বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

মহানগর

সদরঘাট-মিরপুর রিকশা ভাড়া ১৫০০ টাকা!

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২৩ জুলাই, ২০২১, ১:৫৩ পিএম

লকডাউনে রাজধানীর রাস্তায় যানবাহন কম। কিছু রিকশা চলাচল কররেও রিকশাচালকরা ভাড়া হাঁকছে আকাশছোঁয়া। এমতবস্থায় রাতের বাস বা লঞ্চে যারা সকালে ঢাকায় এসেছেন তারা পড়েছেন মহাবিপাকে। যাদের শারিরিক সামর্থ আছে তারা পায়ে হেঁটেই রওনা করছেন। তবে এক্ষেত্রে বৃদ্ধ, বয়স্ক, মহিলা ও শিশুদের নিয়ে বিপাকে পড়েছেন অকেনেই। বাধ্য হয়ে তখন আকাশছোঁয়া ভাড়া দিয়েই গন্তব্যের উদ্দেশ্যে রওনা করছেন।
রাজধানীর মিরপুরের লোডেস্টার ফ্যাশনস লিমিটেড গার্মেন্টসের ফিনিশিং বিভাগের অপারেটর লিজা আক্তার। ঈদের ছুটিতে পরিবার পরিজনের সঙ্গে ঈদ করতে বরিশালে যান। লকডাউনের কারণে আজ শুক্রবার (২৩ জুলাই) ভোর ছয়টায় লঞ্চ থেকে সদরঘাটে নামেন।

সদরঘাটে নেমে টার্মিনাল থেকে বেরিয়ে দেখেন হাজার হাজার মানুষ। কিন্তু যানবাহন হাতেগোনা। দীর্ঘ সাড়ে চার ঘণ্টা অপেক্ষা শেষে মিরপুরে যাওয়ার জন্য তিনি ও তার এক সহকর্মী রিকশাচালকের সঙ্গে ভাড়া নিয়ে দরদাম শুরু করেন। রিকশাচালক ভাড়া দেড় হাজার টাকা দাবি করেন।
লিজা আক্তার বলেন, সারা মাস হাড়ভাঙা খাটুনি খেটে বেতন পাই ৮ হাজার টাকা। ঈদে বাড়ি গিয়ে টাকা শেষ। আছে মাত্র ৫০০ টাকা। এখন মিরপুরের রিকশা ভাড়া দেড় হাজার টাকা কোথায় পাব?
রিকশাচালকের কাছে এমন ভাড়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি জানান, এখান থেকে মিরপুরে সিএনজিচালিত অটোরিকশা ভাড়া ৮০০-১০০০ টাকা। সেগুলো ইঞ্জিনে চলে। আর এত দূরের পথ প্যাডেল করে নিয়ে যেতে হবে। তাই ভাড়া দেড় হাজার টাকা চেয়েছেন। একপর্যায়ে লিজা ভাড়া ৮০০ টাকা দিতে চাইলেও রিকশাচালক ১১০০ টাকার কমে যাবেন না বলে জানিয়ে দেন। লিজা নির্বাক হয়ে তাকিয়ে থাকেন।

শুধু লিজা একা নন, আজ শুক্রবার (২৩ জুলাই) ঈদের তৃতীয় দিনে লকডাউন শুরু হওয়ায় গণপরিবহনসহ সকল (রিকশা ও জরুরি কাজে ব্যবহৃত যানবাহন ছাড়া) প্রকার পরিবহন বন্ধ থাকায় দক্ষিণাঞ্চল থেকে ছেড়ে আসা লঞ্চের হাজার হাজার যাত্রী ঘরে ফেরা নিয়ে বিপাকে পড়েন।

বরিশাল, পটুয়াখালী, বরগুনাসহ বিভিন্ন রুট থেকে ছেড়ে লঞ্চগুলো ভোর ৪টা থেকে ৬টার মধ্যে সদরঘাটে এসে পৌঁছায়। যাত্রীর তুলনায় রিকশার সংখ্যা কম হওয়ায় রিকশাচালকরা কয়েকগুণ বেশি ভাড়া দাবি করেন। ফলে সদরঘাট ও ভিক্টোরিয়া পার্ক এলাকায় লাগেজ ও ব্যাগ নিয়ে শত শত যাত্রী যানবাহনের জন্য অপেক্ষা করেন।

অপেক্ষাকৃত যারা অর্থবিত্তের মালিক তারা ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ে চলে যেতে পারলেও নি¤œবিত্ত শ্রেণির মানুষ বিপাকে পড়ে। রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় যাদের বাসা তাদের কেউ পায়ে হেঁটে, কেউ শেয়ারে ভ্যান ভাড়া করে গন্তব্যে যান। কেউ কেউ আবার পরিবার ও আত্মীয়দের ফোন করে এলাকা থেকে ভ্যান ও রিকশা ভাড়া করে সদরঘাটে পাঠায়। সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েন ঢাকার আশপাশের বিভিন্ন এলাকার যাত্রীরা।

ভুক্তভোগিরা বলেন, তারা লকডাউনের কথা মাথায় রেখে ভোর ৪টায় সদরঘাট পৌঁছান। তাদের ধারণা ছিল, ভোর ছয়টা পর্যন্ত গাবতলী, সাভার ও গাজীপুর রুটে বাস চলবে। রাস্তা খালি থাকায় তারা সহজে পৌঁছাতে পারবেন। কিন্তু ভোর ৪টায় নেমেও দেখেন সব বন্ধ।

আজ সকাল সাড়ে ৯টায় সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, সদরঘাট থেকে গুলিস্তান পর্যন্ত অসংখ্য মানুষ। কেউ লাগেজ ও ব্যাগ থাকায় শিশু ও নারীদের নিয়ে পায়ে হেঁটে আসছেন। কেউ ভ্যান আবার কেউ রিকশায় গাদাগাদি করে ছুটছেন। অসংখ্য পরিবারকে রাস্তার পাশে বসে থাকতে দেখা গেছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (11)
Md Nasir Nasir ২৩ জুলাই, ২০২১, ৫:২৬ পিএম says : 0
জনগণ চলার জন্য সুন্দর রাস্তা পেয়েছে কিন্তু ভোগান্তির শেষ নেই বিভিন্ন ভাবে।
Total Reply(0)
Md Nayem Islam Sohag · ২৩ জুলাই, ২০২১, ৫:২৭ পিএম says : 0
বাংলামোটর থেকে কাজীপাড়া ১০০০৳ চাইছে আজকে সকালে।। রিক্সাওয়ালারে বললাম, রিক্সা কিনতে চাই নাই- ভাড়া জিজ্ঞেস করছি।।
Total Reply(0)
Sanjoy Kumar Biswas ২৩ জুলাই, ২০২১, ৫:২৭ পিএম says : 0
সুযোগ পাইলে কেউ কম যায় না,আমাদের দেশে ততক্ষণ পর্যন্ত সবাই সৎ লোক যতক্ষণ সুযোগ নেই,দুঃখজনক ।।।
Total Reply(0)
Tariqu Jones Babu ২৩ জুলাই, ২০২১, ৫:২৭ পিএম says : 0
অথচ এই রিক্সাওয়ালাদের যেকোন দুর্যোগে আমরা প্রায় সকলেই খাদ্য, বস্ত্র বা নগদ টাকা দিয়ে সাহায্য করে থাকি কিন্তু তারা যখনই সামান্যতম সুযোগ পায় বা সাধারন মানুষের এমন কস্ট বা বিপদে তাঁরা ৫ থেকে ১০ গুন ভাড়া আদায় করে। সুতরাং, আগামীতে যখন লাইসেন্স ছাড়া শহর থেকে অবৈধ রিক্সা উচ্ছেদ করা হবে, তখন আমরা এদের পাশে থাকবো না ।
Total Reply(0)
Arif Khan ২৩ জুলাই, ২০২১, ৫:২৮ পিএম says : 0
কেউ গরীব না, কেউ অসহায় না। সুযোগ পেলে সবাই জালিম হয়ে ওঠে। মনের ভেতরের লালসা পুরনের জন্য ব্যাকুল হয়ে উঠে।
Total Reply(0)
Mizanur Rahman Milky ২৩ জুলাই, ২০২১, ৫:২৮ পিএম says : 0
কি ধনী, কি দিন মজুর সুযোগ পেলেই সবাই পাবলিকের শোষন করতে চায়। আর এই সব গরীব ভুখা দিন মজুরদের বিপদের সময় এই সাধারন পাবলিকরাই সাহায্যের হাত সবার আগে বাডিয়ে দেয়।
Total Reply(0)
মোহাম্মদ নূর ইসলাম শুক্কুর মিয়া ২৩ জুলাই, ২০২১, ৯:২১ পিএম says : 0
অকৃতজ্ঞ এরা
Total Reply(0)
md.kamruzzaman ২৩ জুলাই, ২০২১, ১০:২৫ পিএম says : 0
গত দুই সপ্তাহের লকডাউন অলরেডি যাত্রিদের ছাল বাকলা তুলে নিছে.. এইবার হাড্ডি চোষা বাকি অাছে। আশা করি এইবার তা সুনিপুণ ভাবে করতে পারবে।
Total Reply(0)
Mahmudur ২৪ জুলাই, ২০২১, ১:১৬ এএম says : 0
নৈতিকতার অবক্ষয় !
Total Reply(0)
মো: মনির হোসেন দেওয়ান ২৪ জুলাই, ২০২১, ৮:০৯ এএম says : 0
লকডাউন না দিয়ে সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ‍্যবিধি মেনে চললে এই ভোগান্তির মধ‍্যে পরতে হতো না জনগনের। তাই লকডাউনের পরিবর্তে সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ‍্যবিধি মেনে চলা প্রত‍্যেক নাগরিকের বাধ‍্যতা মূলক করতে হবে।
Total Reply(0)
নুর নবী ২৫ জুলাই, ২০২১, ৫:৪৭ পিএম says : 0
সবাই সুজুকগের অপেক্ষায় থাকে।
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন