শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

ঝুঁকি নিয়ে ঈদযাত্রা

ঢাকা-ময়মনসিংহ ঢাকা-টাঙ্গাইল ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে যানজট ফেরিঘাটে উপচেপড়া ভিড় : পারাপারের অপেক্ষায় শত শত যানবাহন বাস ও লঞ্চে মানা হচ্ছে না স্বাস্থ্যবিধি : দ্বিগুণ ভাড়ায় পথে পথে ভোগান্

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১৯ জুলাই, ২০২১, ১২:০৬ এএম

আসন্ন ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে নভেল করোনাভাইরাস সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণসংক্রান্ত বিধিনিষেধ শিথিল করার পর গতকাল তৃতীয় দিনের মতো রাজধানী ছেড়েছে মানুষ। দ্বিগুণ ভাড়া, তীব্র যানজট ও উপচে পড়া ভিড় চরম ভোগান্তিতে ফেলেছে তাদের। যাত্রাপথে সড়ক ও নৌপথে সরকার ঘোষিত স্বাস্থ্যবিধি ছিল উপেক্ষিত। এদিকে অন্যান্য দিনের মতো গতকালও গাজীপুরের ঢাকা-ময়মনসিংহ, ঢাকা-টাঙ্গাইল, ঢাকা-আরিচা, ঢাকা-আশুলিয়া মহাসড়কে ছিল ভয়াবহ যানজট। ঘণ্টার পর ঘণ্টা একই এলাকায় আটকে ছিল যানবাহন। সে কারণে ঘরমুখো যাত্রীদের ভোগান্তি ছিল চরমে। এ ছাড়া নৌপথে ফেরিঘাটে ছিল ঘরমুখো মানুষের চাপ। দীর্ঘ লাইনে অপেক্ষমান ছিল শত শত যানবাহন। করোনা সংক্রমণের মধ্যে এবারের ঈদযাত্রা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ ও ভোগান্তির।

নগরীর বাস টার্মিনালে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মহাসড়ক ও ফেরিঘাটে যানজটের কারণে সাধারণ সময়ে যে পরিমাণ বাস ছাড়া হতো সেটা এখন সম্ভব হচ্ছে না। সংখ্যা কমে যাওয়ায় নির্ধারিত সময়ে রাজধানী ছেড়ে যেতে পারছে না বেশিরভাগ বাস। এ কারণে নির্ধারিত সময় থেকে দশ ঘণ্টা পরেও গন্তব্যের দিকে রওনা হচ্ছে বেশিরভাগ দূরপাল্লার পরিবহন। এদিকে দীর্ঘ অপেক্ষা আর অসহনীয় গরমে নাকাল ঈদে ঘরমুখো যাত্রীরা।

ভুক্তভোগিরা জানান, রাজধানীর গাবতলী বাস টার্মিনালে যাত্রীসংখ্যা কম থাকায় সকাল থেকে অনেক বাসের শিডিউল পরিবর্তন হয়েছে। আবার অনেক বাস যাত্রী সংখ্যা কম থাকায় ছেড়ে যায়নি। নির্ধারিত সময়ে গাবতলী বাস টার্মিনালে পৌঁছলেও হাতেগোনা কয়েকটি পরিবহনের বাস গাবতলী থেকে সঠিক সময়ে ছেড়ে গেছে। আর অনেক পরিবহনের যাত্রী ভোর থেকে অপেক্ষায় আছেন। সেঞ্চুরি পরিবহনের কাউন্টার ম্যানেজার আমিনুল বলেন, নির্ধারিত সময় বাসগুলো গাবতলী বাস টার্মিনাল থেকে ছেড়ে যেতে পারছে না। গত শুক্রবার সন্ধ্যা আটটায় বাস ছাড়ার কথা থাকলেও সেই বাস গাবতলী টার্মিনাল এসে পৌঁছায় রাত ২টায়। পরবর্তীতে গাড়ির কিছু কাজ শেষে তিনটার দিকে যাত্রী নিয়ে সাতক্ষীরার উদ্দেশ্যে রওনা হয়। রজনীগন্ধা পরিবহনের কাউন্টার ম্যানেজার নূরু বলেন, সকাল থেকে চারটি গাড়ি ছাড়ার কথা থাকলেও যাত্রী কম থাকায় একটি বাস ছাড়তে পেরেছি। এসময় নির্ধারিত সময়ে বাস না ছাড়ায় যাত্রীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

জাকের এন্টারপ্রাইজ’র কাউন্টার ম্যানেজার আলমগীর বলেন, গত বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার যাত্রী চাপ ছিলো। আজ শনিবার অনেকটাই কম রয়েছে। যাত্রী কম থাকায় সকাল থেকে দুটি গাড়ির যাত্রা বাতিল হয়েছে। একে ট্রাভেলসে সাতক্ষীরা যাওয়ার জন্য অগ্রিম টিকিট কেটেছিলেন আশরাফ দম্পতি। গতকাল সকাল আটটায় বাসের নির্ধারিত ছাড়ার সময় থাকলেও সাড়ে নয়টার পরও কাউন্টারে আসেনি। অপেক্ষারত আশরাফ জানান, বলছে কিছুক্ষণের মধ্যে চলে আসবে, তবে এখনো কোনও খোঁজ নেই। গ্রামের বাড়ি নড়াইল যাবার জন্য অগ্রিম টিকিট কেটেছিলেন মুজাহিদ। পরিবারের আরেক সদস্যকে নিয়ে বাসের জন্য অপেক্ষা করছিলেন তারা। এসময় তিনি জানান, সকাল সাড়ে সাতটায় বাস ছাড়ার কথা থাকলেও সাড়ে দশটার বেশি বাজে। এখনো বাসের দেখা পেলাম না। জানি না কতক্ষণ অপেক্ষা করতে হবে।

এদিকে, ফেরিঘাটগুলোতে আজ ভোর থেকে ক্রমেই দীর্ঘ হচ্ছে গাড়ির সারি। শুক্রবার সকালে শিমুলিয়া ঘাটে দেখা গেছে, ঘাটের এক কিলোমিটার আগেই সবগুলো গাড়িকে আটকে দিচ্ছে পুলিশ। ভাবখানা এমন যেন ফেরিঘাটে কোন জায়গা নেই। উপায় না পেয়ে যাত্রীরা এক কিলোমিটার আগেই গাড়ি থেকে নেমে পায়ে হেঁটে ঘাটে যাচ্ছেন। অথচ ঘাটে গিয়ে দেখা গেছে তিনটি ফেরি অপেক্ষমান। পুলিশ দুই একটা করে গাড়ি ছাড়ছে সেই গাড়িগুলো এসে ফেরিতে উঠছে। স্থানীয় কয়েকজন জানান, পুলিশ ইচ্ছা করেই ঘাট থেকে এক দেড় কিলোমিটার দূরে গাড়ি আটকে রেখে মহাসড়কে যানজটের সৃষ্টি করছে। অথচ ঘাটে কোনো ভিড় নেই। জানতে চাইলে একজন ট্রাফিক পুলিশ বলেন, সবগুলো গাড়ি ঘাটে প্রবেশ করতে দিলে বিশৃঙ্খলা হবে। সে কারণেই দূরেই আটকে রাখা হচ্ছে।

অন্যদিকে এক কিলোমটার দূরে গাড়ি আটকে রাখার সুবাদে যাত্রীরা হেঁটে ঘাটে আসতে বাধ্য হচ্ছে। সেক্ষেত্রে ইজিবাইক চালকরা এই গ্যাপে বেশি টাকায় ভাড়া মারছে। কয়েকজনের অভিযোগ, পুলিশ ইচ্ছা করেই ইজিবাইক চালকদের এই সুযোগ করে দিচ্ছে। বিনিময়ে তারা ইজিবাইকের চালকদের কাছে থেকে দ্বিগুণ চাঁদা নিচ্ছে।

ভুক্তভোগিদে যাত্রীদের অভিযোগ, রাজধানীর সায়েদাবাদ থেকে ছেড়ে যাওয়া বেশির ভাগ বাসই বর্ধিত ভাড়ার দ্বিগুণ আদায় করেছে যাত্রীদের কাছ থেকে। তাছাড়া সরকারের নিয়ম অনুযায়ী পাশের সিট খালিও রাখা হয়নি। ঢাকা থেকে কুমিল্লা, চাঁদপুর, নোয়াখালী ও চট্টগ্রামগামী যাত্রীরা জানিয়েছেন, দ্বিগুণ ভাড়া দেয়ার পরও টিকিট পাওয়া যায় না। সোহরাব নামের এক যাত্রী বলেন, স্বাভাবিক সময়ে ঢাকা থেকে চাঁদপুর যাওয়ার ভাড়া ২৫০ টাকা। এখন টিকিট কাটতে হয়েছে ৫০০ টাকা দিয়ে। পাশের সিটেও যাত্রী ছিল। লক্ষ্মীপুরগামী ইকোনো বাসের সুপারভাইজার রবিউল ইসলাম বলেন, এক সিট ফাঁকা রাখার নিয়ম বেশির ভাগ বাস মালিকই মানছেন না। সেক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষ যাত্রীদের থেকে ভাড়া কিছুটা কম রাখছেন। তিনি বলেন, ৬০ শতাংশ হিসেবে ঢাকা থেকে লক্ষ্মীপুরের ভাড়া ৬০০ হলেও তারা ৫০০ টাকা রাখছেন। তাই যাত্রীরা এক সিট খালি রাখার বিষয়টি নিয়ে তেমন আপত্তি করছেন না।

এদিকে মহাসড়কে তীব্র যানজট ঘরমুখো মানুষের ভোগান্তি বাড়িয়েছে বহুগুণ। গত শুক্রবার ভোর থেকে সাভারে নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়কের নবীনগর থেকে বাড়াইপাড়া পর্যন্ত প্রায় ১৮ কিলোমিটার, ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের সাভার থেকে নবীনগর পর্যন্ত আরিচামুখী লেনে আট কিলোমিটার ও গেন্ডা থেকে হেমায়েতপুর ছয় কিলোমিটার পর্যন্ত লম্বা যানজট ছিল। পাশাপাশি টঙ্গী-আশুলিয়া-ইপিজেড সড়কে আশুলিয়া বাজার থেকে ধউর তিন কিলোমিটার ও জিরাব থেকে বাইপাইল পর্যন্ত ১২ কিলোমিটার সড়কে যানজটের সৃষ্টি হয়। এ সময় ঢাকা থেকে আরিচাগামী লেনে যানজটের ফলে গাবতলী এলাকা থেকে সাভার পৌঁছতে সময় লাগে প্রায় ২ ঘণ্টা। এছাড়া সাভার বাজার বাসস্ট্যান্ড থেকে নবীনগর-বাইপাইল পর্যন্ত পৌঁছতে সময় লাগে দেড় ঘণ্টা। সেই সঙ্গে তীব্র গরমে দীর্ঘক্ষণ গাড়িতে আটকে থাকায় চরম ভোগান্তির মুখে পড়তে হয় যাত্রীদের।

অন্যদিকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লার চান্দিনা এলাকায়ও গত শুক্রবার প্রায় দুই কিলোমিটার এলাকাজুড়ে যানজটের সৃষ্টি হয়। দুপুরের পর শুরু হওয়া এ যানজটে ভোগান্তিতে পড়েন ঈদে বাড়ি ফেরা মানুষ ও গাড়িচালকরা। গতকালও এই মহাসড়কে থেমে থেমে যানবাহন চলেছে।

অন্যদিকে, একই চিত্র ছিল ঢাকা সদরঘাটেও। ঢাকা থেকে ছেড়ে যাওয়া লঞ্চগুলোতে স্বাস্থ্যবিধি ছিল চরম উপেক্ষিত। ভুক্তভোগী যাত্রীরা জানিয়েছেন, দ্বিগুণ-তিনগুণ ভাড়া দিয়ে কেবিন ও চেয়ার পেতে রাখা হয়েছে। হাতিয়ার যাত্রী বেলায়েত হোসেন বলেন, হাতিয়ার লঞ্চগুলোতে ডিলাক্স কেবিনের ভাড়া ১ হাজার ১০০ টাকা। সে কেবিন পেতে তাকে ২ হাজার ৫০০ টাকা গুনতে হয়েছে। বরিশাল-চাঁদপুরে লঞ্চেও দেখা গেছে যাত্রীদের উপচে পড়া ভিড়। ব্যক্তিগত স্বাস্থ্যবিধি মানতেও দেখা যায়নি যাত্রীদের। চাঁদপুরের নিয়মিত যাত্রী শাহীন বণিক বার্তাকে বলেন, কেবিন তো পাওয়া যাচ্ছেই না, কেবিনের সামনের চেয়ার পর্যন্ত ৩০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এমন নজির আগে কখনো দেখিনি। যদিও বিধিনিষেধ শিথিলের প্রজ্ঞাপন প্রকাশের পর নৌ-পরিবহন মন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেছিলেন, স্বাস্থ্যবিধি না মানলে যাত্রী ও লঞ্চ মালিকদের জরিমানা করা হবে। তবে দ্বিতীয় দিন থেকে তার প্রতিফলন দেখা যায়নি।

বাংলাদেশ রেলওয়ের দ্রুতযান এক্সপ্রেসসহ বেশকিছু ট্রেনেও অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহনের অভিযোগ করেছেন যাত্রীরা। যদিও ট্রেনের টিকিট কাটতে হচ্ছে অনলাইনে, কিন্তু রেলওয়ের অসাধু কর্মচারীদের যোগসাজশে ট্রেনগুলোতে অতিরিক্ত যাত্রী বহন করতে দেখা গেছে। ঈদ যত এগিয়ে আসবে, এ অবস্থা তত বাড়বে বলেও শঙ্কা প্রকাশ করেছেন নিয়মিত ট্রেন যাত্রীরা।
মোজাম্মেল হক, গোয়ালন্দ(রাজবাড়ী) থেকে জানান, ঈদুল আযাহা কে সামনে রেখে দেশের দক্ষিণ অঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ প্রবেশ পথ দৌলতদিয়া ঘাটে যাত্রী ও গরু ব্যবসায়ীরা চরম ভৌগান্তিসহ পশুবাহী ট্রাক ও গণপরিবহনের দীর্ঘ সারি। নদী পারের অপেক্ষায় শত শত যানবাহন।

সরেজমিনে দেখা যায়, গতকাল সকাল থেকে ঢাকা খুলনা মহাসড়কে উপর ঘন্টার পর ঘন্টা রোদের মধ্য দীর্ঘ সারিতে দাঁড়িয়ে আছে শত শত পশুবাহী ট্রাক ও গণপরিবহন। দীর্ঘ দিন পর স্বরুপে ফিরেছে দৌলতদিয়া ঘাট। বিগত কয়েক মাস নদী পারের জন্য কোন যানবাহনকে মহাসড়কে ঘন্টার পর ঘন্টা সিরিয়ালে অপেক্ষা করতে হয়নি। বেলা১০ টা নাগাদ দৌলতদিয়া ফেরি ঘাটের জিরো পয়েন্ট থেকে অন্তত তিন কিলোমিটার দুরে বাংলাদেশ হ্যাচারীজ পর্যন্ত দীর্ঘ সারির সৃষ্টি হয়। সময় বড়ার সাথে সাথে বাড়ছে সিরিয়ালের দৈর্ঘ্য। যানবাহনে আটকে থাকা যাত্রীদের দুর্ভোগের পাশাপাশি প্রচন্ড গরমে ঈদু আযাহা উপলক্ষে ঢাকাসহ তার আশপাশের জেলার ট্রাকে করে বিক্রির জন্য নিয়ে যাওয়া গরুগুলো কে নিয়ে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন গুরু ব্যবসায়ী।

মো. শওকত হোসেন, লৌহজং (মুন্সীগঞ্জ) থেকে জানান, ঈদুল আযহা ঘিরে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার ঘরমুখো মানুষের ঢল নেমেছে শিমুলিয়া ফেরি ঘাটে। কঠোর বিধিনিষেধ শিথিল করার তৃতীয় দিনে গতকাল শনিবার সকাল থেকে দেশের দক্ষিণ অঞ্চলের ঘরমুখী মানুষের ভিড় দেখা গেছে। রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে বিভিন্ন যানবাহনের চড়ে ঘাটে আসছেন যাত্রীরা। লঞ্চ ও ফেরিতে যে যেভাবে পারছেন উঠছেন। গাদাগাদি করেই পদ্মা পার হচ্ছে মানুষ। লঞ্চে মানা হচ্ছে না সরকার নির্দেশিত স্বাস্থ্যবিধি । লঞ্চে স্বাস্থ্যবিধি মেনে অর্ধেক যাত্রী নেয়ার শর্তে গণপরিবহন চালু করা হলেও যাত্রীর চাপে সে নির্দেশ মানা হচ্ছে না। সবগুলো লঞ্চেই গাদাগাদি করে উঠছে মানুষ। অর্ধেক যাত্রী ধারণের কথা থাকলেও অধিক যাত্রী নিয়ে চলাচল করছে লঞ্চ। হাজার হাজার মানুষের উপস্থিতিতে কেউ মানছেন না স্বাস্থ্যবিধি।

মানিকগঞ্জ জেলা সংবাদদাতা জানান, ঈদকে সামনে রেখে দেশের দক্ষিন পশ্চিমাঞ্চলের ২১টি জেলার প্রধান প্রবেশদ্বার পাটুরিয়া দৌলদিয়া নৌরুট দিয়ে বাড়ী ফিরতে শুরু করেছে ঘরমুখো হাজারো মানুষ। এসব মানুষ ঘাট এলাকায় এসে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হচ্ছে ফেরি পারাপারের জন্য। ফলে অপেক্ষায় থাকা যাত্রীদের পোহাতে হয় চরম দুর্ভোগে। গতকাল বিকালে এ রিপোর্ট লেখার সময় পটিুরিয়া ঘাট এলাকায় পারাপারের অপেক্ষায় ছিল প্রায় আটশতাধিক যানবাহন । এ সব যানবাহন ও যাত্রী পারাপারের জন্য ১৬ টি ফেরি চলাচল করছে।

ঘাটে গিয়ে দেখা গেছ, পাটুরিয়া ঘাটের দুটি সারিতে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছে দূরপাল্লার বাস ও ট্রাক। ঘাটে আসা যানবাহন ও যাত্রীদের ৩/৪ ঘন্টা অপেক্ষা করতে হচ্ছে।

মোঃ হাবিবুর রহমান হাবীব, শরীয়তপুর থেকে জানান, ফেরী সংকটে খুলনা-চট্রগ্রাম মহাসড়কে শরীয়তপুরের নরসিংহপুর ফেরী ঘাটে তীব্র যানজট দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে গত বুধবার থেকে গতকাল শনিবার পর্যন্ত এ যানজট তীব্র থেকে তীব্রতর হচ্ছে।

সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, ঈদুল আযহা কে সামনে রেখে গরু বোঝাই ও লকডাউন শিথিল হওয়ায় যাত্রীবাহি গাড়ির সংখ্যা বৃদ্ধির ফলে এ ঘাট এলাকায় তিন কিলোমিটার সড়কে যানজট সৃষ্টি হয়েছে।

বিআইডব্লিউটিসির ম্যানেজার আব্দুল মমিন জানান, যানবাহনের সংখ্যা কয়েক গুন বৃদ্ধি পেলেও ফেরী সংখা বৃদ্ধি না করায় এ সমস্যা দেখা দিয়েছে। যানজট নিরোশন কল্পে ও ফেরি চলাচল স্বাভাবিক রাখতে ভোলা লক্ষ্মিপুর রুট থেকে বড় একটি ফেরি কলমিলতা আজ নরসিংহপুর ফেরি বহরে যোগ করা হয়েছে। এতে করে যানবাহনের চাপ কমানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।

টাঙ্গাইল জেলা সংবাদদাতা জানান, ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কে ঘরমুখো মানুষ ও যানবাহনের চাপ ব্যাপক বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে করে টাঙ্গাইল শহরের রাবনা পাইপাস থেকে বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্ব পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। যানজটের কারনে চালক ও যাত্রীদের পোহাতে হচ্ছে চরম ভোগান্তি। এছাড়াও গরু নিয়ে উত্তরাঞ্চল থেকে ঢাকা অভিমুখে যাত্রা করা ব্যবসায়ীরা পড়েছেন চরম বেকায়দায়। সড়কেই কেটে যাচ্ছে ঘন্টার পর ঘন্টা। ঢাকা থেকে টাঙ্গাইল দুই ঘন্টার পথ পাড়ি দিতেই সময় লাগছে সাত থেকে আট ঘন্টা।

এলেঙ্গা হাইওয়ে ফাড়ির সার্জেন্ট ইয়াসির আরাফাত জানান, মধ্যরাত থেকেই যানবাহনের চাপ বেড়ে যায়। যানবাহনের চাপ সামাল দিতে না পেরে শুক্রবার রাত থেকে কয়েক দফায় টোল আদায় বন্ধ রাখে বঙ্গবন্ধু সেতু কর্তৃপক্ষ। এসময় সেতুর পূর্ব ও পশ্চিম উভয় পাশে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। চালক ও যাত্রীরা জানায়, বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্ব থেকে টাঙ্গাইলের রাবনা পাইপাস পর্যন্ত দীর্ঘ এলাকা জুড়ে এ যানজট দেখা দেয়।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (11)
Yasin Khan ১৮ জুলাই, ২০২১, ১২:৪৫ এএম says : 0
আর কত যে নাটক দেখবে এই বাংলা। নিজেদের স্বার্থে মানুষদের এই ভোগান্তি যারা ফেলছেন আল্লাহ তাদেরকে ছাড় দিবেন..!? দিবেননা। এর ফলাফলও একদিন এই বাংলায় তারা পাবেন.।
Total Reply(0)
Md Sohrab Hossain Jewel ১৮ জুলাই, ২০২১, ১২:৪৬ এএম says : 0
অতিরিক্ত যাত্রী চাপ সামাল দিতে গণপরিবহন, লঞ্চ এবং ট্রেন চালু করার অনুমতি দেয়া হোক।
Total Reply(0)
Kamrul Hasan ১৮ জুলাই, ২০২১, ১২:৪৬ এএম says : 0
এক বছর বাড়িতে ঈদ না করলে কি হয়?? হুজুগে বাঙালি নিজেরাও মরবি পরিবারকে মারবি!!
Total Reply(0)
Sanif Khan ১৮ জুলাই, ২০২১, ১২:৪৬ এএম says : 0
সরকারের দোয়া দরকার দোয়া করি সরকারের জন্য পরিস্থিতি যেনো সাভাবিক করে দেয়।
Total Reply(0)
Saif Khan ১৮ জুলাই, ২০২১, ১২:৪৬ এএম says : 0
লাফিয়ে লাফিয়ে যাচ্ছে আবার লাফিয়ে লাফিয়ে আসবে তারপর ঢাকাকে করোনা হট স্পট বানাবে।
Total Reply(0)
Shahin Alam ১৮ জুলাই, ২০২১, ১২:৪৭ এএম says : 0
এখন পাবলিকের সাথে জাস্ট লুডু খেলা হচ্ছে,এ ছাড়া আর কিছুই না।
Total Reply(0)
আল- কামরুল ১৮ জুলাই, ২০২১, ১২:৪৭ এএম says : 0
এ দেশের সরকারের হাতে মানুষ একটুও নিরাপদ না।
Total Reply(0)
Hoor Naher ১৮ জুলাই, ২০২১, ১২:৪৭ এএম says : 0
আমাকে পোড়াতে যদি এত লাগে ভাল, জ্বালো আগুন আরও জ্বালো?
Total Reply(0)
Umme Hafsa Islam ১৮ জুলাই, ২০২১, ১২:৪৮ এএম says : 0
তসলিমা নাসরিন ১ বছর ঘরের বাইরে বের হয় নাই, তবুও তার করোনা হইছে। রিকশাওয়ালা ১ বছর বাইরে রিকশা চালাইতেছে, তারপরও তার করোনা হয় না। তারমানে- ঘরে বন্দি থাকলেই করোনা হবে না, কিংবা বাইরে ঘুড়লেই করোনা হবে, এমনটা না।
Total Reply(0)
Md Rasel Kabir ১৮ জুলাই, ২০২১, ১২:৪৮ এএম says : 0
দরজা খোলা রেখে জানালা বন্ধ করে কি লাভ?
Total Reply(0)
Ruhul Amin Zakkar ১৮ জুলাই, ২০২১, ৫:৩৪ এএম says : 0
লকডাউন প্রত‍্যাহারের পর করোনা কমতেছে। গতকালই আগের দিনের তুলনায় প্রায় চার হাজার কম শনাক্ত হয়েছে। অথচ কঠোর লকডাউন চলাকালে প্রতিদিনই আগের দিনের রেকর্ড ভেঙেছে। তাই লকডাউনের সঙ্গে করোনার কোনো সম্পর্ক নাই। মাতাল বুদ্ধি প্রতিবন্ধীরা সরকারকে এই লকডাউনের পরামর্শ দিয়ে দেশটার বারোটা বাজাচ্ছে।
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন