শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

বিনোদন প্রতিদিন

গণসঙ্গীতের শিল্পী ফকির আলমগীরের কালজয়ী যত গান

বিনোদন ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৪ জুলাই, ২০২১, ১২:৫৫ পিএম

গণসঙ্গীতের কিংবদন্তি শিল্পী ফকির আলমগীর। মহামারি করোনার থাবায় উড়ে গেল তার প্রাণপাখি। আট দিন এই ভাইরাসের সঙ্গে লড়াই করে শুক্রবার (২৩ জুলাই) রাতে না ফেরার দেশে পাড়ি জমিয়েছেন ফকির আলমগীর। তার মৃত্যু দেশের সংগীতের জন্য বড় ক্ষতি।

গত ১৪ জুলাই ফকির আলমগীরের শরীরে করোনাভাইরাস ধরা পড়ে। এরপর চিকিৎসকের পরামর্শে বাসায় থেকেই চিকিৎসা নিচ্ছিলেন তিনি। কিন্তু ১৫ জুলাই সন্ধ্যা থেকে তার জ্বর ও শ্বাসকষ্ট বেড়ে যাওয়ায় হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। এরপর হাসপাতালের আইসিইউ এবং শেষ পর্যন্ত লাইফ সাপোর্টে পর্যন্ত রাখা হয়েছিল। কিন্তু শেষ রক্ষা হলো না কিছুতেই।

জানা গেছে, ফকির আলমগীরের ফুসফুসের সিংহভাগে করোনার সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়েছিল। এছাড়া তার ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা ছিল।

এ দেশে গণসংগীতকে আলাদা করে পরিচিত করে তুলেছিলেন তিনি। তার কণ্ঠে গণসংগীত পেয়েছে ভিন্ন মাত্রা। কিন্তু তিনি শুধু গণসংগীত শিল্পীই ছিলেন না।  ছিলেন পপ গায়কও। ৭১ এর মুক্তিযুদ্ধের পর যুদ্ধের অভিজ্ঞতা থেকে সঞ্চিত যন্ত্রণাকে প্রকাশ করার জন্যই দেশজ সংগীতের সঙ্গে পাশ্চাত্য সুরের মেলবন্ধন ঘটিয়েছে ফকির আলমগীর ও তার সময়ের কয়েকজন শিল্পী। তখন তারা শুরু করেছিলেন প্রথম বাংলা পপ ধারার গান। বাংলা পপ গানের বিকাশেও ফকির আলমগীরের রয়েছে বিশেষ অবদান।

বরেণ্য এ শিল্পী তার দীর্ঘ ক্যারিয়ারে  অসংখ্য জনপ্রিয় গান উপহার দিয়েছেন। তার  গাওয়া ‘সান্তাহার জংশনে দেখা’,  ‘বনমালী তুমি’ ‘ কালো কালো মানুষের দেশে’, মায়ের একধার দুধের দাম’, ’মন আমার দেহ ঘড়ি’, ‘আহারে কাল্লু মাতব্বর’, ‘ও জুলেখা’সহ বেশ  কিছু গান দারুণ জনপ্রিয়তা পায়। এর মধ্যে ‘ও সখিনা’ গানটি এখনো মানুষের মুখে মুখে ফেরে। ১৯৮২ সালের বিটিভির ‘আনন্দমেলা’ অনুষ্ঠানে গানটি প্রচারের পর দর্শকের মধ্যে সাড়া ফেলে। কণ্ঠ দেওয়ার পাশাপাশি গানটির সুরও করেছেন ফকির আলমগীর।

ফকির আলমগীরের জন্ম ১৯৫০ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি ফরিদপুরের ভাঙ্গা থানার কালামৃধা গ্রামে। কালামৃধা হাইস্কুল থেকে ১৯৬৬ সালে মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছিলেন তিনি। জগন্নাথ কলেজ (জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়) থেকে তিনি উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করেছিলেন। এরপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকেও উচ্চতর ডিগ্রি লাভ করেন গুণী এই ব্যক্তি।

১৯৬৬ সালে ছাত্র রাজনীতিতে যোগ দেন ফকির আলমগীর। সেই সূত্রেই গণসংগীতে আসা। ক্রান্তি শিল্পী গোষ্ঠী ও গণশিল্পী গোষ্ঠীর সদস্য হিসেবে তিনি ষাটের দশক থেকেই সরব হয়ে ওঠেন। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের আগে যেসব বড় আন্দোলন হয়েছিল, সেগুলোতে অসামান্য ভূমিকা রেখেছিলেন ফকির। তার কণ্ঠ বজ্র হয়ে বেজেছিল আন্দোলনের মিছিলে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন