বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

প্রবাস জীবন

যুক্তরাজ্যে পশু কোরবানিতে সিন্ডিকেটের তৎপরতা

যুক্তরাজ্য সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২৩ জুলাই, ২০২১, ৭:০৪ পিএম

যুক্তরাজ্যে এবারই প্রথম কুরবানীর পশুর কেনাবেচায় সিণ্ডিকেটের তৎপরতা দেখা গেছে । লন্ডন ও যুক্তরাজ্যের অন্যান্য অংশে খোঁজখবর নিয়ে জানা গেছে, একশ্রেণীর অসাধু ব্যবসায়ী কোরবানির পশুর দাম নির্ধারণে সিণ্ডিকেটের আশ্রয় নিয়েছে। যার ফলে ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা কোরবানির পশুর দাম অন্যান্য বছরের চেয়ে অনেক বেশি দিতে বাধ্য হয়েছে। ক্ষেত্রবিশেষে দ্বিগুণ পর্যন্ত দাম নির্ধারণ করা হয়।

সিণ্ডিকেটের কারণে এবার গরুর এক অংশের দাম ২০০/২১০ থেকে বেড়ে ৩০০-৩৫০ এবং ল্যাম্ব/শিপের দাম ১২০/১৩০ এর স্থলে ২০০ থেকে ২৫০ পর্যন্ত বিক্রি করা হয়। করোনা মহামারীতে লোকজনের কাজ নেই আয় নেই। ঈদ উদযাপন করতে গিয়ে এই বাড়তি খরচ তাদের উপর মারাত্মক আর্থিক চাপ তৈরি করেছে । এনিয়ে তীব্র অসন্তোষ দেখা দিয়েছে কমিউনিটির মাঝে। কুরবানীর মাত্র ৪/৫ দিন আগে থেকে সিন্ডিকেট তৎপর হওয়ার কারণে ভুক্তভোগীরা কোথাও প্রতিকারের জন্য দ্বারস্থ হতে পারেননি। কিন্তু তাদের মনে অসন্তোষ রয়ে গেছে এবং গ্রোসারি শপ মালিক, মাংস সরবরাহকারী এবং হোলসেল ব্যবসায়ীদের উপরে গ্রাহকরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। গ্রীন স্ট্রিট বাংলাদেশী গ্রোসারী ব্যবসায়ী জনাব ইকবাল দাম বাড়ানোর জন্য হোলসেলারদের দায়ী করেন। গ্রোসারী শপ মালিকরা তাদের কাছে অসহায়।

বার্কিংসাইড হাইস্ট্রিটের মাংস ব্যবসায়ী জনাব আব্বাস এ প্রতিবেদককে বলেন, এভাবে হঠাৎ করে দাম বৃদ্ধি আমাদের জন্য খুব বিব্রতকর এবং আমরা গ্রাহকদের কোন জবাব দিতে পারছি না। মিস্টার আব্বাস গত ১০ বছর যাবত প্রতি বছরদুই থেকে তিনশ গ্রাহকের কাছে কুরবানীর পশু বিক্রি করেন। এবার তিনি সাপ্লাইয়ারদের আচরণে দুঃখিত হয়ে কুরবানীর সময় বিক্রি বন্ধ করে বন্ধ রেখেছেন।

শপ মালিকরা গ্রোসারি মালিকরা ঐক্যবদ্ধ হলে সাপ্লাইয়ারদের এ ধরনের নোংরা কর্মকাণ্ড সফল হবে না এবং তার দাম বাড়াতে পারবে না। ভুক্তভোগী অনেকেই এ ব্যাপারে সাপ্তাহিক সুরমার কাছে তাদের তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। গ্রোসারি শপের মালিকরা সিণ্ডিকেটের কাছে তাদের অসহায়ত্বের কথা প্রকাশ করেন ।

গ্রাহকরা অনেকে গ্রোসারি শপ এর উপর ক্ষোভ প্রকাশ করলে গ্রোসারি শপ মালিকরা স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেন তারা সিণ্ডিকেটের অপকর্মের শিকার। কারণ করোনা মহামারীর সময় মাংসের দাম তেমন একটা বৃদ্ধি পায়নি । আর ইউরোপ থেকে আগের মূল্যেই তারা এখনো সরবরাহ করছেন। কিন্তু মাঝখানে মধ্যস্বত্বভোগী হোলসেল ব্যবসায়ীরা কুরবানীর সুযোগে গরু-ছাগল ও ল্যাম্বের দাম ৫০ শতাংশ থেকে কোন কোন ক্ষেত্রে ১০০% পর্যন্ত বাড়িয়ে দিয়েছেন। এর জন্য গ্রোসারি শপ মালিকরা অনেকেই বাংলাদেশ ও পাকিস্তানি অরিজিন কিছু অসাধু ব্যবসায়ীকে দায়ী করেছেন । তবে এই সিন্ডিকেটের সঙ্গে সুস্পষ্টভাবে কারা জড়িত এটা গ্রোসারি শপ মালিকরা জানেন না বলে তাদের অজ্ঞতা প্রকাশ করেন‌। ক্রিসমাসের সময়ে যেখানে জিনিসপত্রের দাম কমানো হয় গ্রাহকদের কেনাকাটা সুবিধার্থে বিভিন্ন অফার দেয়া হয় সেখানে এই মহামারীর মধ্যে মানুষের অর্থনৈতিক দুর্দশা সত্ত্বেও অসাধু ব্যবসায়ীদের কুরবানীর নিয়ে সিণ্ডিকেট কমিটিতে তীব্র সমালোচনা দেখা দিয়েছে।

গ্রাহকদের অভিমত, গ্রোসারি মালিকরা এই সিণ্ডিকেটের মুখোশ উন্মোচন করার ক্ষেত্রে গ্রাহকদের সাহায্য করতে পারেন। এছাড়া বিভিন্ন কাউন্সিলের বিজনেস স্ট্যাণ্ডার্ড এর মাধ্যমে এ ব্যাপারে প্রতিকারও যাওয়া যেতে পারে । তাহলে ভবিষ্যতে সিণ্ডিকেটের যে কোনো অপতৎপরতা রুখে দেওয়া সম্ভব হবে । অন্যথায় এই খারাপ উদাহরণ প্রতিবারই বাজারে অস্থিরতা তৈরি করবে ও হাজার হাজার পরিবারের ভোগান্তির কারণ হবে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন