শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

রাজধানীতে গ্রেফতার ৩৮৩

দ্বিতীয় দিনে গাড়ির চাপ কম, মানুষ চলাচল বেশি

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৫ জুলাই, ২০২১, ১২:০০ এএম

করোনাভাইরাস রোধে সরকারের পূর্বঘোষিত ১৪ দিনের কঠোর বিধিনিষেধের দ্বিতীয় দিনেও রাজধানী বিভিন্ন প্রবেশমুখে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর নজরদারি দেখা গেছে। চেকপোস্টগুলোতে সঠিক কারণ দেখাতে না পারলে ঘর থেকে বের হওয়া মানুষদের গুনতে হয়েছে জরিমানা। তবে যাত্রাবাড়ী এলাকায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে মানুষ হেঁটে, রিকশা, ভ্যান গাড়িতে নির্বিঘ্নে চলাচল করতে দেখা গেছে। তবে কঠোরতম বিধিনিষেধের দ্বিতীয় দিনে রাজধানীতে ৩৮৩ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বিনা প্রয়োজনে বাসা থেকে বের হওয়ার অভিযোগে তাদের গ্রেফতার করা হয়।

এদিকে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় পুলিশ ও বিজিবির সম্বনয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হয়। এর মধ্যে রাজধানীতে প্রবেশের ক্ষেত্রে বাবুবাজার ব্রিজের মুখে পুলিশ, বিজিবি ও ভ্রাম্যমাণ আদালতের চেকপোস্টে প্রাইভেটকারসহ অন্যান্য যানবাহনকে কারণ জানাতে চাওয়া হয়। সঠিক কারণ না জানাতে পারলে ভ্রাম্যমাণ আদালত তাদের ১০০ থেকে ৫০০ টাকা জরিমানা করছেন। সকাল ৯টা থেকে ১১টা পর্যন্ত কারণ দর্শাতে না পারায় ২১ জনকে জরিমানা করা হয়। সেখানে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করছেন ঢাকার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সানজিদা পারভীন।

ডিএমপির গণমাধ্যম ও জনসংযোগ বিভাগের এডিসি ইফতেখায়রুল ইসলাম বলেন, গতকাল সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ডিএমপির ভ্রাম্যমাণ আদালত রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে বিধিনিষেধ ভঙ্গ করায় ১৩৭ জনকে ৯৫ হাজার ২৩০ টাকা জরিমানা করেন। এছাড়াও র‌্যাবের পক্ষ থেকে সারাদেশে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে ২১২ জনকে ১ লাখ ৯১ হাজার ৪৭০ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

অপরদিকে, যাত্রাবাড়ীর রায়েরবাগ-শনির আখড়া ঘুরে দেখা গেছে, মহাসড়কে গাড়ি খুবই কম। তবে মানুষের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। পায়ে হেঁটে এই মহাসড়ক ধরে পশ্চিমে যাত্রাবাড়ীর দিকে যাচ্ছিলেন মো. শাহ আলম। তিনি বলেন, বাসায় মেহমান আছে। একটু বেশি বাজার করতে হবে। তাই যাত্রাবাড়ী আড়তে যাচ্ছি। চারিদিক একটু ফাঁকা ফাঁকা হেটে যেতে খারাপ লাগছে না। আমাদের হাঁটাহাঁটির অভ্যাস তো একেবারে উঠেই গেছে। রায়েরবাগ থেকে শনির আখড়া যেতে রিকশা খুঁজছিলেন শফিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, আমরা একটি গরুর খামার আছে মাতুয়াইলে। দুধ নিয়ে যাচ্ছি মিষ্টির দোকানের কাস্টমারদের।

এছাড়া ফাঁকে ফাঁকে পুলিশের চোখ এড়িয়ে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা ও ইজিবাইকও চলাচল করতে দেখা গেছে এই মহাসড়কে। রায়েরবাগে মহাসড়কের দক্ষিণ পাশে একটি চেকপোস্ট থাকলেও সেটি ছিল অনেকটাই নিষ্ক্রিয়। রায়েরবাগে মহাসড়কের পাশে অস্থায়ী ফলের দোকান খুলতে দেখা গেছে। এছাড়াও এই মহাসড়কের আশপাশের এলাকাগুলোতে মানুষের চলাচল স্বাভাবিক সময়ের মতো। মানুষ ভিড় করে বাজার করছেন। অনেকের মুখে মাস্কও নেই।

মিরপুরের সড়কগুলোতে পরিবহন চলাচলের চাপ অনেকটাই কম দেখা গেছে। অকারণে ব্যক্তিগত পরিবহন দিয়ে বের হলেই তাকে মামলা ও জরিমানার কবলে পড়তে হয়েছে। গতকাল শনিবার মিরপুরের বিভিন্ন চেকপোস্ট ঘুরে এমন চিত্র দেখা যায়।

বাংলা কলেজ পুলিশ চেকপোস্টে দায়িত্বরত ট্রাফিক ইন্সপেক্টর সাইফুল আলম বলেন, সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক আমরা কড়াকড়িভাবে বিধিনিষেধ বাস্তবায়ন করছি। অযৌক্তিক ও কারণ ছাড়া কেউ বের হলে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হয়। তিনি বলেন, ঈদে গ্রামের বাড়িতে গিয়ে অনেক মানুষ ঢাকায় ফিরতে পারেননি বলে মহানগরের সড়কগুলোতে ব্যক্তিগত পরিবহন কম পরিমাণে চলাচল করছে। তবে প্রতিনিয়ত পরিবহনের চাপ বাড়ছে বলে জানান তিনি।

গাড়ির চাপ নেই: রাজধানীর মহাখালী, তেজগাঁও, ফার্মগেট, শেরেবাংলা নগর, শ্যামলী, কল্যাণপুর ও মিরপুর এলাকায় ঘুরে দেখা গেছে, গাড়ির তেমন চাপ নেই। তবে গাবতলীতে দূরপাল্লার গাড়ি প্রবেশ করার কারণে সেখানে গাড়ির চাপ লক্ষ করা গেছে। পুলিশ বলছে, বিধিনিষেধ কার্যকরে ভোর থেকে কঠোর অবস্থানে থেকে দায়িত্ব পালনের নির্দেশনা রয়েছে।

ঢাকা মহানগর পুলিশের ট্রাফিকের মিরপুর বিভাগের ডিসি নজরুল ইসলাম বলেন, সরকারি নির্দেশনার বাইরে কোনো যানবাহনকে রাস্তায় চলাচল করতে দেয়া হচ্ছে না। আমরা কঠোর অবস্থানে থেকে সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করছি। সরকারি নির্দেশনার বাইরে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই আমাদের।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন