শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

পেগাসাস প্রজেক্ট : ভিকটিম আইনজীবীদের উদ্বেগ

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২০ জুলাই, ২০২১, ১২:১১ এএম

ইসরাইলে তৈরি পেগাসাস প্রযুক্তি দিয়ে টার্গেট করা হয়েছে লন্ডনভিত্তিক আইনজীবী রোডনি ডিক্সন, ফরাসি মানবাধিকার বিষয়ক আইনজীবী জোসেফ ব্রেহাম, ইসরাইলে এ প্রযুক্তির আবিষ্কারক এনএসও গ্রুপের বিরুদ্ধে মামলা করা দু’জন আইনজীবীসহ বিশ্বের বিভিন্ন স্থানের আইনজীবীদের বিরুদ্ধে। এসব আইনজীবী নির্যাতিত মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন বা দাঁড়িয়েছেন। এতে স্পষ্ট হয় যে, তাদের বিরুদ্ধে সরকার বা কোনো এজেন্সি ফোনে আড়ি পেতেছে। এ খবর দিয়েছে লন্ডনের অনলাইন গার্ডিয়ান। লন্ডনের সুপরিচিত আইনজীবী রোডনি ডিক্সনের ক্লায়েন্টদের মধ্যে আছেন সংযুক্ত আরব আমিরাতের জেলে আটক বৃটিশ ডক্টরাল শিক্ষার্থী ম্যাথিউ হেজেজ, সউদী আরবের নিহত সাংবাদিক জামাল খাসোগির বাগদত্তা হ্যাটিস চেঙ্গিস। পেগাসাস প্রযুক্তি দিয়ে হ্যাটিস চেঙ্গিসকেও টার্গেট করা হয়েছে। ফরেনসিক পরীক্ষায় দেখা গেছে, তার ফোনে সফলভাবে সংক্রমণ করাতে সক্ষম হয়েছে সংশ্লিষ্টরা। এ বিষয়ে রোডনি ডিক্সন বলেন, এই উপায়ে কাউকেই টার্গেট করা উচিত না। এর মধ্য দিয়ে আইনজীবী এবং তার ক্লায়েন্টের মধ্যে যোগাযোগ ও গোপনীয়তার মৌলিক নীতি লংঘন হয়। ফলে বিষয়টি আইনজীবীদের জন্য মারাত্মক উদ্বেগের। আইনজীবীদের জন্য যে নীতি তা হলো সুষ্ঠু এবং যথাযথভাবে আইনি প্রক্রিয়ায় বিচার কার্য সম্পন্ন করায় সহায়তা করা। ফরাসি মানবাধিকার বিষয়ক আইনজীবী জোসেফ ব্রেহামের ফোনের ফরেনসিক বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ২০১৯ সালে পেগাসাস দিয়ে অনেকবার তার ফোনে প্রবেশ করা হয়েছিল। এর মাধ্যমে অনেক তথ্য চুরি করে নেয়া হয়েছে। এর আগে তিনি মরক্কোতে বড় রকম টার্গেটের শিকারে পরিণত হয়েছিলেন। তিনি বলেন, ফরাসি একজন আইনজীবীর কথোপকথন বিদেশি কোনো রাষ্ট্র শুনতে চাইবে, এর স্বপক্ষে কোনো যুক্তি নেই। এ বিষয়ে আইনগত, নৈতিকতার স্থান নেই। কানাডায় নির্বাসনে বসবাস করেন সউদী আরবের একজন নাগরিক। তিনি ওমর আবদুল আজিজ। তার পক্ষে ইসরাইলের এনএসও গ্রুপের বিরুদ্ধে মামলা করেছিলেন দু’জন আইনজীবী। এবার পেগাসাস ডকুমেন্ট ফাঁসের মধ্যে তাদের ফোন নম্বরও রয়েছে। এখানে উল্লেখ্য, নিহত সাংবাদিক জামাল খাসোগির ঘনিষ্ঠ একজন সহযোগী ও বন্ধু ছিলেন ওমর আবদুল্লাহ। ওই দু’জনের মধ্যে একজন আইনজীবী বলেছেন, তারা শুধু মানুষের ফোন যে হ্যাক করে এমনটা নয়। তাদের রাজনৈতিক কর্মকান্ডের বিষয়েও তথ্য চুরি করে। যদি এসব ঘটনার শিকার ব্যক্তিরা কোনো রকম জবাবদিহিতা চান তাহলে তাদেরকে যেতে হয় জনগণের কাছে। ভারত সরকারের একজন মুখপাত্র বলেছেন, সুনির্দিষ্ট ব্যক্তি বা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে সরকারের নজরদারির যে অভিযোগ আছে তা নিরেট কোনো বাস্তবতা বা সত্যের সাথে সম্পর্কিত নয়। এ বিষয়ে মন্তব্য করেনি মরক্কো, আজারবাইজান ও মেক্সিকো সরকার। ওদিকে এনএসও গ্রুপ বলেছে, যদি কোন ক্লায়েন্ট তাদের প্রযুক্তির অপব্যবহার করে তাহলে তারা ওই ক্লায়েন্টের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করে দেবে। এরই মধ্যে যেসব মাধ্যম পেগাসাস ব্যবহার করে আড়ি পাতার খবর ফাঁস করেছে, তাতে পেগাসাস ব্যবহার হয়েছিল এমন অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে এনএসও। তবে তারা বলেছে, তারা এই প্রযুক্তির অপব্যবহারের বিষয়ে অব্যাহতভাবে তদন্ত করবে এবং তদন্তের ফল অনুযায়ী যথাযথ ব্যবস্থা নেবে। আজারবাইজানের মানবাধিকার বিষয়ক আইনজীবী সামেদ রাহিমলি। তার নিজের মোবাইল নম্বর রয়েছে পেগাসাস প্রজেক্টে। তিনি বলেছেন, মানুষকে যৌনতা ব্যবহার করে ব্লাকমেইল করার ফলে দেশের ভিতরে অধিকারকর্মী, বিশেষ করে নারী অধিকারকর্মীদের জীবন টিকিয়ে রাখা কঠিন হয়ে পড়েছে। তার ভাষায়, এ জন্য বহু মানুষ তাদের স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে পারছেন না। অনেকেই মানসিক সমস্যায় ভুগছেন। গার্ডিয়ান।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন