শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

স্পিন বোলদাক-চমন বর্ডার ক্রসিং তালেবান দখলে

উদ্ধারে আফগান বাহিনী লড়াই

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৯ জুলাই, ২০২১, ১২:০৬ এএম

দেশের উত্তরাঞ্চলে তালেবানরা তাদের দখল শক্ত করায় আফগান বাহিনী পাকিস্তানের সাথে একটি গুরুত্বপূর্ণ সীমান্ত ক্রসিং পুনর্দখলে এক অভিযান শুরুর পর শুক্রবার স্পিন বোলদাকের তালেবান যোদ্ধাদের সাথে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। দক্ষিণ সীমান্তে লড়াইয়ের কয়েক সপ্তাহ পরে আফগানিস্তান জুড়ে লড়াই চালিয়ে তালেবানরা বেশ কয়েক ডজন জেলাকে বিস্ময়কর ভাবে তাদের নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে। এই গ্রæপটি উত্তর এবং পশ্চিমের অন্যান্য বড় সীমান্ত ক্রসিংগুলোতেও লড়াই চালাচ্ছে।
শুক্রবার আফগান সেনাবাহিনীর একজন কমান্ডারের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, তাদের একজন ফটোগ্রাফার স্পিন-বোলদাক লড়াইয়ে নিহত হয়েছেন।
সংস্থাটি জানিয়েছে, ভারতীয় নাগরিক দানিশ সিদ্দিকী ২০১৮ সালে পুলিৎজার পুরষ্কারপাপ্ত একটি দলের অংশ ছিলেন এবং আফগান বিশেষ বাহিনীর সাথে যুক্ত ছিলেন।
স্পিন বোলদাক-চমন সীমান্ত ক্রসিং দক্ষিণ আফগানিস্তানের বেশিরভাগ অঞ্চলের একটি অর্থনৈতিক লাইফলাইন। স্থলবহুল দেশটি তার প্রচুর কৃষিজাত যেমন, বাদাম ও শুকনো ফল রফতানির জন্য গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক নাড়ির ওপর নির্ভর করে এবং পাকিস্তান থেকে আসা সব পণ্যের প্রবেশের স্থান হিসাবেও কাজ করে।
সীমান্ত পারাপার নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভবত তালেবানকে একটি অর্থনৈতিক সঞ্জীবনী যোগাবে, যার ফলে বিদ্রোহীরা প্রতিদিন সীমান্ত দিয়ে যে হাজার হাজার যানবাহন চলাচল করে তার উপর কর আদায় করতে পারে।
বুধবার তালেবানদের হাতে পতন হওয়া স্পিন বোলদাকের বাসিন্দারা জানিয়েছেন, সীমান্তবর্তী শহরের প্রধান বাজারে বিদ্রোহী ও সেনাবাহিনীর লড়াইয়ে রাস্তায় আটকা পড়েছিল। মোহাম্মদ জহির বলেন, ‘এখানে প্রচন্ড লড়াই চলছে।
উত্তরের দীর্ঘদিনের শত্রু আবদুল রশিদ দোস্তামের শক্ত ঘাঁটিতে তালেবানরাও অবরুদ্ধ হয়ে যাওয়ার পর এ সীমান্তে লড়াই শুরু হয়। তালেবান গোষ্ঠীর মুখপাত্র বলেছেন যে, যুদ্ধবাজদের মিলিশিয়া বাহিনী যওজ্জান প্রদেশের রাজধানী শেবারগান থেকে পালিয়ে গেছে।
তালেবান মুখপাত্র জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ একটি হোয়াটসঅ্যাপ বার্তায় বলেছেন, এ দলটি ‘শহরের প্রবেশদ্বার দখল করে নিয়েছিল’, দোস্তামের মিলিশিয়া শহর ছেড়ে এয়ারপোর্টের দিকে পালিয়ে গেছে’।
যওজ্জানের ডেপুটি গভর্নর নিশ্চিত করেছেন যে, তালেবানরা প্রাদেশিক রাজধানীর প্রবেশদ্বারে পৌঁছেছে, তবে বলেছেন যে, সরকারী বাহিনী জঙ্গিদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে চাপ দিচ্ছে।
১৯৯০ এর দশকে তালেবানের সাথে লড়াইয়ে কয়েক হাজার যুদ্ধবন্দীকে হত্যাসহ ভয়ঙ্কর খ্যাতি অর্জন করা দোস্তাম বাহিনী কয়েক বছর ধরে উত্তরের অন্যতম বৃহত্তম মিলিশিয়াদের তত্ত্বাবধান করেছ্যে। তার যোদ্ধাদের একটি পথ বা পশ্চাদপসরণ কাবুল সরকারের সা¤প্রতিক প্রত্যাশাকে হতাশ করবে যে, মিলিশিয়া গ্রুপগুলো দেশের উচ্চতর সামরিক বাহিনীকে সহায়তা করতে পারে।
আফগানিস্তানের বিশাল অংশ জুড়ে লড়াই ছড়িয়ে পড়ার সাথে সাথে কাবুল ও ইসলামাবাদের মধ্যে কথার যুদ্ধ তীব্রতর হয় যখন আফগান ভাইস প্রেসিডেন্ট পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীকে ‘কিছু কিছু জায়গায় তালেবানদের ঘনিষ্ঠ বিমান সহায়তা প্রদান’ করার জন্য অভিযুক্ত করেন।
পাকিস্তান এ দাবি কঠোরভাবে অস্বীকার করেছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে যে, দেশটি ‘আমাদের নিজস্ব সেনা ও জনসংখ্যাকে নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য তার ভূখন্ডের মধ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে’।
এতে যোগ করা হয়েছে, ‘আমরা স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলে কাজ করার আফগান সরকারের অধিকারকে স্বীকৃতি দিয়েছি’।
আফগানিস্তান থেকে বিদেশি সেনা প্রত্যাহারের চ‚ড়ান্ত পর্যায়ে তালেবানরা দেশজুড়ে একের পর এক বিদ্যুৎ বিভ্রাট শুরু করেছে। ৯/১১-এর হামলার পর থেকে মার্কিন নেতৃত্বাধীন আক্রমণাত্মক ফলাফল হিসাবে প্রায় দুই দশক ধরে বিদেশি সেনারা আফগানিস্তানে রয়েছে।
সা¤প্রতিক মাসগুলোতে তারা চিত্র থেকে মূলত অদৃশ্য হয়ে গেছে, তবে তাদের যে উল্লেখযোগ্য বিমান সমর্থন দেওয়া হচ্ছে, তাদের ছাড়াই আফগান বাহিনী পরাজিত হবে বলে আশঙ্কা বাড়ছে।
তালেবানদের আক্রমণগুলোর গতি এবং মাত্রা অনেককে অবাক করে দিয়েছে। বিশ্লেষকরা বলেছেন যে, তাদের উদ্দেশ্য শান্তির জন্য বিদ্রোহীদের বিচারের জন্য সরকারকে বাধ্য করা বা সম্পূর্ণ সামরিক পরাজয়ের মুখোমুখি করা। সূত্র : ট্রিবিউন।

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (5)
Mizanur Rahman Mizan ১৮ জুলাই, ২০২১, ১:২৮ এএম says : 0
প্রকৃতপক্ষে কেউ যদি ইসলামের জন্য কাজ করে তার মধ্যে একটি দল হল তালেবান।
Total Reply(0)
মুহ. নূরুল্লাহ ১৮ জুলাই, ২০২১, ১:২৯ এএম says : 0
আজ যদি ইসলামি খিলাফত পৃথিবীতে থাকতো তাহলে ইসলাম বিষয়ে এতো অপপ্রচার আর মুসলমানদের নির্যাতন এতো সহজ ছিল না। আর তালেবান পারবে। পৃথিবীর কোণে কোণে তাঁদের জন্য দুআ করার মানুষ আছে। ম্বল তাদের।
Total Reply(0)
Alamgir Hossain Alam ১৮ জুলাই, ২০২১, ১:২৯ এএম says : 0
আন্তর্জাতিক রাজনীতির পার্ট না হয়েও, তালেবান আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে ভালো নলেজ তো রাখেই, বরং পাকা খেলোয়াড়ও বটে।
Total Reply(0)
Delwar Hossen Rafin ১৮ জুলাই, ২০২১, ১:২৯ এএম says : 0
আপনাদের জন্য হৃদয় থেকে ভালোবাসা।জিহাদের অর্থ আপনারাই বুজেছেন।
Total Reply(0)
Kazi Sanaullah Kazi ১৮ জুলাই, ২০২১, ১:৩০ এএম says : 0
শুধু আফগানে কেন, সাড়া পৃথিবীতে শান্তির একমাত্র উপায় ইসলামী শাসন ব্যবস্থা।
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন