উত্তর : ইসলামে মিথ্যা দোষারোপের সুযোগ নেই। এটা ঘৃণিত অপরাধ। শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এর পাশাপাশি মানুষের ভেতরের খারাপ দিকগুলোর জন্য শাস্তির ঘোষণা এসেছে। এসব পরিত্রাণের উপায়ও বলে দিয়েছে।
পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, তোমরা মিথ্যা কথন থেকে দূরে থাক (সুরা আল হজ্জ, আয়াত-২৩)। আল্লাহ বলেন, যারা বিনা অপরাধে বিশ্বাসী পুরুষ ও নারীদের কষ্ট দেয়, তারা মিথ্যা অপবাদ ও প্রকাশ্য পাপের বোঝা বহন করে (সুরা আয্যাব,আয়াত-৮৫)।
মিথ্যা অপবাদে মানুষের সম্মানহানি ঘটে। রাসুল (সা.) বলেছেন, ‹যে ব্যক্তি তার ভাইয়ের অনুপস্থিতিতে সম্মানহানি করা থেকে বিরত থাকে, আল্লাহ তাকে জাহান্নাম থেকে মুক্ত করা নিজের জন্য অপরিহার্য করে নেন› (আহমাদ, তাবারানী)। আবার কেউ অন্যায়ভাবে তার মুসলমান ভাইয়ের মান-ইজ্জত খাটো করলে তার সম্পর্কে রাসুলুলল্গাহ (সা.) বলেছেন, ‹কোনো মুসলমান অপর কোনো মুসলমানকে যদি এমন স্থানে লাঞ্ছিত করে যেখানে তার মানহানি ঘটে এবং সর্বদা খাটো করা হয়, আলল্লাহ তাকে এমন স্থানে লাঞ্ছিত করবেন, যেখানে তার সাহায্যপ্রাপ্তির আশা ছিল› (আবু দাউদ)। দোষারোপ করা, কারও দুর্নাম করা তো দূরের কথা, কারও সম্পর্কে কিছু প্রমাণ ছাড়া বলাও যাবে না। অহেতুক মানুষকে দোষারোপ করা সামাজিক ব্যাধিতে পরিণত হয়েছে। নবী করিম (সা.) বলেছেন, মুমিনদের প্রতি তোমরা ভালো ধারণা পোষণ করবে। অনুমান করেও কিছু বলা যাবে না। কারণ আল্লাহ বলেন, হে মুমিনগণ, তোমরা অধিকাংশ অনুমান থেকে দূরে থাক। কারণ অনুমান কোনো কোনো ক্ষেত্রে পাপ (সুরা আল হুজরাত, আয়াত-১২)। কিছু পাপের কোনো কাফফারা হয় না। কাউকে মিথ্যা অপবাদ দেওয়া তেমনই একটি পাপ। রাসুল (সা.) বলেছেন, পাঁচটি পাপ এমন, যার কাফফারা নেই। তার মধ্যে তৃতীয়টি হলো, কোনো মুমিনকে অপবাদ দেওয়া (মুসনাদে আহমদ)। হাদিস শরিফে বলা হয়েছে, যে ব্যক্তি কোনো মুমিনকে এমন দোষে দোষারোপ করবে, যা থেকে সে মুক্ত। আল্লাহ তাকে রাদগাতুল খাবাল নামক জাহান্নামের গর্তে বাসস্থান করে দেবেন, যতক্ষণ সে অপবাদ থেকে ফিরে না আসে (আবু দাউদ)। তাই কথা বলার সময় সতর্ক থাকা দরকার। কম কথা বলা উত্তম। হাদিসে নবীজি (সা.) জিহবাকে সংযত রাখতে বলেছেন।
এ পর্যায়ে অপবাদ ও অপপ্রচার নিয়ে কোরআন যা বলছে তা হলো -‘আর যদি তোমরা এক স্ত্রীর বদলে অন্য স্ত্রী গ্রহণের সিদ্ধান্ত নাও এবং প্রথম স্ত্রীকে প্রচুর অর্থবিত্ত দিয়ে থাকো, তবে তা থেকে কিছুই ফিরিয়ে নেবে না। তোমরা কি মিথ্যা অপবাদ বা জুলমের মাধ্যমে তা ফেরত নেবে?’ (সূরা নিসা ২০)
‘(হে মানুষ শুনে রাখো) কেউ কোন অন্যায় বা পাপ করে পরে তা কোন নির্দোষ ব্যক্তির ওপর চাপিয়ে দিলে, মিথ্যা অপবাদের দায়ভার যুক্ত হয়ে তার পাপের বোঝা আরও ভারী হবে।’ (সূরা নিসা ১১২)
‘দুঃখকষ্টের পর যখনই সত্য অস্বীকারকারীদের কিছুটা অনুগ্রহ আস্বাদনের সুযোগ দেয়া হয়, তখনই ওরা আমার বাণীর বিরুদ্ধে পরিকল্পিত অপপ্রচারে লিপ্ত হয়। হে নবী! ওদের বলো, আল্লাহ পরিকল্পিত কৌশল অবলম্বনে (তোমাদের চেয়ে) অনেক অগ্রগামী। (নিশ্চিত থাকো) তোমাদের চক্রান্ত ও অপপ্রচারের পূর্ণ বিবরণ ফেরেশতারা রেকর্ড করছে।’ (সূরা ইউনুস ২১)
উত্তর দিচ্ছেন : আতিকুর রহমান নগরী
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন