কম ধকল যায়নি দলটির ওপর। ২০০৬ বিশ্বকাপের পর এই প্রথম কোনো ট্রফি জিতলো আজ্জুরিরা। সত্যিকারের ঘুরে দাঁড়ানোর গল্প যাকে বলে! টানা ৩৪ ম্যাচ ধরে হার না মানা দল। এমন উদযাপন তো করতেই পারে ইতালি!
তবে এই আনন্দ আর উচ্ছ¡াসের আড়ালে ঘটেছে হৃদয়বিদারক কিছু ঘটনাও। বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, বেপরোয়াভাবে বিজয় বিজয় উদযাপনে যাওয়ার পথে সিসিলির কালতাজিরানে ২২ বছরের এক তরুণ নিহত হয়েছে, বিভিন্ন স্থানে আহত হয়েছেন বেশ কয়েকজন। কেবল মিলানেই অন্তত ১৫ জন গুরুতর আহত হন। পুরো আকাশ বাতাস ছেয়ে যায় আতশবাজিতে। হাজার হাজার মানুষ রাস্তায় বেরিয়ে শুরু করেন নাচ-গান, উল্লাস। কেউ ভিড়ে ছুটোছুটিতে উলটে পড়ে আহত, কেউ আতশবাজিতেও হন আহত। এক ব্যক্তির হাতেই আতশবাজি বিস্ফোরিত হওয়ায় তিনি হারিয়েছেন হাতের তিনটি আঙ্গুল। সাউথ ফগিয়া শহরে একটি খুনের ঘটনায় ঘটেছে। পুলিশ ধারনা করছে, বিজয় উৎসবের বিশৃঙ্খল পরিবেশের সুযোগ নিয়ে শত্রæতার জেরে কেউ এই কাজ করে থাকতে পারে। স্থানীয় গণমাধ্যমের খবর, খুন হওয়া ওই ব্যক্তির সঙ্গে থাকা তার ছয় বছরের ভাতিজিও গুরুতর আহত হয়েছে।

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (1)
Umar Abdullah ১৪ জুলাই, ২০২১, ৪:০৯ পিএম says : 0
ইউরো এবং কোপা উভয় টুর্নামেন্টেই স্বাগতিক দেশ পরাজিত হলো।
Total Reply(0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন