যুক্তরাষ্ট্রে আবারও বাড়ছে করোনার সংক্রমণ। ভাইরাসটির লাগাম টানতে প্রয়োজনে টিকার তৃতীয় ডোজ দেওয়ার কথা জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. অ্যান্থনি ফাউসি। একইসঙ্গে দেশটিতে আবারও মাস্ক বাধ্যতামূলক করা হতে পারে। গণমাধ্যমে দেয়া এক বক্তব্যে মার্কিন শীর্ষ সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ ও প্রেসিডেন্ট বাইডেনের চিকিৎসা উপদেষ্টা ডা. অ্যান্থনি ফাউসি বলেন, করোনা থেকে রক্ষা পেতে ঝুঁকিপূর্ণ বা কঠিন রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের টিকার বুস্টার অর্থাৎ তৃতীয় ডোজ নিতেই হবে। সাধারণ ব্যক্তিদের ক্ষেত্রেও চলছে গবেষণা। মহামারি করোনাভাইরাস মোকাবিলায় যুক্তরাষ্ট্র ভুল পথে হাঁটছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
একই সঙ্গে নতুন করে মাস্কপরা চালু করাসহ গণটিকাদান কর্মসূচিকে আরও গতিশীল করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন এ স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ। যদিও বাইডেন প্রশাসন জানিয়েছিল, দুটি টিকা নেওয়া হলে মাস্ক পরার প্রয়োজন নেই। টানা ছয় দিন ১ হাজারের বেশি নতুন কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হওয়ার পর প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসের বিস্তার রোধে লস অ্যাঞ্জেলেসে আবারও মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। শনিবার স্থানীয় সময় রাত ১১টা ৫৯ মিনিট থেকে এ নির্দেশনা কার্যকর হয়েছে।
এদিকে ভারতে ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিক্যাল রিসার্চও তাদের গবেষণায় জানিয়েছে টিকার বুস্টার বা তৃতীয় ডোজ নেওয়া দরকার। যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য বিভাগ জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের ১৬ কোটি ২৭ লাখ মানুষ যা মোট জনগোষ্ঠীর ৪৯ শতাংশ করোনার টিকা গ্রহণ করেছেন। গত এপ্রিল পর্যন্ত টিকা প্রদানে বিশ্বের শীর্ষ স্থানে ছিল যুক্তরাষ্ট্র। তারপর থেকেই দেশটিতে টিকা গ্রহণে আগ্রহ কমতে থাকে।
টিকা নিলে নগদ অর্থ, গাঁজা, বিয়ার এমনকি বন্দুকসহ নানা পুরস্কারের ব্যবস্থা থাকলেও শেষ পর্যন্ত প্রেসিডেন্ট বাইডেনের ঘোষণা অনুযায়ী, এ বছরের ৪ জুলাই যুক্তরাষ্ট্রের স্বাধীনতা দিবসের আগে ৭০ শতাংশ মানুষকে টিকার আওতায় নেওয়ার সেই লক্ষ্য পূরণ হয়নি। টিকার বাইরে থাকাদের মধ্যে ভারতে শনাক্ত হওয়া করোনাভাইরাসের অতিসংক্রামক ‘ডেল্টা ধরনের’ কারণে সংক্রমণ বাড়ায় উদ্বেগ ও সতর্কতা বার্তা জানিয়েছেন দেশটির স্বাস্থ্য বিভাগের শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তারা। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ও প্রাণহানির পরিসংখ্যান রাখা ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডওমিটারের তথ্যানুযায়ী, বাংলাদেশ সময় মঙ্গলবার (২৭ জুলাই) সকাল ৮টা পর্যন্ত পূর্ববর্তী ২৪ ঘণ্টায় বিশ্বে করোনায় মৃতের সংখ্যা ও সংক্রমণ বেড়েছে
এ সময় মারা গেছেন আরও ৭ হাজার ৩৮৭ জন এবং আক্রান্ত হয়েছেন ৪ লাখ ৪৩ হাজার ৬৮ জন। এর আগে সোমবার সকাল ৮টা পর্যন্ত পূর্ববর্তী ২৪ ঘণ্টায় বিশ্বে করোনায় মারা গিয়েছিল ৬ হাজার ৮৫৯ জন এবং আক্রান্ত হয়েছিলেন ৪ লাখ ২৭ হাজার ৮০ জন। বিশ্বে এখন পর্যন্ত মোট করোনায় মৃত্যু হলো ৪১ লাখ ৮২ হাজার ৮২৮ এবং আক্রান্ত হয়েছেন ১৯ কোটি ৫৩ লাখ ৪৫ হাজার ৫১৬ জন। এদের মধ্যে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ১৭ কোটি ৭১ লাখ ৮২ হাজার ৬২৫ জন। করোনায় এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি সংক্রমণ ও মৃত্যু হয়েছে বিশ্বের ক্ষমতাধর দেশ যুক্তরাষ্ট্রে। তালিকায় শীর্ষে থাকা দেশটিতে এখন পর্যন্ত করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন ৩ কোটি ৫২ লাখ ৮৭ হাজার ২৬৯ জন। মৃত্যু হয়েছে ৬ লাখ ২৭ হাজার ৩৯ জনের। সিএনএন, রয়টার্স।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন