দক্ষিণ আফ্রিকার সাবেক প্রেসিডেন্ট জ্যাকব জুমাকে কারাগারে পাঠানোর প্রতিবাদে গত ছয় দিন ধরে বিক্ষোভ-সহিংসতায় মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১১৭ জনে। বিক্ষোভ গত ছয় দিনে সহিংসতায় রূপ নিয়েছে। সেখানকার প্রশাসন বলছে, বিভিন্ন অপরাধীরা এ পরিস্থিতিতে সুযোগ নিচ্ছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার বাণিজ্যিক রাজধানী জোহানেসবার্গে এক সংবাদ সম্মেলেনে দেশটির ক্ষুদ্র ব্যবসা উন্নয়নমন্ত্রী খুমবুদজো নাতশাভেনি নিহতের এই সংখ্যা জানান। আগের দিনও নিহতের সংখ্যা ছিল ৭২। খুমবুদজো নাতশাভেনি বলেন, পরিস্থিতি এখন অনেকটাই শান্ত। তবে দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের কাওয়াজুলু নাতাল প্রদেশের পরিস্থিতি উত্তপ্ত রয়েছে।
বর্ণবাদের অবসানের পর সবচেয়ে অস্থির সময় পার করছে দক্ষিণ আফ্রিকা। গত সপ্তাহে সাবেক প্রেসিডেন্ট জ্যাকব জুমাকে গ্রেপ্তারের ঘটনায় দেশটিতে দাঙ্গা পরিস্থিতির শুরু হয়।
বিবিসির প্রতিবেদনে জানানো হয়, কয়েক দশকের সবচেয়ে ভয়াবহ সহিংস পরিস্থিতির মধ্যে নাশকতার অভিযোগে দুই হাজারের বেশি মানুষকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
অস্থিরতার সুযোগে কয়েক শ দোকান ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে লুটপাট চালিয়েছে দুর্বৃত্তরা। সম্ভাব্য খাদ্য ঘাটতি ঠেকাতে চেষ্টা চলছে বলে জানানো হয়েছে প্রশাসনের পক্ষ থেকে। জানমালের নিরাপত্তায় জনসাধারণ নিজেরাই অস্ত্র হাতে নিয়ে দল বেঁধে বিভিন্ন এলাকায় পাহারা বসিয়েছে।
শুধু বুধবারই ২০০ দোকানপাটে ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগ পেয়েছে প্রশাসন। সেদিনই সেনা মোতায়েন দ্বিগুণ করে পাঁচ হাজার করা হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আসায় নেয়া হয় আরও ২০ হাজার সেনা মোতায়েনের পরিকল্পনা।
আদালত অবমাননার দায়ে ১৫ মাসের কারাদণ্ড ভোগে জ্যাকব জুমা পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করার পর বিক্ষোভে নামে তার সমর্থকরা। ক্ষমতায় থাকাকালীন দুর্নীতির অভিযোগে একটি মামলায় অনুসন্ধানে সহযোগিতা না করায় তাকে এ দণ্ড দেয় আদালত।
এ সাজা ভোগের পাশাপাশিই জুমার বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলাও চলবে। নব্বইয়ের দশকে ৫০০ কোটি ডলারের একটি অস্ত্র চুক্তির দুর্নীতিতে যুক্ত থাকার অভিযোগ গত মাসে অস্বীকার করেছেন ৭৯ বছর বয়সী এ নেতা।
তার সমর্থকদের দাবি, বর্তমান প্রেসিডেন্ট রামাফোসার মিত্রদের সাজানো নাটকে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার বলি হয়েছেন জুমা। সূত্র : বিবিসি, আল জাজিরা
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন