শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

সম্পাদকীয়

সুশাসন ও জবাবদিহি নিশ্চিত করতে হবে

সরদার সিরাজ | প্রকাশের সময় : ২৫ জুলাই, ২০২১, ১২:০২ এএম

যত রকমের অপরাধ রয়েছে, তার বেশিরভাগই ক্রমান্বয়ে বেড়ে চলেছে। সব ধরনের অপরাধ দমন করার জন্য আইন ও তা বাস্তবায়ন করার জন্য সরকারি জনবল আছে। কতিপয় ক্ষেত্রে জিরো টলারেন্স পর্যন্ত ঘোষণা করা হয়েছে। তবুও অপরাধসমূহ বেড়েই চলেছে। অনেক ক্ষেত্রে বৈশ্বিক সূচকে শীর্ষ পর্যায়ে রয়েছে। যেমন: বৈষম্য, দ্রুত সময়ে অতি ধনী হওয়া, শ্রমিকের অধিকার প্রতিষ্ঠা না হওয়া, দারিদ্রের সংখ্যা, বেকারত্ব, নারী ও শিশু নির্যাতন, অর্থ ও মানব পাচার, বিচারহীনতা, দূষণ, মাদক, গণতন্ত্রহীনা, দুর্ঘটনা ইত্যাদি। অনেক অপরাধের ক্ষেত্রে রক্ষকও ভক্ষকে পরিণত হয়েছে! ফলে দেশের অধিকাংশ মানুষ আতংকিত ও হতাশগ্রস্ত হয়ে পড়েছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ও উদ্বিগ্নতা প্রকাশ করছে। সুশাসনের অভাবেই দেশের এই অকল্পনীয় পরিণতি হয়েছে। আর সুশাসন প্রতিষ্ঠিত হবেই বা কীভাবে? যারা এই মহান কাজটি করবে, তারাই তো শৃংখলাবদ্ধ হয়ে রয়েছে।

অথচ দেশের সংবিধান প্রণয়নকালেই সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে পূর্ণ স্বাধীন ও সার্বভৌম করার কথা বলা হয়েছে। এতে দীর্ঘ সময়েও তা বাস্তবায়ন হয়নি। নির্বাহী বিভাগের অধীনেই রয়েছে। উপরন্তু প্রতিষ্ঠানগুলোর জনবল দলীয়করণ হতে হতে এখন সরকারি দলে পরিণত হয়েছে! ফলে কাজ-কর্ম সেভাবেই হচ্ছে। তাই মানুষের আস্থাহীন হয়ে পড়েছে। সর্বাধিক বিতর্কিত হয়েছে নির্বাচন কমিশন। একই অবস্থা হয়েছে সরকারি অন্যসব জনবলের ক্ষেত্রেও। সরকারি জনবলের অধিকাংশই অদক্ষ, অযোগ্য ও দুর্নীতিপরায়ণ। যে সামান্য সংখ্যক লোক দক্ষ, যোগ্য ও সৎ তারা নিরপেক্ষ হওয়ায় তাদেরকে গুরুত্বহীন পদে ন্যস্ত অথবা ওএসডি করা হয়েছে। ফলে দক্ষতা ও সততার অভাবে বেশিরভাগ কাজ ঠিক মতো হচ্ছে না। যেটুকু হচ্ছে, তার প্রায় সবক’টিতেই চলছে লুটপাট! কিছু সরকারি প্রতিষ্ঠান তো প্রায় অকার্যকর হয়ে পড়েছে। যেমন: বিএসবি। সাম্প্রতিককালে বিএসবির কোনো তথ্যই দেশ-বিদেশে গ্রহণযোগ্য হচ্ছে না! বিশ্বব্যাংকের স্ট্যাটিস্টিকাল ক্যাপাসিটি ইনডেক্স-২০২০ মতে, বিএসবির স্কোর ৬০ (২০১৪ সালে ছিল ৮০)।

গণতন্ত্র না থাকলে সুশাসন প্রতিষ্ঠিত হয় না। দেশে গণতন্ত্র এখন চরম ভঙ্গুর। গণতন্ত্র বলতে যা বুঝায় তা নামকাওয়াস্তে। যেমন: স্বাধীন মত প্রকাশের অধিকার ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা রুদ্ধ হয়ে পড়েছে ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনে। ভয়ে সহজে কেউ তিক্ত সত্য কথা বলার সাহস পাচ্ছে না। সবাই সেলফ সেন্সরশিপে চলে গেছে। বিরোধী দলের রাজনীতির উপরও চলছে দমন-পীড়ন। বিরোধী দলের কর্মকান্ড সীমিত হতে হতে ঘরবন্দি হয়েছে। দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌত্ব ও স্বকীয়তা অটুট রাখার ভিত্তি হচ্ছে ইসলাম। তার ধারকরাও একই পরিণতির শিকার হয়েছেন। দেশের নির্বাচন ব্যবস্থা ধ্বংস হয়ে গেছে। নির্বাচন যথারীতিভাবেই হচ্ছে। তবে, সেটা প্রহসনের। আগে হতো হুন্ডা, গুন্ডা ও কালো টাকার নির্বাচন। এখন তাও লাগে না। দিনের ভোট পূর্ব রাতেই হয়ে যায়। এতে সহায়তা করছেন প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট লোকরা। ফলে সরকারি দলের প্রার্থীরা প্রায় একতরফাভাবেই জয়ী হচ্ছেন। এছাড়া, নির্বাচনে অটোপাসেরও বিশ্ব রেকর্ড হয়েছে। তাই ভোট পাগল জাতি নির্বাচনবিমুখ হয়ে পড়েছে। ভোটের দিন ভোটার খুঁজে পাওয়া যায় না কেন্দ্রে। উপরন্তু নির্বাচিতদের অধিকাংশই হচ্ছেন অরাজনৈতিক ব্যক্তি। তথা মাস্তান, বাটপার, আমলা ও ব্যবসায়ী। ফলে, রাজনীতি কলুষিত হয়ে পড়েছে। স্থানীয় পরিষদের কোথাও জবাবদিহি নেই। একই অবস্থা হয়েছে জাতীয় সংসদের নির্বাচনেও। তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতি বাতিল হওয়ার পর সরকারের অধীনেই সংসদ নির্বাচন হচ্ছে। আর তাতে সরকারি দলের ও জোটের প্রার্থীরা একতরফাভাবে জয়ী হচ্ছেন। সংসদও কার্যকর হচ্ছে না। এমপিদের বেশিরভাগ সংসদে অনুপস্থিত থাকেন। সংসদীয় কমিটিরও সুপারিশগুলো তেমন বাস্তবায়ন হয় না। সংসদে যেটুকু আলোচনা হয়, তার অধিকাংশই অতীতের চর্বিত-চর্বণ আর বিরোধী পক্ষের মুন্ডপাত! সংসদে এমপিদের মূল কর্ম হয়ে পড়েছে বিল পাসের সময় হ্যাঁ আর না ভোট দেয়া। এ বক্তব্য স্বয়ং একজন এমপির। সংসদে সরকারের জবাবদিহি হচ্ছে না। সরকার ইচ্ছামত কাজ করে যাচ্ছে। সংসদের কর্মের উপর দেশের অধিকাংশ মানুষেরও কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই। অথচ, সংসদ পরিচালনায় প্রতি মিনিটে ১.৬২ লক্ষ টাকা ব্যয় হয়।

দেশের শাসন ব্যবস্থায়ও রয়েছে অনেক ত্রুটি, যার অন্যতম হচ্ছে: এমপি ও স্থানীয় সরকারের প্রতিনিধিদের ক্ষমতার দ্বন্দ্ব। সংবিধান মতে, স্থানীয় সরকারের পরিষদগুলো স্বাধীন, সার্বভৌম ও স্বাবলম্বী এবং সব কর্মের কেন্দ্রবিন্দু। আর এমপিদের কর্ম শুধুমাত্র আইন প্রণয়ন করা। এটাই গণতন্ত্রের নীতি। কিন্তু দেশে স্থানীয় পরিষদের কর্মে এমপিদের সম্পৃক্ত করা হয়েছে। উপরন্তু সরকারেরও অধীনস্ত করা হয়েছে। এতে সৃষ্টি হয়েছে চরম দ্বন্দ্ব। এ অবস্থায় করোনাসংক্রান্ত ও ত্রাণ কার্যাবলি সমন্বয়ের জন্য প্রতিটি জেলায় ডিসিদের নেতৃত্বে কমিটি করা হয়েছে। এ কাজগুলো তদারকির জন্য একজন করে সচিব নিয়োগ করা হয়েছে। পৌর সভার কর্ম সম্পাদনেও কর্মকর্তা নিয়োগ করা হয়েছে। ফলে সব কর্ম আমলা নির্ভর হয়েছে। স্থানীয় সরকার কার্যকর হচ্ছে না। রাজনীতি ও গণতন্ত্রও বিকশিত হচ্ছে না তৃণমূলে। এ নিয়ে সংসদে ব্যাপক কথা-বার্তা হয়েছে। অনেকেই আমলাদের দোষারূপ করেছেন। বলেছেন, ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স অনুযায়ী সচিবের উপরে এমপির স্থান। কথাটি শতভাগ সঠিক। কিন্তু জেলার কর্তৃত্ব ডিসি ও সচিবদের দিয়েছেন কে? আমলারা কি এটা দখল করেছেন? না তা করেননি। তাদেরকে এ দায়িত্ব দিয়েছেন রাজনৈতিক সরকারই। উপরন্তু আমলা, ব্যবসায়ী ও বাটপারদের নির্বাচনে মনোনয়ন এবং দলের নেতৃত্ব দিয়েছেন রাজনীতিবিদরাই। এতে প্রকৃত রাজনীতিবিদদের অনেকেই ছিটকে পড়েছেন। তাতে রাজনীতি কলুষিত ও দুর্বল হয়ে পড়েছে। নতুন প্রজন্মের মেধাবীরা রাজনীতিতে সম্পৃক্ত হচ্ছে না। সর্বোপরি সাম্প্রতিককালের নির্বাচনে বিজয়ের ক্ষেত্রে আমলাদের ভূমিকা জনগণের চেয়ে বেশি। আমলাদের মাধ্যমে অনৈতিক কাজ করানো হলে তাদেরকে নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন। সর্বোপরি অনেক রাজনীতিবিদের বিরুদ্ধে দুনীর্তিসহ নানা অপরাধ এবং অযোগ্যতা ও অদক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন আছে। এসব কারণে রাজনীতিবিদদের ডিগনিটি দিনে দিনে কমে যাচ্ছে।

দেশের চলমান সংকটের স্থায়ী সমাধান করতে হবে, যার একমাত্র পথ হচ্ছে- নীতির পরিবর্তন। যেমন: সংবিধান মতে, সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে পূর্ণ স্বাধীন ও স্বাবলম্বী করে নির্বাহী বিভাগের হস্তক্ষেপ মুক্ত করতে হবে। উপরন্তু এসব পরিচালনার জন্য তার প্রধান ও সহযোগীদের নিয়োগের জন্য প্রতিষ্ঠান ভিত্তিক সংসদীয় কমিটি গঠন করতে হবে। যাতে থাকবেন সংসদের সরকারি দলের ৩ জন, বিরোধী দলের ২ জন ও সংশ্লিষ্ট খাতের ২ শীর্ষ বিশেষজ্ঞ। এই কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের প্রধান ও তার সহযোগীরা সরাসরি নিয়োগ প্রাপ্ত হবেন মহামান্য রাষ্ট্রপতির মাধ্যমে। সর্বোপরি প্রতিষ্ঠানগুলোই তার নিজস্ব জনবল নিয়োগ ও পরিচালনা করবে নিজস্ব সচিবালয়ের মাধ্যমে। এসব হলে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলো নিরপেক্ষ, দক্ষ ও যোগ্য লোকদের নেতৃত্বে গঠিত হবে। তারা স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারবে। কাজের গতি ও মান বৃদ্ধি পাবে। তদ্রুপ সরকারের অন্য সব খাতের জনবলকেও দলীয়করণমুক্ত করে দক্ষ, যোগ্য ও সৎ লোকদের নেতৃত্বে ঢেলে সাজাতে হবে। তাহলেই তাদের কাজ নিরপেক্ষভাবে হবে। দেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠিত হবে। সব অপকর্ম নির্মূল হবে। দেশে শান্তি ও সার্বিক উন্নতির পথ সুগম হবে। সরকারি প্রতিষ্ঠান ও তার জনবল মানুষের আস্থা ভাজন হবে।

অপরিদকে, স্থানীয় সরকারের সব পরিষদকে পূর্ণ স্বাধীন করে সংশ্লিষ্ট এলাকার সকল কর্ম নির্বাচিত প্রতিনিধিদের উপর ন্যস্ত করতে হবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীও গত ৩০ জুন সংসদে বলেছেন, স্থানীয় সরকারকে শক্তিশালী, কার্যকর ও স্বাবলম্বী করা বর্তমান সরকারের অন্যতম লক্ষ্য। স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশনও স্থানীয় সরকারের পাঁচটি স্তরকে আরো শক্তিশালী ও স্বাবলম্বী করে অধিক কল্যাণমূলক প্রতিষ্ঠানে রূপান্তর ও সুশাসন প্রতিষ্ঠায় নিবিড় ভূমিকা পালনের জন্য সংশ্লিষ্ট আইনগুলো যুগোপযোগী করে সংশোধনের প্রস্তাব প্রণয়ন করেছে। কিন্তু এখানেই থেমে থাকলে চলবে না। এই আইনগুলো দ্রুত পাস করে বাস্তবায়ন করতে হবে। উপরন্তু এমপিদের শুধুমাত্র আইন প্রণয়নের মধ্যে সীমিত রাখতে হবে। সরকারেরও কর্তৃত্বও কমতে হবে। সরকার কাজ করবে শুধুমাত্র কেন্দ্রীয় কাজগুলো। তাহলে প্রশাসন বিকেন্দ্রীকরণ হবে। সরকারের উপর চাপ কমবে। স্থানীয় সরকারের পরিষদগুলো স্বাধীন ও স্বাবলম্বী হবে। ক্ষমতার দ্বন্দ্ব নিরসন হবে। শান্তি ও উন্নতি প্রতিষ্ঠিত হবে। স্মরণীয় যে, এমপিদের উন্নয়ন কর্ম থেকে সরিয়ে নিলেই অরাজনৈতিক ব্যক্তিরা রাজনীতি থেকে সটকে পড়বেন। জাতীয় রাজনীতি কলুষমুক্ত হবে। দুর্নীতি কমবে। গণতন্ত্র শক্তিশালী হবে।

জাতীয় সংসদকে সকল কর্মের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত করতে হবে। সংসদীয় কমিটিকে খুবই শক্তিশালী করে তার সব সুপারিশ দ্রুত বাস্তবায়ন বাধ্যতামূলক করতে হবে। তাহলে সরকারের জবাবদিহি কায়েম হবে। আমলাদের প্রভাব ও দুর্নীতি কমবে ও কাজের গতি বাড়বে। সরকারি অফিসে প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়াতে হবে। বিচার ব্যবস্থা সংস্কার করে প্রতিটি বিচার স্বল্প দিনের মধ্যে নিষ্পত্তি করার ব্যবস্থা করতে হবে। সর্বোপরি সব রাজনৈতিক দলে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে। নতুবা দেশে গণতন্ত্র টেকসই হবে না। সে লক্ষ্যে কিছু নীতি করতে হবে। যার অন্যতম হচ্ছে, সব দলের সব কমিটির নির্দিষ্ট মেয়াদেই কাউন্সিল এবং তাতে গোপন ভোটের মাধ্যমে নেতা নির্বাচন করতে হবে। এর ব্যত্যয় হলে সংশ্লিষ্ট কমিটি বাতিল হবে। এছাড়া, এক ব্যক্তি এক পদ করতে হবে। দলের সদস্যপদ প্রাপ্তির ৫ বছর আগে কোন নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন অবৈধ হবে। কমিটিতে ৩৩% নারী রাখার বিধান বাস্তবায়ন বাধ্যতামূলক করতে হবে। ছাত্র, শ্রমিক ও অন্যসব পেশজীবীর জাতীয় রাজনীতির লেজুড়বৃত্তি নিষিদ্ধ করতে হবে। একই ব্যক্তি দল ও সরকারের প্রধান হতে পারবেন না। এসব ব্যাপারে জাতীয় ঐক্যমত্য দরকার।
লেখক: সাংবাদিক ও কলামিস্ট।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (1)
Dadhack ২৫ জুলাই, ২০২১, ৫:৫৭ পিএম says : 0
মানব রচিত আইন দিয়ে কোথাও কখনো সুশাসন ও জবাবদিহি নিশ্চিত করা যায় না... বিশ্বশ্রেষ্ঠ শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া রহমতউল্লাহ লিখেছেন: অকাট্য দলিল ও সমস্ত উম্মাহর ঐক্য বদ্ধ ঐক্যমতের ভিত্তিতে একথা স্পষ্ট যে ব্যক্তি ইসলাম ব্যতীত অন্য ধর্মকে সমর্থন করবে কিংবা মোহাম্মদ [সাঃ] শরিয়া ব্যতীত অন্য কোন রাষ্ট্রব্যবস্থাকে সমর্থন করবে সে কাফের. যেভাবে কেউ কোরআনের কিছু অংশ বিশ্বাস করে আর কিছু অংশ অবিশ্বাস করলে কাফের হয়. { মাজমুউ ফাতাওয়া শাইখুল ইসলাম 524/28 } Surah:5: Ayat:44: “যে ব্যক্তি আল্লাহর বিধান অনুযায়ী বিচার করে না এমন লোক তো পূর্ণ কাফির” Surah:5: Ayat:45: “যে ব্যক্তি আল্লাহর নাযিলকৃত বিধান অনুযায়ী ফায়সালা করে না তাহলে তো এমন ব্যক্তি পূর্ণ জালিম.” Surah:5: Ayat:47: “যে ব্যক্তি আল্লাহর নাযিলকৃত বিধান অনুযায়ী বিচার ফয়সালা করে না, তাহলে তো এই লোকই পাপাচারী ফাসেক”এইজন্যই তো নবী [সাঃ] নিজেই সাতাশটা যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন কাফেরদের বিরুদ্ধে যারা আল্লাহর আইন দিয়ে দেশ শাসন করত না… আলী রাদিয়াল্লাহু বলতেন যে যুগে যুগে ইসলামকে ধ্বংস করবে দরবারী আলেম ও শাসকগণ. “তোমরা কি কিতাবের কিছু অংশে ঈমান রাখ আর কিছু অংশ অস্বীকার কর? সুতরাং তোমাদের মধ্যে যারা তা করে দুনিয়ার জীবনে লাঞ্ছনা ছাড়া তাদের কী প্রতিদান হতে পারে? আর কিয়ামতের দিনে তাদেরকে কঠিনতম আযাবে নিক্ষেপ করা হবে। আর তোমরা যা কর, আল্লাহ সে সম্পর্কে গাফেল নন”। সূরা বাকারা: (৮৫) ইসলামে নিশ্চিত ভাবে প্রমাণিত কোনো বিষয় যে প্রত্যাখ্যান করল, সে কাফের ও পথভ্রষ্ট, যদিও তার প্রত্যাখ্যান করা বিষয়ের পরিমাণ খুব কম ও সামান্য হয়। অতএব পার্থিব রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত ইসলামের সকল বিধান যে প্রত্যাখ্যান করে, সে কাফের বলার অপেক্ষা রাখে না, যেমন সেকুলারিজম বা ধর্মনিরপেক্ষতার অনুসারীরা।
Total Reply(0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন